বিহারে জেডিইউ-র একনিষ্ঠ নেতা ইস্তফা: ‘জামাই রাজনীতি’র অভিযোগ

বিহারে জেডিইউ-র একনিষ্ঠ নেতা ইস্তফা: ‘জামাই রাজনীতি’র অভিযোগ
সর্বশেষ আপডেট: 19-06-2025

বিহারের রাজনীতিতে এখন ‘জামাই রাজনীতি’র বিষয়টি বেশ তীব্র আকার ধারণ করছে। নেতা প্রতিপক্ষ তেজস্বী যাদব রাজ্য সরকারের উপর অভিযোগ করেছেন যে, বিভিন্ন কমিশনে নিয়োগের সময় যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতাকে উপেক্ষা করে বড় নেতাদের আত্মীয়-স্বজন, বিশেষ করে জামাতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

পাটনা: বিহারের রাজনীতিতে চলমান ‘জামাই যুগ’ এর আলোচনার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) একটি বড় ধাক্কা পেয়েছে। দলের একনিষ্ঠ নেতা নবীশ কুমার নবেন্দু আজ (১৯ জুন) তাঁর সকল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে যোগ্যতার উপেক্ষা ও চাটুকারিতার রাজনীতির অভিযোগ দলের উপর আরোপ করেছেন।

নবীশ নবেন্দু পাটনা সাহিব বিধানসভা ক্ষেত্রের দায়িত্বে এবং অনুসূচিত জাতি প্রকোষ্ঠের রাজ্য প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছিলেন। ইস্তফার সঙ্গে তিনি সংগঠনের ভেতরে চলমান পক্ষপাত, ‘কোটা সিস্টেম’ এবং কর্মীদের উপেক্ষার প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন, যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে জেডিইউ-এর সমস্যা বাড়াতে পারে।

ইস্তফার কারণ

নবীশ নবেন্দু তাঁর ইস্তফানামায় স্পষ্টভাবে কমিশন, বোর্ড এবং নিগমে হওয়া নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, গত ১৩ বছর ধরে দলের প্রতি নিষ্ঠা দেখানো সত্ত্বেও তাঁকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন: দল যেখানে যেখানে নিজেদের লোক নিয়োগ করেছে সেখানে আরএসএস কোটা, জামাই কোটা, মন্ত্রীজির কোটা এবং এমনকি স্ত্রী কোটাও চালু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নিষ্ঠাবান কর্মীদের জন্য কোনো জায়গা বাকি নেই।

নবেন্দুর এই বক্তব্য দলের কার্যপ্রণালী এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরেছে। তিনি আরও বলেছেন যে, এখন দল ছেড়ে যাওয়ার বাইরে আর কোনো বিকল্প তাঁর কাছে নেই।

১৩ বছরের পরিশ্রম নস্যাৎ: নিষ্ঠাবান কর্মীদের উপেক্ষা

নবীশ নবেন্দু তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জোর দিয়েছেন যে, তিনি ১৩ বছর ধরে দলের জন্য অবিরাম কাজ করেছেন। বৃষ্টি হোক বা রোদ, সব পরিস্থিতিতেই দলের সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করেছেন, কিন্তু যখন পদ ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে তখন তাঁকে উপেক্ষা করা হয়েছে। তিনি লিখেছেন, আমি দলের সকল কাজ সম্পূর্ণ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় করেছি। কিন্তু আজ দলে যোগ্য কর্মীদের কোনো মূল্য নেই।

নেতা প্রতিপক্ষ তেজস্বী যাদব কিছুদিন ধরেই এই অভিযোগ করে আসছেন যে, বিহার সরকারে জামাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের কমিশনে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। নবেন্দুর ইস্তফা তাঁর এই অভিযোগকে আরও बल দেওয়া বলে মনে হচ্ছে। তেজস্বী বলেছিলেন যে, “বিহারে এখন যোগ্যতা নয়, সুপারিশ দিয়ে কাজ হয়। এখন প্রতিটি কোণে ‘আত্মীয় রাজনীতি’র দাপট চলছে।”

এখন নবীশ নবেন্দু’র মতো একনিষ্ঠ জেডিইউ নেতার ইস্তফা এই অভিযোগগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে এবং এটি এই বার্তা দিচ্ছে যে দলের ভেতরেও অসন্তোষের ঢেউ চলছে। বিধানসভা নির্বাচনের ठीक আগে, একজন অভিজ্ঞ ও একনিষ্ঠ নেতার এভাবে দল থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যাওয়া জেডিইউ-এর জন্য রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিকারক হতে পারে। এতে কর্মীদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে এবং বিরোধীদের হামলার নতুন অস্ত্র मिलতে পারে।

Leave a comment