WhatsApp শীঘ্রই অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের ছবি এবং ভিডিওর অটো-ডাউনলোডের গুণমান নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আরও ভালো নিয়ন্ত্রণ দেবে। এই নতুন ফিচারটি বর্তমানে বিটা সংস্করণে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।
WhatsApp: ডিজিটাল মেসেজিংয়ের জগতে WhatsApp আবারও তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য একটি বিশেষ আপডেটের প্রস্তুতি শুরু করেছে। এখন আপনার ফোনে ছবি এবং ভিডিওর অটো-ডাউনলোডের গুণমান নির্বাচন করার অপশন পাওয়া যাবে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজন এবং ডিভাইসের ক্ষমতার সাথে মিল রেখে মিডিয়া ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন। এই ফিচারটি বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড বিটা সংস্করণে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে, তবে শীঘ্রই এটি সমস্ত ব্যবহারকারীর জন্য উপলব্ধ হতে পারে।
WhatsApp-এ আসছে ছবি-ভিডিওর গুণমান নিয়ন্ত্রণের ফিচার
WABetaInfo-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, WhatsApp অ্যান্ড্রয়েড বিটা সংস্করণ 2.25.18.11-এ এই নতুন ফিচারটি দেখা গেছে, যেখানে কিছু বিটা ব্যবহারকারীরা এটি সেটিংসে পেতে শুরু করেছেন। এই ফিচারের অধীনে ব্যবহারকারীরা সেটিংস > স্টোরেজ এবং ডেটা > অটো-ডাউনলোড গুণমান-এ গিয়ে দুটি বিকল্পের মধ্যে একটি নির্বাচন করতে পারবেন — স্ট্যান্ডার্ড গুণমান বা এইচডি গুণমান।
- স্ট্যান্ডার্ড গুণমান: এই অপশনে ছবি বা ভিডিও ফাইলগুলি কম্প্রেস করা হয়, যার ফলে তাদের আকার কমে যায়। এর অর্থ হল ডেটার ব্যবহার কম হবে, ডাউনলোডিংও দ্রুত হবে এবং আপনার ফোনে কম স্টোরেজ স্পেস লাগবে।
- এইচডি গুণমান: এই বিকল্পে ফাইলের মূল বিস্তারিত এবং রেজোলিউশন অক্ষুণ্ণ থাকে, তাই ইমেজ এবং ভিডিওর গুণমান উন্নত হয়। তবে, এর ফলে আরও বেশি ডেটা ব্যবহার হবে এবং আপনার ফোনে আরও বেশি স্টোরেজ স্পেসের প্রয়োজন হবে।
এভাবে, ব্যবহারকারী তাদের পছন্দের অনুযায়ী ডেটা সংরক্ষণ করার জন্য স্ট্যান্ডার্ড ডাউনলোড সেট করতে পারেন অথবা উন্নত গুণমানের জন্য এইচডি বিকল্পটি নির্বাচন করতে পারেন।
ফিচারটি কীভাবে কাজ করে?
এই নতুন অটো-ডাউনলোড গুণমান নিয়ন্ত্রণ ফিচারটি WhatsApp-এর সাম্প্রতিক ডুয়াল-আপলোড ফিচারের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এখন যখন কোন ব্যবহারকারী ছবি বা ভিডিও পাঠাবে, তখন সেই ফাইলটি উভয় গুণমান স্ট্যান্ডার্ড এবং এইচডি সার্ভারে আপলোড হবে। তারপর রিসিভার তার সেটিংস অনুযায়ী একই গুণমানের ফাইল তার ফোনে ডাউনলোড করবে।
যদি আপনি স্ট্যান্ডার্ড সেট করে থাকেন, তাহলে ফোনে কম আকারের কম্প্রেসড মিডিয়া ডাউনলোড হবে, যার ফলে ডেটা এবং স্টোরেজ উভয়ই সংরক্ষিত হবে। কিন্তু আপনি চাইলে একই ফাইলের এইচডি গুণমান ম্যানুয়ালিও দেখতে পারেন। এর আগে পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের অটো-ডাউনলোড গুণমান নিয়ন্ত্রণের কোন বিশেষ ক্ষমতা ছিল না এবং WhatsApp স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিডিয়া ফাইল কম্প্রেস করে দিতো অথবা পূর্ণ গুণমানে পাঠাতো। এই নতুন ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা আরও সুবিধা এবং নিয়ন্ত্রণ পাবেন।
এই ফিচারটি কেন প্রয়োজনীয়?
