ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংস, অনেক শহর ক্ষতিগ্রস্ত। জিডিপির ৭০% পর্যন্ত ক্ষতির সম্ভাবনা। ভারতসহ অনেক দেশ ত্রাণ অভিযান শুরু করেছে। মিয়ানমারে জরুরী অবস্থা জারি, উদ্ধারকাজ চলছে। থাইল্যান্ড এবং ভারতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
Myanmar Earthquake: শুক্রবার মিয়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে সমগ্র দেশ। সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১০০০-এর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং ২২০০-এর বেশি গুরুতর আহত হয়েছে। উদ্ধারকাজ চলছে, কিন্তু অনেক সংস্থার ধারণা, মৃতের সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। আমেরিকান জিওলজিক্যাল সার্ভে (USGS) সতর্ক করে বলেছে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
থাইল্যান্ড এবং ভারতেও অনুভূত হয়েছে কম্পন
এই ভূমিকম্পের কম্পন মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলিতেও অনুভূত হয়েছে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে শুরু করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর এবং মেঘালয় পর্যন্ত কম্পন অনুভূত হয়েছে। থাইল্যান্ডে এই দুর্যোগের ফলে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১০০-এর বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।
ভারত ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। ভারত সংকটের সময় সাহায্যের জন্য "অপারেশন ব্রহ্মা" শুরু করেছে। এর অধীনে শনিবার ১৫ টন-এর বেশি ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, এই সাহায্য ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে পৌঁছে গেছে। এই ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে তাঁবু, কম্বল, খাদ্য প্যাকেট, চিকিৎসা কিট এবং জেনারেটর।
ভূমিকম্প এত ক্ষতিকারক কেন ছিল?
মিয়ানমারের সাগাং ফল্ট আগে থেকেই ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। ২০১২ সালেও এখানে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছিল। ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের গবেষণা সহযোগী রজার ম্যাসন জানিয়েছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্প ১০ কিমি গভীরে ছিল, যার ফলে ভূপৃষ্ঠে কম্পনের তীব্রতা বেশি ছিল। দুর্বল অবকাঠামো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের কারণে জন-মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জিডিপির ৭০% পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে
USGS-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনের মতে, এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের অর্থনীতিতেও ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশের জিডিপির ৭০% পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে। মিয়ানমারের মণ্ডলে অঞ্চলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে মিয়ানমারকে সাহায্য পাচ্ছে
ভূমিকম্পের পর বিশ্বজুড়ে মিয়ানমারকে সাহায্য আসছে। চীন, রাশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর ত্রাণ সামগ্রী এবং উদ্ধার দল পাঠিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির মাধ্যমে ২০ লক্ষ ডলার সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছে। যদিও মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সাথে তাদের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তবুও আমেরিকা মানবিক সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছে।
