ভীলওয়ারার অয্যপ্পা মন্দিরে চৌকিদারের হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত দীপক নায়ারের বাড়ি থেকে আরও দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনটি লাশেরই অবস্থা একই ছিল, মাথা এবং যৌনাঙ্গ কাটা ছিল। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
ভীলওয়ারা: শহরে একটি সনসনীধর্মী ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অয্যপ্পা মন্দিরের এক বৃদ্ধ চৌকিদারের নৃশংস হত্যার পর পুলিশ অভিযুক্তের পরিচয় শনাক্ত করে এবং আরও দুটি লাশ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় পুরো এলাকা কেঁপে উঠেছে, কারণ এই দুটি লাশের অবস্থাও চৌকিদারের লাশের সাথে মিল ছিল। পুলিশ এই ঘটনাকে সাইকো কিলারের কাজ বলে মনে করছে।
অভিযুক্ত দীপক নায়ার তিনজনকে হত্যা করেছে এবং তাদের লাশ খুবই ভয়াবহ অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশ এখন এই ঘটনার পুরো তদন্তে ব্যস্ত এবং এটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে যে এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে কি কোনও মানসিক বিকৃতির কারণ ছিল।
হত্যার খবর রাত সাড়ে দুইটায় পাওয়া গেল
মঙ্গলবার রাত সাড়ে দুইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে, যখন পুলিশকে খবর দেওয়া হয় যে অয্যপ্পা মন্দিরে চৌকিদারের হত্যা হয়েছে। নিহতের পরিচয় ৫৫ বছর বয়সী লাল সিং রাওয়ানা হিসাবে পাওয়া গেছে। পুলিশ অবিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে এবং মন্দিরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে। সিসিটিভিতে অভিযুক্তের মুখ দেখা গেছে, যে দীপক নায়ার। পুলিশ এক ঘন্টার মধ্যে তাকে গ্রেফতার করে।
সিসিটিভি থেকে অভিযুক্তের শনাক্তকরণ এবং গ্রেফতার
মন্দিরে হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। ক্যামেরায় দেখা যায় যে অভিযুক্ত দীপক নায়ার রাতের বেলা মন্দিরে ঢুকেছিল। তাকে প্রতাপ নগর থানা এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। পুলিশ ফুটেজ পরীক্ষা করে অভিযুক্তের পরিচয় শনাক্ত করে এবং এক ঘন্টার মধ্যে তাকে গ্রেফতার করে।
দীপককে হেফাজতে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল এবং হত্যার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এই সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রমাণ পেয়েছে এবং তদন্তে ত্বরাণ্বিত করেছে।
দীপক নায়ারের অপরাধমূলক রেকর্ড এবং মানসিক অবস্থা
পুলিশের মতে, দীপক নায়ার একজন অভ্যস্ত অপরাধী এবং তার বিরুদ্ধে আগেও অনেক গুরুতর অপরাধমূলক মামলা রয়েছে। তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ যেভাবে সে হত্যা করেছে তা সাধারণ অপরাধীদের থেকে অনেক আলাদা। দীপক কর্তৃক হত্যার প্রকৃতি পুলিশকে এটা অনুমান করতে বাধ্য করেছে যে সে মানসিকভাবে বিকৃত হতে পারে। যখন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তার বাড়ির তল্লাশি করে, তখন সেখান থেকে আরও দুটি লাশ পাওয়া যায়।
এই লাশগুলির অবস্থাও ঠিক আগের হত্যাকাণ্ডের মতোই ছিল। লাশের মাথা এবং যৌনাঙ্গ কাটা ছিল, যা স্পষ্ট করে দেয় যে এই সকল হত্যাকাণ্ডে একই অভিযুক্তের হাত রয়েছে। পুলিশ এখন এই ঘটনার গভীর তদন্ত করছে এবং অভিযুক্তের মানসিক অবস্থারও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
তিনটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সম্পর্কের তদন্ত চলছে
পুলিশ মনে করছে যে এই তিনটি হত্যাকাণ্ড পরস্পরের সাথে জড়িত। এই হত্যাকাণ্ডগুলির মধ্যে কোনও না কোনও ধরণের সম্পর্ক থাকতে পারে, এবং পুলিশ গভীরভাবে তদন্ত করছে যে অভিযুক্ত কেন এবং কীভাবে এই হত্যাকাণ্ডগুলি সংঘটিত করেছে। এখন পর্যন্ত যে তথ্য সামনে এসেছে, তা থেকে মনে হচ্ছে এটি একটি মানসিক বিকৃতির ফল হতে পারে, তবে পুলিশ এটিও দেখছে যে এর আর কোনও কারণ ছিল কি না।
অভিযুক্ত বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে, এবং তাকে ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডগুলিকে ধারাবাহিক অপরাধ বলে মনে করে তদন্ত ত্বরান্বিত করেছে। প্রথমে সে অয্যপ্পা মন্দিরে চৌকিদারের হত্যা করে, এবং পরে আরও দুজনকেও হত্যা করে। পুলিশ এখন জানার চেষ্টা করছে যে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আসলে কী কারণ ছিল।
পুলিশের কার্যক্রম এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া
এই ভয়াবহ ঘটনার পর স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ এবং ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জনগণ অভিযোগ করেছে যে অভিযুক্ত দীপক নায়ারের বিরুদ্ধে আগেও অনেক অপরাধমূলক মামলা ছিল, এবং পুলিশকে আগেই তাকে কঠোরভাবে নজরদারি করতে হতো। স্থানীয়রা এখন চায় অভিযুক্তকে দ্রুত এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে এই ধরণের অপরাধ রোধ করা যায়।
নিহত চৌকিদারের পরিবারের লোকজন এবং অন্যান্য স্থানীয় বাসিন্দারা ন্যায়ের আশা করছে। তারা চায় পুলিশ পুরো তদন্তের পর অভিযুক্তকে শাস্তি দিক, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধ রোধ করা যায়। পুলিশ মামলার তদন্তকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং অভিযুক্তকে দ্রুত শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি, পুলিশের নজর এই বিষয়েও রয়েছে যে এই ধরণের ঘটনায় কোনো ত্রুটি না থাকে।