আজকের সময়ে মোবাইল ডিভাইসের স্টোরেজ এবং ইন্টারনেট ডেটা উভয়ই সংরক্ষণ করা ব্যবহারকারীদের জন্য অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ভারতের মতো দেশে যেখানে ইন্টারনেট প্যাক ব্যয়বহুল বা ডেটা সীমিত, সেখানে এই ধরণের ফিচারের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- ডেটা সংরক্ষণ: স্ট্যান্ডার্ড গুণমানে মিডিয়া ফাইলের আকার কম হওয়ার ফলে ইন্টারনেট ডেটা সংরক্ষণ হবে।
- গতি উন্নয়ন: কম আকারের ফাইল হওয়ার ফলে ডাউনলোডিংও দ্রুত হবে, যার ফলে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত হবে।
- স্টোরেজের দক্ষ ব্যবহার: বড় মিডিয়া ফাইলগুলি ডিভাইসে বেশি জায়গা নেয়, এই ফিচারের মাধ্যমে ফোনের মেমরিও সংরক্ষণ করা যাবে।
- উন্নত গুণমানের বিকল্প: যারা উচ্চ গুণমানের ছবি বা ভিডিও দেখতে চান, তাদের জন্য এইচডি গুণমানের অপশন থাকবে।
- এভাবে এই ফিচারটি ব্যবহারকারীদের তাদের পছন্দের অনুযায়ী মোবাইল ব্যবহারের পুরো স্বাধীনতা দেয়।
কখন সকলের জন্য আসবে?
বর্তমানে এই ফিচারটি কেবলমাত্র কিছু বিটা টেস্টারদের জন্য উপলব্ধ, যারা Google Play Beta প্রোগ্রামের মাধ্যমে WhatsApp বিটা সংস্করণ ব্যবহার করছেন। ধারণা করা হচ্ছে যে আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে এই ফিচারটি সমস্ত অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর জন্য রোল আউট করা হবে। এটি লক্ষণীয় যে Meta কোম্পানি এপ্রিলে iOS ব্যবহারকারীদের জন্যও এই ধরণের ফিচার পরীক্ষা শুরু করেছিল, তবে এখন পর্যন্ত iPhone ব্যবহারকারীদের জন্য এই ফিচারটি ব্যাপকভাবে আসেনি। অ্যান্ড্রয়েডে এই ফিচারটির লঞ্চ শীঘ্রই হওয়ার ফলে আশা করা হচ্ছে যে iOS-এও এটি শীঘ্রই চালু করা হবে।
WhatsApp-এর অন্যান্য নতুন ফিচারের সাথে সমন্বয়
WhatsApp সম্প্রতি অনেক আপডেট প্রকাশ করেছে যেমন ডুয়াল ক্বালিটি আপলোড, মেসেজ রিঅ্যাকশন, নতুন স্টিকার প্যাক, গ্রুপ কলিং উন্নয়ন ইত্যাদি। অটো-ডাউনলোড গুণমান নিয়ন্ত্রণ ফিচার এই আপডেটগুলির ধারাকে আরও শক্তিশালী করে। এই ফিচারটি আসার ফলে WhatsApp ব্যবহারকারীরা কেবলমাত্র উন্নত মিডিয়া অভিজ্ঞতা পাবেন না, বরং ডেটা এবং স্টোরেজও সংরক্ষণ করতে পারবেন, যা স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।