আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়কর ব্যবস্থা বিলুপ্তির প্রস্তাব ছিল একটি বৃহৎ ও বিপ্লবী পদক্ষেপ। তিনি বিশ্বাস করতেন এতে আমেরিকার নাগরিকদের ব্যয়যোগ্য আয় বৃদ্ধি পাবে, অর্থাৎ কর ও অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা চার্জ পরিশোধের পরও তাদের হাতে অবশিষ্ট আয় বেশি থাকবে।
ওয়াশিংটন: রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অর্থনৈতিক নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রস্তাব রেখেছেন। ২৮ জানুয়ারী তিনি আবারও আয়কর ব্যবস্থা বিলুপ্তির তার ধারণা পেশ করেন, যাতে আমেরিকার নাগরিকদের ব্যয়যোগ্য আয় বাড়ানো যায়। ব্যয়যোগ্য আয় বলতে তিনি বুঝিয়েছেন সেই আয় যা কর ও অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা চার্জ পরিশোধের পর অবশিষ্ট থাকে।
ট্রাম্প আরও বলেছিলেন, এই পরিবর্তনের ফলে আমেরিকায় সেই ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে পারবে যার ফলে আমেরিকা আগে ধনী হয়েছিল। তার মতে, কর ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে এবং ট্যারিফ বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিক পাওয়া যাবে, কারণ এতে ব্যবসায়ী ও নাগরিকদের অধিক ব্যয় ও বিনিয়োগের সুযোগ মিলবে।
রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের মাস্টারপ্ল্যান
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নীতিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে তিনি আমেরিকাকে পুনরায় সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ট্যারিফ ব্যবস্থা প্রয়োগের কথা বলেছেন। তার মতে, এখন সময় এসেছে যখন আমেরিকা সেই ব্যবস্থায় ফিরে যাবে যা তাকে আগে ধনী ও শক্তিশালী করেছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, বিদেশী দেশগুলোকে সমৃদ্ধ করার পরিবর্তে, আমেরিকার নাগরিকদের সমৃদ্ধ করার জন্য বিদেশী দেশগুলোতে কর আরোপ করা উচিত।
ট্রাম্প ১৯১৩ সালের পূর্বে আমেরিকায় কোন আয়কর ছিল না বলে উল্লেখ করে বলেছেন যে, ট্যারিফের মাধ্যমে আমেরিকা ১৮৭০ থেকে ১৯১৩ সালের মধ্যে তার সবচেয়ে ধনী অবস্থা দেখেছিল। তিনি ১৮৮৭ সালের "মহান ট্যারিফ কমিশন"-এর উল্লেখ করে বলেছেন যে, সেই সময় আমেরিকা এত ধনী ছিল যে সরকার একটি কমিশন গঠন করেছিল যাতে সেই অর্থের ব্যবহার কীভাবে করা যায় তা নির্ধারণ করা যায়।
এই ধারণা একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা, যেখানে ট্রাম্প আমেরিকার নীতিগুলিকে অতীতে সফল প্রচেষ্টার ভিত্তিতে পুনরায় প্রয়োগ করার কথা বলছেন। এই প্রস্তাব তার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে স্পষ্ট করে, যেখানে আমেরিকার জন্য কম কর, অধিক ট্যারিফ এবং আমেরিকানদের জন্য অধিক সমৃদ্ধির লক্ষ্য রয়েছে।
ট্যারিফ কি?
ট্যারিফ হল সেই কর যা কোন দেশের সরকার আমদানি করা পণ্যের উপর আরোপ করে। এটি পণ্য আমদানির উপর এক ধরণের শুল্ক, যার উদ্দেশ্য সরকারের জন্য রাজস্ব আয় এবং দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
* রাজস্ব আয়: যখন সরকার আমদানি করা পণ্যের উপর কর আরোপ করে, তখন তার রাজস্ব আয় হয়। এই রাজস্ব সরকারি ব্যয় পূরণ এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার করা যায়।
* দেশীয় উৎপাদকদের লাভ: ট্যারিফের ফলে আমদানি করা পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, যার ফলে দেশীয় উৎপাদকরা প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পায়। এতে দেশীয় পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে পারে কারণ তার দাম আমদানি করা পণ্যের চেয়ে কম। এতে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা এবং উন্নয়নে সাহায্য হয়।