২০২৮ সালের অলিম্পিকের সাথে জড়িত একটি বড় এবং ঐতিহাসিক খবর সামনে এসেছে, যা ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য এক অমূল্য উপহারের সমান। প্রথমবারের মতো কম্পাউন্ড আর্চারিকে অলিম্পিক খেলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, এবং এর সরাসরি সুবিধা ভারতের মতো উদীয়মান তীরন্দাজী জাতিকে পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
খেলাধুলার সংবাদ: ২০২৮ সালের অলিম্পিকের আয়োজন আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে করা হবে এবং এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমবারের মতো অলিম্পিক খেলায় কম্পাউন্ড মিক্সড তীরন্দাজী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতদিন অলিম্পিকে কেবলমাত্র রিকার্ভ আর্চারিই অন্তর্ভুক্ত ছিল, কিন্তু এই নতুন সিদ্ধান্তের সাথে কম্পাউন্ড আর্চারিকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপকে ভারতের জন্য একটি ‘গেম-চেঞ্জার’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, কারণ ভারতীয় অ্যাথলেটরা কম্পাউন্ড মিক্সড টিম ইভেন্টে বিশ্বব্যাপী চমৎকার পারফর্ম্যান্স করে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে আশা করা হচ্ছে যে, ভারত এই ইভেন্টে অলিম্পিক পদকের দৌড়ে শক্তিশালী দাবীদার হিসেবে উঠে আসবে।
কম্পাউন্ড আর্চারি: এই নতুন ইভেন্ট কি?
কম্পাউন্ড আর্চারি, ঐতিহ্যগত রিকার্ভ আর্চারি থেকে প্রযুক্তিগতভাবে আলাদা। এতে বিশেষ ধরণের পুলি সিস্টেমযুক্ত ধনুক ব্যবহার করা হয়, যার ফলে তীর আরও সঠিক এবং দ্রুত গতিতে ছোঁড়া যায়। এই ফরম্যাটে টার্গেটে একাগ্রতা, স্থায়িত্ব এবং প্রযুক্তির স্তর আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। রিকার্ভ আর্চারি অলিম্পিকে ইতিমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত ছিল, কিন্তু কম্পাউন্ডকে এতদিন উপেক্ষা করা হয়েছিল। এখন ১৯৭২ সালের পর প্রথমবারের মতো কোনও নতুন আর্চারি ফরম্যাট অলিম্পিকে স্থান পেয়েছে।
আমেরিকা থেকে শুরু, এখন অলিম্পিক পর্যন্ত
কম্পাউন্ড আর্চারির জন্ম আমেরিকায় হয়েছিল, এবং ২০২৩ সালে এটি প্রথমবারের মতো বিশ্ব খেলায় (World Games) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর পর থেকে এর জনপ্রিয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আজ বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ খেলোয়াড় এই শৈলীতে অংশগ্রহণ করছে। ওয়ার্ল্ড আর্চারির সভাপতি উগুর এরডেনার এই সিদ্ধান্তকে "খেলা এবং খেলোয়াড়দের দশকব্যাপী পরিশ্রমের বিজয়" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি IOC এবং এর প্রধান থমাস বাখকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যাদের সমর্থনে এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে।
ভারতের আশা কেন উচ্চাশী?
ভারত সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কম্পাউন্ড আর্চারিতে চমৎকার পারফর্ম্যান্স করেছে। বিশেষ করে অভিষেক বর্মা, ওজস দেবতালে এবং ঋষভ যাদবের মতো নাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে, ভারত ২০২৪ তীরন্দাজী বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে কম্পাউন্ড পুরুষ দলের প্রতিযোগিতায় কানস্য পদক জিতেছে, যেখানে ডেনমার্কের মতো শক্তিশালী দলকে পরাজিত করেছে। এই পারফর্ম্যান্স দেখে মনে করা হচ্ছে যে, ২০২৮ অলিম্পিকে ভারত কম্পাউন্ড আর্চারিতে তার প্রথম অলিম্পিক পদকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে।