ভারতের সেমিকন্ডাক্টর বিপ্লব: আত্মনির্ভর ভারতের নতুন অধ্যায়

🎧 Listen in Audio
0:00

আধুনিক প্রতিটি ডিজিটাল ডিভাইসের মেরুদণ্ড হল সেমিকন্ডাক্টর—চাই সেটি মোবাইল হোক, ল্যাপটপ হোক অথবা স্যাটেলাইট। এতদিন ধরে ভারত এই চিপের জন্য বিদেশের উপর নির্ভরশীল ছিল, কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। সরকার ও শিল্পক্ষেত্র যৌথভাবে ভারতকে বিশ্বের সেমিকন্ডাক্টর হাব হিসেবে গড়ে তোলার দিকে দ্রুত এগোচ্ছে। এই পরিবর্তন কেবলমাত্র প্রযুক্তিগত দিক থেকেই নয়, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের পুরোনো চ্যালেঞ্জ

অনেক দশক ধরে ভারতে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের গতি ধীর ছিল। পরিকাঠামোর অভাব, প্রচুর বিনিয়োগের প্রয়োজন এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল। বেশিরভাগ চিপ তাইওয়ান, কোরিয়া ও আমেরিকা সহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হত। কিন্তু এখন আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের আওতায় সেমিকন্ডাক্টরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

২০২৫ সালে বড় লাফ

মে ২০২৫ সালে নয়ডা ও বেঙ্গালুরুতে ৩nm চিপ ডিজাইন সেন্টার চালু হয়েছে। এটি ভারতের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত কারণ প্রথমবারের মতো এত উন্নত প্রযুক্তি ভারতেই ডিজাইন করা হচ্ছে। রেনেসাস, মাইক্রন এবং ভেদান্তা-ফক্সকন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই ক্ষেত্রে অনেক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

সরকারি উদ্যোগ ও নীতি

PLI (Production Linked Incentive) স্কিম, কর সুবিধা, একক উইন্ডো ক্লিয়ারেন্স এবং সহজ ভূমি বরাদ্দ সহ বিভিন্ন সুবিধার মাধ্যমে ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এই উদ্যোগকে ‘ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব’ অর্জনের দিকে একটি বড় ধাপ বলে অভিহিত করেছেন।

এর প্রভাব ও সম্ভাবনা

দেশে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের ফলে কেবলমাত্র ডিজিটাল খাতেই নয়, লক্ষ লক্ষ তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। প্রতিরক্ষা, টেলিকম, স্বাস্থ্যসেবা এবং AI সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর বিরাট সুফল প্রতীয়মান হবে কারণ এখন তাদের স্থানীয় সরবরাহ পাওয়া যাবে।

ভারত এখন কেবলমাত্র অনুসরণ করছে না, বরং নেতৃত্বের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদি এই গতি বজায় থাকে, তাহলে আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে ভারতকে সেমিকন্ডাক্টর মহাশক্তি হিসেবে দেখা যাবে।

Leave a comment