ভ্যানকুভারে সাংবাদিকের উপর খালিস্তান সমর্থকদের হামলা: মোদীর বিরুদ্ধে হুমকি

ভ্যানকুভারে সাংবাদিকের উপর খালিস্তান সমর্থকদের হামলা: মোদীর বিরুদ্ধে হুমকি
🎧 Listen in Audio
0:00

কানাডার ভ্যানকুভারে খালিস্তান সমর্থকরা গবেষণামূলক সাংবাদিক মোচা বেজিরগানকে হুমকি দিয়ে তাঁর ফোন ছিনতাই করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে ‘জি-৭-এ রাজনীতি শেষ করে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।

কানাডা: কানাডার ভ্যানকুভারে সাপ্তাহিক খালিস্তানী সমাবেশের সময় গবেষণামূলক সাংবাদিক মোচা বেজিরগানকে ভয়ভীতি দেখানো এবং হুমকি দেওয়ার এক গুরুতর ঘটনা ঘটেছে। সাংবাদিক জানিয়েছেন, তাঁকে ঘিরে ধমকানো হয়েছে, তাঁর ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘জি-৭-এ রাজনীতি শেষ করে দেওয়া হবে’র মতো হুমকি দেওয়া হয়েছে।

বেজিরগান দীর্ঘদিন ধরে কানাডা, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং নিউজিল্যান্ডে খালিস্তানী কর্মকাণ্ডের নথিভুক্তি করে আসছেন। এই ঘটনা ভারত ও কানাডার মধ্যে ইতোমধ্যেই উত্তপ্ত সম্পর্কের মধ্যে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

সাংবাদিককে ঘিরে হুমকি দেওয়া

কানাডার ভ্যানকুভার শহরে ২০২৫ সালের ৮ই জুন, রবিবার, একটি সাপ্তাহিক খালিস্তানী সমাবেশের সময় একটি অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা ঘটে। বিখ্যাত গবেষণামূলক সাংবাদিক মোচা বেজিরগান, যিনি বহু বছর ধরে খালিস্তান সমর্থক প্রদর্শন এবং কর্মকাণ্ডের নথিভুক্তি রিপোর্টিং করে আসছেন, তাঁকে এক উত্তাল জনতা ঘিরে ধরে।

বেজিরগান সেই সময় সমাবেশের ভিডিও রেকর্ডিং করছিলেন, যখন কয়েকজন লোক তাঁর সামনে এসে তাঁকে ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করে। তিনি নিজেই জানিয়েছেন যে, হঠাৎ দুই-তিনজন লোক তাঁর কাছে এসে তাঁকে ধমকাতে শুরু করে। একই সময় একজন ব্যক্তি তাঁর হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নেয়।

“আমি এখনও কাঁপছি”: সাংবাদিকের অভিজ্ঞতা

এএনআই-এর সাথে ফোনে কথোপকথনে মোচা বেজিরগান জানিয়েছেন, “এই ঘটনা আমার সাথে মাত্র দুই ঘন্টা আগে ঘটেছে এবং আমি এখনও কাঁপছি। তারা গুন্ডাগিরি করেছে। তারা আমার রেকর্ডিং বন্ধ করার চেষ্টা করছিল এবং আমার ফোনও ছিনিয়ে নিয়েছে।”

তিনি আরও জানান যে, সেই জনতার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি আগেও অনলাইনে তাঁকে বিরক্ত করেছেন। বেজিরগানের মতে, এটি কেবল ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং প্রেসের স্বাধীনতার উপরও সরাসরি আঘাত।

‘জি-৭-এ মোদীর রাজনীতি শেষ করে দেব’

ঘটনার সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হল সেই মন্তব্য যা বেজিরগান সমাবেশে উপস্থিত লোকদের কাছ থেকে শুনেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, কিছু প্রতিবাদকারী বলছিলেন যে, “জি-৭ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজনীতি শেষ করে দেওয়া হবে।” বেজিরগান যখন তাদের জিজ্ঞাসা করেন যে, তারা কি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে যা ঘটেছিল তেমনটিই করতে চান, তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তারা ইন্দিরা গান্ধীর খুনিদের তাদের পূর্বপুরুষ হিসেবে মনে করে এবং তাদেরকে গর্বের সাথে দেখে।

এই ধরণের বক্তব্য, যেখানে এক গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রীকে হিংস্রভাবে লক্ষ্যবস্তু করার কথা বলা হচ্ছে, তা কেবল অসংবিধানিক নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতের বিরুদ্ধে বিপজ্জনক মানসিকতার প্রতিফলন।

প্রেসের স্বাধীনতার উপর আক্রমণ নাকি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র?

বেজিরগান বছরের পর বছর ধরে কানাডা, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং নিউজিল্যান্ডে চলমান খালিস্তান সমর্থক প্রদর্শনের নথিভুক্তি করে আসছেন। তাঁর মতে, এইবার তাঁকে ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। তিনি বলেছেন যে, প্রতিবাদের আড়ালে কিছু কট্টরপন্থীরা স্বাধীন সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সত্য প্রকাশে বাধা দিতে চায়।

বেজিরগান জানিয়েছেন যে, তিনি ব্যাকআপ রেকর্ডিং চালু করে রেখেছিলেন যাতে ঘটনার সম্পূর্ণ নথি সুরক্ষিত থাকে। পরে ভ্যানকুভার পুলিশ মধ্যস্থতা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং সাংবাদিকের ফোন ফিরিয়ে দেয়।

Leave a comment