আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন মোড়ের সূচনা আজ থেকেই। আমেরিকার উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল, যার মধ্যে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেডেন ল্যাঞ্চও রয়েছেন।
নয়াদিল্লি: আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন মোড়ের সূচনা আজ থেকেই। আমেরিকার উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল, যার মধ্যে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেডেন ল্যাঞ্চও রয়েছেন, ভারতে চার দিনের সফরে এসেছেন। এই সফরকালে উভয় দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (Bilateral Trade Agreement) নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু এই আলোচনার আগে গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (GTRI) ভারতকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
ট্যারিফ বিরোধের মধ্যে আলোচনা – ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জিং সময়
আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল থেকে পারস্পরিক ট্যারিফ আরোপ করার ঘোষণা করেছেন, যার ফলে ভারত থেকে আমেরিকায় রপ্তানিতে গভীর প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে কৃষিপণ্য, মাংস, অটোমোবাইল, হীরা, সোনা, রাসায়নিক এবং ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্যের উপর ৮% থেকে ৩৩% পর্যন্ত অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য এই আলোচনা অত্যন্ত সংবেদনশীল হতে চলেছে।
ভারত ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা আমেরিকান পণ্যের উপর ট্যারিফ কমাতে পারে, যার ফলে এই আলোচনা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তিকে নিয়ে GTRI ভারতকে সতর্ক করে দিয়েছে যে এই চুক্তি ভারতের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করতে পারে।
GTRI-এর সতর্কতা – ভারতকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
অর্থনৈতিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক GTRI-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেছেন যে আমেরিকায় ফাস্ট ট্র্যাক ট্রেড অথরিটির অনুপস্থিতির কারণে কোনও বাণিজ্য চুক্তি আমেরিকার কংগ্রেস দ্বারা পরিবর্তিত হতে পারে। এর ফলে এই চুক্তি ভারতের জন্য অস্থির হতে পারে। এছাড়াও, আমেরিকার প্রমাণীকরণ প্রক্রিয়া (Certification Process) আমেরিকাকে এমন অধিকার দেয় যে চুক্তিতে স্বাক্ষর হওয়ার পরেও তারা আবার আলোচনা করতে পারে। এর ফলে ভারতকে ঘরোয়া আইন, নিয়ন্ত্রক সংস্কার এবং নীতিতে পরিবর্তন আনার জন্য চাপের মুখোমুখি হতে হতে পারে।
ভারতের জন্য কূটনৈতিক পরীক্ষা
ভারতের জন্য এই আলোচনা কেবল বাণিজ্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি কূটনৈতিক দক্ষতারও পরীক্ষা হবে। আমেরিকার বাণিজ্য নিয়মে থাকা আইনগত বৈসাদৃশ্যগুলি বিবেচনা করে ভারতকে প্রতিটি পদক্ষেপ সাবধানে নিতে হবে। GTRI-এর পরামর্শ হল যে ভারতকে এই চুক্তিতে এমন কোনও ধারা গ্রহণ করা উচিত নয় যা তার অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সার্বভৌমত্বকে প্রভাবিত করে।