রেল তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে আধার OTP বাধ্যতামূলক

রেলওয়ে তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে আধার OTP বাধ্যতামূলক করেছে। এখন আসল যাত্রীরা সহজেই টিকিট পেতে পারবেন।

তৎকাল টিকিট নতুন নিয়ম ২০২৫: রেলওয়ে ভ্রমণকারী লক্ষ লক্ষ যাত্রীর জন্য স্বস্তির বার্তা। এখন তৎকাল টিকিট বুকিং (Tatkal Ticket Booking) -এ জালিয়াতি ও দালালদের দৌরাত্ম্য রোধে ভারতীয় রেলওয়ে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। রেল মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে ২০২৫ সালের জুন মাসের শেষের মধ্যে তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে ই-আধার প্রমাণীকরণ বাধ্যতামূলক করা হবে। অর্থাৎ, এখন টিকিট বুক করার সময় আধার থেকে OTP যাচাই করা হবে, যার ফলে দালাল ও অটো-বট দ্বারা বুকিং বন্ধ হবে।

কী তৎকাল টিকিট এবং কেন অভিযোগের সৃষ্টি হচ্ছিল?

তৎকাল পরিকল্পনাটি শুরু হয়েছিল সেইসব যাত্রীদের জন্য যাদেরকে হঠাৎ করে কোনও জরুরী কারণে ভ্রমণ করতে হয়। এই স্কিম অনুযায়ী, টিকিট বুকিং ভ্রমণের একদিন আগে শুরু হয় এবং সীমিত সংখ্যক আসন থাকে। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেখা গেছে যে বুকিং উইন্ডো খোলার সাথে সাথেই টিকিট কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এর কারণ হল – দালাল এবং জালিয়াতি এজেন্টরা যারা অটোমেটেড সফ্টওয়্যার এবং জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে টিকিট বুক করে।

রেলওয়ের কর্মকর্তাদের মতে, অনেক সময় অফিসিয়াল এজেন্টের নামে জালিয়াতি হয়, যার ফলে আসল যাত্রীরা টিকিট পায় না। এই কারণে রেলওয়ে বারবার যাত্রীদের অভিযোগ পেয়েছে যে তারা তৎকাল টিকিট পায় না, যদিও এজেন্টরা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে টিকিট সরবরাহ করছে।

নতুন নিয়ম কীভাবে কাজ করবে?

রেলওয়ের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের সময় যাত্রীদের ই-আধার ভিত্তিক যাচাই করতে হবে। অর্থাৎ টিকিট বুক করার সময় আপনার IRCTC অ্যাকাউন্ট আধারের সাথে লিঙ্ক করা থাকতে হবে এবং OTP যাচাইয়ের মাধ্যমে পরিচয় যাচাই করা হবে। এই পদ্ধতিটি IRCTC-এর ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে, পাশাপাশি কাউন্টার বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও।

স্পষ্ট বিন্দু: যুজারের আধার প্রমাণীকরণ সফল হলেই টিকিট বুক হবে।

প্রথম ১০ মিনিট শুধুমাত্র আধার লিঙ্ক ব্যবহারকারীদের জন্য

রেলওয়ে আরও একটি বড় পরিবর্তন করেছে – এখন তৎকাল বুকিং খোলার প্রথম ১০ মিনিট শুধুমাত্র আধার-লিঙ্ক ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীরা টিকিট বুক করতে পারবেন। IRCTC-এর অনুমোদিত এজেন্টদের এই ১০ মিনিটের মধ্যে টিকিট বুক করার অনুমতি দেওয়া হবে না। এতে নিশ্চিত করা হবে যে কোনও এজেন্ট ছাড়াই সাধারণ যাত্রীরা সরাসরি বুকিং করার সুযোগ পাবে।

উদাহরণ: যদি AC ক্লাসের তৎকাল বুকিং সকাল ১০ টায় খোলে, তাহলে ১০:০০ থেকে ১০:১০ পর্যন্ত শুধুমাত্র আধার-প্রমাণীকৃত ব্যবহারকারীরা টিকিট বুক করতে পারবেন।

কী পরিবর্তন হবে যাত্রীদের জন্য?

সুবিধা

• অনলাইন বুকিং সহজ এবং নিরাপদ হবে।
• টিকিট বুকিংয়ে স্বচ্ছতা আসবে।
• অটো বট এবং সফ্টওয়্যার দ্বারা টিকিট বুকিং বন্ধ হবে।
• জরুরী প্রয়োজন যাত্রীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
• জালিয়াতি এজেন্টদের নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়বে।

চ্যালেঞ্জ

• যাদের আধার লিঙ্ক করা নেই, তারা প্রাথমিক বুকিংয়ের সুযোগ পাবে না।
• কম প্রযুক্তিগত জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদের OTP প্রক্রিয়ায় সমস্যা হতে পারে।

যাত্রীদের কী করতে হবে?

যদি আপনিও প্রায়ই তৎকাল টিকিট বুক করেন তাহলে এটি জরুরি যে:

1. আপনার IRCTC অ্যাকাউন্ট আপনার আধার কার্ডের সাথে লিঙ্ক করা থাকবে।
2. বুকিংয়ের সময় আপনার মোবাইল নম্বরে OTP আসার সুবিধা থাকবে।
3. যদি আপনি এখনও পর্যন্ত আধার লিঙ্ক করেননি, তাহলে IRCTC-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে 'My Profile' সেকশনে গিয়ে আধার যুক্ত করতে পারেন।

রেলওয়ের লক্ষ্য – স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন, 'ভারতীয় রেলওয়ের চেষ্টা হল যে সঠিক যাত্রী সঠিক সময়ে টিকিট পাক। আমরা চাই বুকিং সিস্টেম এমন হোক যাতে কোনও প্রতারণার সম্ভাবনা না থাকে এবং প্রয়োজনীয় ব্যক্তিই টিকিট পায়।'

তিনি আরও বলেছেন যে এই প্রযুক্তি ভিত্তিক সমাধান ভারতীয় রেলওয়েকে আরও আধুনিক এবং যাত্রী-বান্ধব করে তুলবে।