এম.টেক শিক্ষা ঋণ: ১০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুযোগ, প্রক্রিয়া ও সরকারি সুবিধা

🎧 Listen in Audio
0:00

এম.টেক পড়াশোনার জন্য ছাত্রছাত্রীরা ১০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ নিতে পারেন। ঋণের প্রক্রিয়া, EMI গণনা এবং সরকারি সাবসিডি প্রকল্প সম্পর্কে জেনে নিন।

এম.টেক স্টাডি লোন: যদি আপনি এম.টেক পড়াশোনার স্বপ্ন দেখছেন কিন্তু কলেজ ফি এবং অন্যান্য খরচ নিয়ে চিন্তিত, তাহলে শিক্ষা ঋণ আপনার জন্য একটি ভাল বিকল্প হতে পারে। আজকাল ভারতে অনেক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক ছাত্রছাত্রীদের এম.টেকের মতো টেকনিক্যাল এবং প্রফেশনাল কোর্সের জন্য শিক্ষা ঋণের সুবিধা দিচ্ছে।

এম.টেকের জন্য কত টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ পাওয়া যায়?

ভারতে এম.টেক কোর্সের জন্য ছাত্রছাত্রীরা সাধারণত ১০ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ নিতে পারেন। তবে, যদি কোনো ছাত্র বিদেশে পড়াশোনা করতে চান, তাহলে এই পরিমাণ ২৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে।

যদি কোনো ছাত্র কোনো নামকরা প্রতিষ্ঠান (যেমন IIT, NIT, IISc) থেকে এম.টেক করছেন, তাহলে সরকারি ব্যাংক কম সুদের হার এবং দ্রুত প্রক্রিয়াকরণের সুবিধা দেয়।

শিক্ষা ঋণ কোন কোন খরচ কভার করে?

  • কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি
  • হোস্টেল এবং থাকার খরচ
  • বই, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ
  • যাতায়াত খরচ (বিদেশে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য)

ল্যাব এবং লাইব্রেরি চার্জ

  • বীমা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত খরচ
  • শিক্ষা ঋণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
  • কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপত্র

ফি স্ট্রাকচারের বিবরণ

  • ছাত্রের পরিচয় এবং ঠিকানার প্রমাণ (আধার কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি)
  • পূর্ববর্তী শিক্ষাগত প্রমাণপত্র (১০ম, ১২ম, স্নাতক)
  • মা-বাবা বা গ্যারান্টরের আয়ের প্রমাণ (ITR, বেতন স্লিপ ইত্যাদি)
  • যদি ঋণের পরিমাণ ৭.৫ লক্ষ টাকার বেশি হয়, তাহলে সম্পত্তি বা অন্যান্য সিকিউরিটির প্রয়োজন হতে পারে।

EMI-র বোঝা কত হবে?

ধরা যাক আপনি ১০ লক্ষ টাকার ঋণ নিয়েছেন এবং তার উপর ৯% বার্ষিক সুদ রয়েছে। ব্যাংক সাধারণত ১ থেকে ২ বছরের মরিটোরিয়াম পিরিয়ড দেয়, যাতে আপনাকে EMI দিতে হয় না। এই পিরিয়ড আপনার পড়াশোনার সময় এবং চাকরি পাওয়ার প্রথম কয়েক মাসের জন্য।

এর পর, যদি আপনি ৭ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করেন, তাহলে আপনার মাসিক EMI প্রায় ১৪,০০০ থেকে ১৬,০০০ টাকা হতে পারে। যদি আপনি দ্রুত পরিশোধ করতে চান, তাহলে ব্যাংক আপনাকে প্রি-পেমেন্টের সুবিধাও দেয়। এর ফলে সুদের উপর কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়।

সহজ পেমেন্টের উপায়

  • পড়াশোনা শেষ হওয়ার সাথে সাথে চাকরি পাওয়ার প্রস্তুতি নিন যাতে EMI শুরু হওয়ার আগেই আপনার আয় শুরু হয়।
  • স্কলারশিপ, ইন্টার্নশিপ বা পার্ট টাইম চাকরির সাহায্যে কিছুটা আয় করতে থাকুন।
  • EMI পরিশোধের জন্য ECS বা অটো-ডেবিট সুবিধা ব্যবহার করুন যাতে কোনো কিস্তি মিস না হয়।
  • যদি চাকরি পাওয়ার দেরি হয়, তাহলে ব্যাংকের কাছে মরিটোরিয়াম পিরিয়ড বাড়ানোর অনুরোধ করতে পারেন।

সরকারের পক্ষ থেকে কী সাহায্য পাওয়া যায়?

ভারত সরকারের CGFSEL প্রকল্প (Credit Guarantee Fund Scheme for Education Loans) এর অধীনে ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ কোনও সিকিউরিটি ছাড়াই পাওয়া যায়। এছাড়াও, যদি পরিবারের বার্ষিক আয় ৪.৫ লক্ষ টাকার কম হয়, তাহলে কিছু ছাত্রছাত্রীকে সুদের উপর সাবসিডিও পাওয়া যায়। এর ফলে পড়াশোনার সময়ের সুদ সরকার পরিশোধ করে।

সুদের হার এবং ব্যাংক নির্বাচন কীভাবে করবেন?

প্রতিটি ব্যাংকের সুদের হার আলাদা আলাদা। সরকারি ব্যাংক (যেমন SBI, Bank of Baroda, PNB) সাধারণত কম সুদের হারে ঋণ দেয়। অন্যদিকে, বেসরকারি ব্যাংক প্রক্রিয়াকরণে দ্রুততা আনে কিন্তু সুদের হার কিছুটা বেশি হতে পারে। কিছু প্রধান ব্যাংকের সুদের হার নিম্নরূপ হতে পারে:

SBI: ৮.৫০% - ১০%
PNB: ৯% - ১১%
HDFC Credila: ১১% - ১৩%
Axis Bank: ১০.৫% - ১২.৫%

Leave a comment