সফলতার গল্প: আজ আমরা আপনাদের এমন এক অসাধারণ গল্প শোনাবো, যিনি মাত্র ২৩ বছর বয়সে ভারতীয় প্রশাসনিক সেবার সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা UPSC পাস করে ভারতীয় বন সেবা (IFS) এর কর্মকর্তা হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের তমালী সাহা তার অক্লান্ত পরিশ্রম, দৃঢ় সংকল্প এবং সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে এই সাফল্য অর্জন করেছেন। তমালীর এই সাফল্য কেবল তার ব্যক্তিগত জয় নয়, বরং লক্ষ লক্ষ যুবকের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।
UPSC পরীক্ষা এবং তমালী সাহার সংগ্রাম
UPSC সিভিল সেবা পরীক্ষা ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হিসেবে পরিচিত, যেখানে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ প্রার্থী আবেদন করেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কেবল কয়েকজনই এই কঠিন পরীক্ষা পাস করতে পারেন। অধিকাংশ প্রার্থী বারবার চেষ্টা করে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অন্যদিকে, তমালী সাহা তার প্রথম চেষ্টাতেই এই পরীক্ষা পাস করে দেখিয়েছেন।
তমালী সাহার প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
তমালী সাহার জন্ম পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা সেখানেই লাভ করেন এবং স্কুলে মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরিচিতি পান। স্কুল শিক্ষা শেষে তমালী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যা (Zoology) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপরই তিনি UPSC পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট— "সিভিল সেবার মাধ্যমে দেশের সেবা করা।"
UPSC-তে প্রথম চেষ্টা এবং সাফল্যের পথ
UPSC-এর প্রস্তুতির জন্য তমালী সাহা একটি দৃঢ় পরিকল্পনা তৈরি করেন। তিনি তার প্রস্তুতির সময় সুন্দরভাবে ব্যবস্থাপনা করেন, যার ফলে তিনি সাফল্য অর্জন করেন। ২০২০ সালে, তমালী সাহা তার প্রথম চেষ্টাতেই UPSC ভারতীয় বন সেবা (IFS) পরীক্ষা পাস করেন। তিনি সর্বভারতীয় ৯৪তম স্থান অর্জন করেন এবং প্রমাণ করেন যে সাফল্যের জন্য বয়স এবং অভিজ্ঞতার কোনো বিশেষ গুরুত্ব নেই, বরং দৃঢ়সংকল্প এবং অক্লান্ত পরিশ্রমই সাফল্যের সঠিক পথ।
IFS কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ এবং কর্মক্ষেত্র
UPSC-তে সাফল্যের পর, তমালী সাহাকে ভারতীয় বন সেবা (IFS) -তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি পশ্চিমবঙ্গে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং বন বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এই নিয়োগ কেবল তার পরিবারকে গর্বিত করে না, বরং লক্ষ লক্ষ যুবককেও অনুপ্রাণিত করে যারা UPSC-র মতো কঠিন পরীক্ষা পাস করার স্বপ্ন দেখে।
তমালী সাহার সাফল্যের বার্তা
তমালী সাহার গল্প শিক্ষা দেয় যে, যদি আপনার সঠিক দিকনির্দেশনা, অনুশাসন এবং নিষ্ঠা থাকে, তাহলে আপনি যেকোনো কঠিন লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। তিনি এটাও প্রমাণ করেছেন যে বয়স বা সীমিত সম্পদ কখনোই সাফল্যের পথে বাধা হতে পারে না। তার সাফল্য এই বার্তা দেয় যে, আপনি যদি আপনার লক্ষ্যের প্রতি আন্তরিক হন এবং পুরো মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন, তাহলে যে কোনো অসুবিধা অতিক্রম করা সম্ভব।
তমালী সাহার এই গল্প প্রতিটি যুবকের জন্য এক অনুপ্রেরণা যারা তাদের পরিশ্রম এবং আস্থার মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায়। তার সাফল্য দেখায় যে, যদি সংকল্প দৃঢ় হয় এবং পরিশ্রম সত্যিকারের হয়, তাহলে কোনো লক্ষ্যই অসাধ্য নয়।