আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে, গুজরাট টাইটান্স ৭ উইকেটে দিল্লি ক্যাপিটালসকে পরাজিত করে চমৎকার জয় অর্জন করেছে। দিল্লি ক্যাপিটালস প্রথমে ব্যাটিং করে ২০৩ রানের শক্তিশালী স্কোর তৈরি করেছিল।
খেলাধুলা সংবাদ: আইপিএল ২০২৫-এর একটি স্মরণীয় ম্যাচে গুজরাট টাইটান্স ৭ উইকেটে দিল্লি ক্যাপিটালসকে পরাজিত করেছে, শুধুমাত্র জয় অর্জনই নয়, ইতিহাসও রচনা করেছে। এটি প্রথমবারের মতো ঘটেছে যে, দিল্লি ক্যাপিটালস ২০০ রানের বেশি করেও লক্ষ্য রক্ষা করতে পারেনি।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে, জোস বাটলারের অপরাজিত ৯৭ রানের ইনিংসের সাহায্যে গুজরাট ২০৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করেছে।
দিল্লির তীব্র শুরু
দিল্লি ক্যাপিটালস টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের ব্যাটসম্যানরা এই সিদ্ধান্তকে সার্থক করেছে। পাওয়ারপ্লেতেই দিল্লি দ্রুত শুরু করে এবং ৬০ রান যোগ করে। ঋদ্ধিমান শাহ এবং ডেভিড ওয়ার্নারের জুটি প্রারম্ভিক ওভারগুলিতে গুজরাটের বোলারদের তীব্র আক্রমণ করে।
শাহ ২৯ বলে ৪৮ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেছেন, অন্যদিকে ওয়ার্নার ৩৫ রান করেছেন। এরপর মিডল অর্ডারে রাইলি রুসো এবং অধিনায়ক ঋষভ পন্থও রান তৈরি করে রাখেন। বিশেষ করে পন্থ শেষ ওভারগুলিতে বিস্ফোরক ব্যাটিং করে মাত্র ২০ বলে ৪৪ রান করেছেন, যার ফলে দিল্লির স্কোর ২০৩/৫ হয়েছে।
বাটলার ও রাদারফোর্ডের চমৎকার জুটি
২০৪ রানের পিছু ছোটা সহজ নয়, বিশেষ করে যখন বোলিং ইউনিটে মিচেল স্টার্ক, কুলদীপ যাদব এবং এনরিক নরখিয়া যেমন দক্ষ বোলাররা থাকে। গুজরাটের শুরুও তেমন ভালো হয়নি। অধিনায়ক শুভমান গিল মাত্র ৫ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন এবং দল চাপে পড়েছে।
সাই সুদর্শন ৩৬ রানের সংযত ইনিংস খেলে অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে এগিয়ে গেছেন। কিন্তু ৭৪ রানে তার আউট হওয়া গুজরাটের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। এখান থেকে গুজরাটকে এখনও জয়ের জন্য ১৩০ রান দরকার ছিল এবং ম্যাচ দিল্লির নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে মনে হচ্ছিল।
এরপর ক্রিজে এসেছেন জোস বাটলার এবং শেরফান রাদারফোর্ড। বাটলার আসতেই তার উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি মাঠের প্রতিটি কোণে শট মেরেছেন, কাভার ড্রাইভ, পুল শট অথবা স্কুপ- দিল্লির বোলাররা অসহায় বলে মনে হয়েছে। অন্যদিকে রাদারফোর্ডও বাটলারের ভাল সঙ্গ দেয় এবং ৪৩ রান করে আউট হন।
এই দুজনে মিলে ম্যাচের ধারা বদলে দিয়েছে। বাটলার বিশেষ করে এক অন্য ধারায় ছিলেন। তিনি তার অপরাজিত ৯৭ রানের ইনিংসে ৫২ বলে ৯টি চার এবং ৫টি ছক্কা মেরেছেন। প্রতিটি বলে বাটলারের আত্মবিশ্বাস দেখার মতো ছিল।
শেষ ওভারের উত্তেজনা এবং তেওয়াতিয়ার জাদু
শেষ ওভারে গুজরাটকে জয়ের জন্য ১০ রান দরকার ছিল এবং সামনে ছিলেন মিচেল স্টার্ক - সেই বোলার যিনি গত ম্যাচে দিল্লির সুপার ওভারে জয় এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার গল্প আলাদা ছিল। প্রথম বলে রাহুল তেওয়াতিয়া ছক্কা মেরেছেন এবং দ্বিতীয় বলে চার মেরে ম্যাচের ফলাফল নিশ্চিত করেছেন। তেওয়াতিয়া ৬ বলে ১৩ রানের সংক্ষিপ্ত কিন্তু নির্ণায়ক ইনিংস খেলেছেন। বাটলার অপরাজিত ৯৭ রানে থেকে গেছেন এবং শতক থেকে মাত্র তিন রানে থেমেছেন, কিন্তু তার দল ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে।