হংকং ও সিঙ্গাপুরে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি: তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা

🎧 Listen in Audio
0:00

এশিয়ার হংকং এবং সিঙ্গাপুরে করোনা (Covid-19) -এর নতুন সংক্রমণ আবার দেখা দিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে হংকংয়ে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Covid 19: বিশ্ব ধীরে ধীরে কোভিড-১৯-এর দুঃসময় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে, এমন সময় এশিয়ার হংকং এবং সিঙ্গাপুরে কোভিড-১৯-এর নতুন সংক্রমণ আবার দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এই বৃদ্ধি স্বাস্থ্য বিভাগগুলিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে এবং সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে হংকংয়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, অন্যদিকে সিঙ্গাপুরেও সংক্রমণের ঘটনা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হংকংয়ে বৃদ্ধিপাচ্ছে উদ্বেগজনক অবস্থা

হংকংয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কেন্দ্রের সংক্রামক রোগ শাখার প্রধান ডাঃ আলবার্ট অউ স্থানীয় মিডিয়াকে জানিয়েছেন যে, কোভিড-১৯-এর পজিটিভ কেসের শতকরা হার গত এক বছরে সর্বোচ্চ হয়েছে। তাঁর মতে, ৩ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে ৩১টি গুরুতর কোভিড-১৯ কেস রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত বছরের পর থেকে সর্বোচ্চ। এই সময় মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে, যা অনেক দিন পর প্রথমবার এত উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

যদিও এই সংখ্যা ২০২০-২০২১-এর মধ্যে আসা সংক্রমণের চরম স্তরের চেয়ে কম, তবুও বিশেষজ্ঞরা এটিকে আগামী সময়ের জন্য একটি গুরুতর সতর্কতা হিসেবে বিবেচনা করছেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সংখ্যাও ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সিঙ্গাপুরেও বৃদ্ধি পাচ্ছে কেস

সিঙ্গাপুরে কোভিড-১৯-এর অবস্থা কিছুটা ভিন্ন নয়। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক বছর পর প্রথমবার সংক্রমণের সংখ্যা নিয়ে আপডেট প্রকাশ করেছে। তথ্য অনুযায়ী, ৩ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে সংক্রমণের ঘটনা গত সপ্তাহের তুলনায় ২৮% বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৪,২০০-এ পৌঁছেছে। এই দ্রুত বৃদ্ধিপাচ্ছা সংখ্যা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।

সিঙ্গাপুর সরকার এখনও পর্যন্ত কোনো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি, তবে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং টিকা কর্মসূচি ত্বরান্বিত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, সিঙ্গাপুরে বড় বড় জনসমাবেশের উপর নজর রাখা হচ্ছে যাতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

এশিয়ায় করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা

হংকং এবং সিঙ্গাপুরে করোনা কেস বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পুরো এশিয়ার মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। মহামারীর আগের পর্যায়েও এই দুটি শহর কোভিড-১৯-এর জন্য সংবেদনশীল ছিল, কারণ এখানকার জনসংখ্যা ঘন এবং যোগাযোগ বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের পরিবর্তন এবং নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলি এবার আবার সংক্রমণের ঢেউয়ের কারণ হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)ও কোভিড-১৯ কেসের এই অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধির উপর নজর রেখেছে। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়গুলিকে অনুরোধ করেছে যাতে সংক্রমণ রোধের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং জনগণকে সতর্ক করা হয়।

হাসপাতালে চাপ বৃদ্ধি

উভয় শহরেই হাসপাতালে ভর্তি কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে, যা স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। ৭০ লক্ষ জনসংখ্যার হংকং শহরে সম্প্রতি ভাইরাসজনিত রোগের কারণে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর ফলে স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালের সংস্থান বৃদ্ধি করা এবং কোভিড-১৯ ওয়ার্ডগুলিকে পুনরায় সক্রিয় করার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

সিঙ্গাপুরেও হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিছানার উপলব্ধতা একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। সরকার হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে তারা প্রয়োজনীয় সংস্থানের অভাব না হয় এবং স্বাস্থ্যকর্মীর নিয়োগ বৃদ্ধি করে।

Leave a comment