অভিনব সিওয়াচ: ৩০ লক্ষ টাকার চাকরি ছেড়ে IAS পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

🎧 Listen in Audio
0:00

IAS অভিনব সিওয়াচ: প্রত্যেকের জীবনেই একটা সময় আসে যখন তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এমনই এক অনুপ্রেরণামূলক গল্প, IAS অফিসার অভিনব সিওয়াচের, যিনি জীবনের নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে সফলতার নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছেন। আজ তিনি শুধু একজন সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবেই কাজ করছেন না, বরং দেশের যুব সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন। আসুন জেনে নেই তাঁর অনুপ্রেরণামূলক জীবনযাত্রার কথা, এবং কীভাবে তিনি তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছেন।

অভিনব সিওয়াচের প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

অভিনব সিওয়াচের জন্ম হয়েছিল হরিয়ানার একটি ছোট্ট গ্রামে। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন তাঁর বাড়ির কাছাকাছি একটি স্কুলে এবং পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লিতে যান। সেখানে তিনি B.Tech ডিগ্রি অর্জন করেন এবং এরপর IIM কলকাতা থেকে MBA ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর শিক্ষা ও পরিশ্রম থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল যে তিনি জীবনে কিছু বড় করার স্বপ্ন দেখেন।

30 লক্ষ টাকার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সাহস

পড়াশোনা শেষ করে অভিনব একটি বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন এবং 30 লক্ষ টাকা বার্ষিক বেতনের একটি চাকরি পান। এই চাকরিটা যেকোনো যুবকের জন্য স্বপ্নপূরণের মতো ছিল, কিন্তু অভিনবের স্বপ্ন ছিল অন্য কিছু। তাঁর মন ছিল সিভিল সার্ভিসের দিকে, এবং তিনি সেই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যা খুব কম লোকই নিতে পারে।

অভিনব এই চমৎকার চাকরি ছেড়ে হরিয়ানা পাবলিক সার্ভিস কমিশন (HPSC)-এর পরীক্ষা দেন এবং উপ-তহসিলদার হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।

SDM হওয়ার পরও IAS-এর স্বপ্ন ছাড়েননি

উপ-তহসিলদার পদে কাজ করার সময় অভিনব দিল্লি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা পাস করেন এবং SDM (সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট) হন। এই পদে কাজ করার সময়ও তাঁর স্বপ্ন ছাড়েননি – তাঁর লক্ষ্য ছিল IAS (Indian Administrative Services) হওয়া। তাঁর মতে, “আমি চাকরির সাথে সাথে দিনে ৭-৮ ঘন্টা পড়াশোনা করতাম এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সম্পূর্ণ দূরত্ব বজায় রাখতাম।”

পরিবার থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণা

অভিনব সিওয়াচের পরিবারের প্রশাসনিক ক্ষেত্রের সাথে গভীর সম্পর্ক ছিল। তাঁর পিতা সতবির সিওয়াচ একজন এক্সাইজ অ্যান্ড ট্যাক্সেশন কমিশনার এবং তাঁর চাচা ললিত সিওয়াচ একজন IAS অফিসার। পরিবারের এই প্রশাসনিক পরিবেশ অভিনবকে প্রতিটি পদক্ষেপে অনুপ্রাণিত করেছে এবং তাঁর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করেছে।

নিজস্ব পড়াশোনার মাধ্যমে সফলতা

অভিনব তাঁর সফলতার জন্য তাঁর নিজস্ব পড়াশোনাকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমি কোনো কোচিং করিনি, বরং নিজেই পড়াশোনা করেছি। আমি প্রতিদিন ৫-৬ ঘন্টা নিয়মিত পড়াশোনা করতাম এবং আমার মৌলিক বিষয়গুলোকে দৃঢ় করতাম। এটাই কারণ আমি UPSC পরীক্ষায় অল ইন্ডিয়া ১২তম র‍্যাংক পেয়েছি।”

যুবসমাজকে সফলতার টিপস

অভিনব সিওয়াচ সবসময় যুবসমাজকে তাঁর সফলতার পথে চলার পরামর্শ দেন। তাঁর বিশ্বাস, “সফলতার কোনো শর্টকাট নেই। পরিশ্রমই সফলতার চাবিকাঠি। মৌলিক বিষয়গুলোকে দৃঢ় করুন, রিভিশন করুন এবং নিয়মিত পড়াশোনা করুন।”

সমাজসেবা করা মূল উদ্দেশ্য

IAS অফিসার হওয়ার পর অভিনবের মূল উদ্দেশ্য হল সমাজসেবা করা। তিনি মনে করেন, “আমার কাছে যতটা ক্ষমতা ও অধিকার থাকবে, আমি তা জনসাধারণের কল্যাণে ব্যবহার করব। সমাজসেবার চেয়ে বড় কিছু নেই।”

অভিনব সিওয়াচের জীবনযাত্রা বলে দেয় যে, যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা, দৃঢ়সংকল্প এবং অবিরাম পরিশ্রম অপরিহার্য। আজ তিনি প্রতিটি যুবকের জন্য এক অনুকরণীয় উদাহরণ যে কীভাবে স্বপ্ন পূরণ করা যায়, রাস্তায় যতই বাধা থাকুক না কেন।

Leave a comment