অমিত শাহের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাহুল গান্ধী: ইংরেজি শক্তি, গরিবদের বঞ্চনা করছে বিজেপি-আরএসএস
রাহুল গান্ধী: কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের ইংরেজি ভাষা সম্পর্কিত বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শাহ বলেছিলেন, ভবিষ্যতে ইংরেজিভাষীরা নিজেদের লজ্জিত বোধ করবে। কিন্তু রাহুল গান্ধী ইংরেজিকে গরিবদের জন্য ক্ষমতা ও সুযোগের মাধ্যম বলে অভিহিত করেছেন। দুই নেতার বক্তব্যের ফলে দেশে ভাষা ও শিক্ষা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
অমিত শাহের বক্তব্য
কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি সাবেক আইএএস অফিসার আশুতোষ অগ্নিহোত্রীর বই উন্মোচনের সময় বলেছিলেন, निकट ভবিষ্যতে ভারতে এমন এক সময় আসবে যখন ইংরেজি ভাষা বলার জন্য লজ্জা অনুভব করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, বিদেশী ভাষায় নিজের সংস্কৃতি, ধর্ম ও ইতিহাস বোঝা সম্ভব নয়। দেশীয় ভাষাই আমাদের আসল পরিচয় এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারতীয় ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।
রাহুল গান্ধীর পাল্টা জবাব
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী অমিত শাহের বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি এক্স (পূর্ব টুইটার) প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে বলেছেন, ইংরেজি কোনও দেওয়াল নয়, বরং একটি সেতু। এটি লজ্জা নয়, বরং শক্তি এবং এটি কোনও শিকল নয়, বরং শিকল ভাঙার হাতিয়ার।
রাহুল গান্ধী বিজেপি ও আরএসএস-কে গরিব শিশুদের ইংরেজি শেখা থেকে বিরত রাখার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই সংগঠনগুলি ভয় পায় যে, যদি গরিব শিশুরা ইংরেজি শিখে তাহলে তারা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে শুরু করবে, এগিয়ে যাবে এবং সমতা দাবি করবে।
ইংরেজি সম্পর্কে রাহুলের দৃষ্টিভঙ্গি
রাহুল গান্ধী বলেছেন, আজকের সময়ে ইংরেজি ঠিক যতটা প্রয়োজন, ততটাই প্রয়োজন আপনার মাতৃভাষা। এটি চাকরি পাওয়া, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং বিশ্ব মঞ্চে প্রতিযোগিতার জন্য প্রয়োজন। তিনি বলেছেন, ভারতের প্রতিটি ভাষায় জ্ঞান, সংস্কৃতি ও আত্মা রয়েছে যা আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে, কিন্তু একই সাথে প্রতিটি শিশুকে ইংরেজিও শেখানো উচিত। তিনি বলেছেন, यही পথ এক এমন ভারতের দিকে যা বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারে এবং প্রতিটি শিশুকে সমান সুযোগ দিতে পারে।
রাহুলের শেয়ার করা ভিডিও
রাহুল গান্ধী তার পোস্টের সাথে একটি ভিডিওও শেয়ার করেছেন যেখানে তিনি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে ইংরেজি কীভাবে জীবনে সুযোগের দ্বার উন্মোচন করে। তিনি বলেছেন, যদি কেউ ইংরেজি শিখতে পারে, তাহলে সে আমেরিকা, জাপান বা যে কোনও দেশে গিয়ে কাজ করতে পারে। তিনি অভিযোগ করেছেন, যারা ইংরেজির বিরোধী, তারা চায় না গরিবরা ভালো চাকরি পাক। তারা চায় তাদের জন্য দরজা বন্ধ থাকুক।
ভাষা নিয়ে রাজনীতি
ভারতের মতো বহুভাষাভাষী দেশে ভাষা সবসময়ই একটি সংবেদনশীল ও রাজনৈতিক বিষয় ছিল। ইংরেজি একদিকে বিশ্বব্যাপী সুযোগের মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হলেও অন্যদিকে একে ঔপনিবেশিক ঐতিহ্য হিসেবেও দেখা হয়।
বিজেপি ও আরএসএস দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় ভাষার প্রচার-প্রসারের পক্ষে। তাদের মতে, শিক্ষা ও প্রশাসনে স্থানীয় ভাষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। অন্যদিকে কংগ্রেসের মতো দল মনে করে, আধুনিক যুগে ইংরেজির উপেক্ষা করা গরিব ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ সীমিত করার মতো।