বিশ্বব্যাপী ক্রিপ্টো বাজারে এখন প্রচণ্ড অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিটকয়েন, যা সম্প্রতি ১০৯,০০০ ডলারের রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছিল, এখন তীব্র ধসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ব্যবসায়িক সংবাদ: বিশ্বব্যাপী ক্রিপ্টো বাজারে এখন প্রচণ্ড অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিটকয়েন, যা সম্প্রতি ১০৯,০০০ ডলারের রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছিল, এখন তীব্র ধসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এর দাম তার সর্বোচ্চ মূল্য থেকে ২৫% কমে ৮০,০০০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। এই ধসের প্রধান কারণ হিসেবে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিগুলিকে ধরা হচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে তুলেছে।
ক্রিপ্টো বাজারে ধসের কারণ কী?
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ৪ই মার্চ থেকে মেক্সিকো ও কানাডার উপর ২৫% এবং চীনের উপর ১০% অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপের ঘোষণা দেন, তখন থেকেই বিটকয়েনের এই ধস শুরু হয়। এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক অঙ্গনে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায় এবং বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে সরে আসতে শুরু করে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর এবং বিটকয়েন সহ অন্যান্য ডিজিটাল মুদ্রার দামে তীব্র ধস দেখা দেয়।
CoinMarketCap-এর তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার এশিয়ান ব্যবসায়িক সময়ের মধ্যে বিটকয়েন ২৫% কমে ৭৯,৫২৫.৮৮ ডলারে নেমে আসে। ভারতীয় সময় সকাল ৯:৫০ মিনিটে এটি ৫.৪৭% কমে ৮০,০৭৮.৭৬ ডলারে লেনদেন হচ্ছিল। এটি ১১ নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন মূল্য।
অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিও ক্ষতিগ্রস্ত
বিটকয়েনের ধসের সাথে সাথে অন্যান্য প্রধান ক্রিপ্টোকারেন্সিও প্রভাবিত হয়েছে। ইথার, সোলানা এবং এক্সআরপি-র মতো ডিজিটাল মুদ্রাও লাল চিহ্নে চলে এসেছে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রিপ্টোকারেন্সির এই ধসের পেছনে মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে বাড়ন্ত উদ্বেগ এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অস্থির নীতিগুলো দায়ী।
Bitgo-এর OTC ট্রেডিং পরিচালক স্টেফান ভন হ্যানিশ-এর মতে, "বাজার আশা করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কোনো সুসংহত নীতি আনবে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা আসেনি। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং তারা ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করছে।"
শেয়ার বাজারও ধাক্কা খাচ্ছে
ক্রিপ্টো বাজারের এই ধসের প্রভাব ঐতিহ্যগত শেয়ার বাজারেও পড়েছে। S&P 500 সূচকেও তীব্র ধস দেখা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বল কনজিউমার কনফিডেন্স ডেটার ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এখন সবার দৃষ্টি ট্রাম্প প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর। ক্রিপ্টো বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি ট্রাম্প প্রশাসন দ্রুত স্পষ্ট নীতি না আনে, তাহলে বিটকয়েনের দাম আরও কমতে পারে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন এটি ৭৫,০০০ ডলার পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।