বিহারে থানা চত্বরে যুবকের আত্মহত্যা: বাবা-মা 'সংশোধন' করতে নিয়ে এসেছিলেন

বিহারে থানা চত্বরে যুবকের আত্মহত্যা: বাবা-মা 'সংশোধন' করতে নিয়ে এসেছিলেন
সর্বশেষ আপডেট: 15-05-2025

বিহারের ছাপড়া জেলার পারসা থানা চত্বরে এক অভাবনীয় ঘটনা ঘটেছে, যেখানে এক যুবক থানার ভিতরেই দরির রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। যুবকটিকে তার বাবা-মা ‘সংশোধন’ করার উদ্দেশ্যে থানায় নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে থানার জানালায় ঝুলতে দেখা যায়।

অপরাধ সংবাদ: বিহারের ছাপড়া জেলার পারসা থানা চত্বরে এক অভাবনীয় ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে এক যুবক থানার ভিতরেই দরির রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। জানা গেছে, যুবকটিকে তার বাবা-মা ‘সংশোধন’ করার উদ্দেশ্যে থানায় নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তাকে থানার জানালায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনা পুরো এলাকায় শোক ও উদ্বেগের বিষয় হিসেবে বিরাজমান, যখন পুলিশ ঘটনার তদন্তে ব্যস্ত।

সম্পূর্ণ ঘটনা কি?

মৃতের পরিচয় সোনু যাদব (বয়স ২৪ বছর), বখতিয়ারপুর, পারসা निবাসী হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। তার আত্মীয়-স্বজনদের মতে, সোনু কয়েক মাস ধরে ভুল সংসর্গে পড়েছিল এবং মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। সে বাড়িতে ঝগড়া করত, চুরির অভিযোগে আগেও জেলে গিয়েছিল। বুধবার সকালে, বাবা-মা তাকে পারসা থানায় নিয়ে আসে যাতে পুলিশের কঠোরতার ভয়ে সে সংশোধিত হয়। পুলিশ তাকে একটি ফাঁকা ঘরে বসিয়ে রাখে, যাতে বাবা-মা কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে পারেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সোনু ঘরে রাখা দরির রশি দিয়ে জানালার গ্রিলের সাথে ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

পুলিশের অবহেলা নাকি পরিস্থিতির বিপর্যয়?

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোনু কোন অপরাধে গ্রেপ্তার ছিল না, তাই তাকে হাজতে রাখা হয়নি। সে তার বাবা-মার ইচ্ছায় থানায় এসেছিল। থানায় তার সাথে কোন হ্যান্ডকাফ বা নজরদারি ছিল না। এই কারণেই সে মুহূর্তের মধ্যেই আত্মহত্যা করতে সক্ষম হয়। থানার অধীক্ষক পঙ্কজ কুমার জানিয়েছেন, “যুবকটি মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মনে হচ্ছিল, কিন্তু এমন পদক্ষেপ নেবে, তার কোন আন্দাজ ছিল না। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

বাবা-মার ভেঙে পড়া

সোনুর মা বিন্দু দেবী অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন, অন্যদিকে বাবা সুরেন্দ্র যাদব বলেছেন, “আমরা তাকে সংশোধন করতে নিয়ে এসেছিলাম, আমরা কি জানতাম সে আমাদের সামনেই জীবন ছেড়ে দেবে।” তিনি থানায় নজরদারির অবহেলার অভিযোগ করেছেন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, সোনু আগেও ছিনতাই ও চুরির মতো ঘটনায় ধরা পড়েছিল। কিছুদিন আগে জেলে থেকে ছুটে এসে আবার মাদকে জড়িয়ে পড়েছিল। গ্রামে তার সুনাম ভালো ছিল না, কিন্তু বাবা-মা আশা ছাড়েনি।

মানসিক স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা

এই ঘটনা বিহারের গ্রামীণ এলাকায় মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুতর অবস্থা প্রকাশ করে। যেখানে মাদক, বেকারত্ব এবং অসামাজিক উপাদান যুবকদের ভুল পথে চালিত করে, সেখানে কোন কাউন্সেলিং সুবিধা নেই, পরিবারগুলো কোনও নির্দেশনাও পায় না। পুলিশ থানাগুলিকেও এ ধরণের ঘটনায় সংবেদনশীলতা এবং দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রয়োজন।

সারণের এসপি গৌরব মঙ্গলা ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি থানা চত্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আত্মীয়-স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

Leave a comment