ওয়াকফ সংশোধন বিল থেকে ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন ওয়াকফ সম্পত্তির জন্য আইনি দলিল প্রয়োজন হবে, যার ফলে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ কমবে, বিরোধীরা এর প্রতিবাদ করছে।
ওয়াকফ বিল: ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এর অর্থ ছিল, যদি কোন মসজিদ, কবরস্থান বা দরগাহের মতো স্থান দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় বা সম্প্রদায়িক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়, তাহলে তাকে কোনও দলিল ছাড়াই ওয়াকফ সম্পত্তি বলে গণ্য করা হত। এই প্রথা ইসলামী আইন এবং ভারতে ওয়াকফের প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ ছিল।
সরকার কেন এই ধারাটি বাদ দিল?
লোকসভায় উপস্থাপিত ওয়াকফ সংশোধন বিলের মাধ্যমে সরকার ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ বাতিল করে দিয়েছে। এখন কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি কেবলমাত্র তখনই ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে যখন তার আইনি দলিল থাকবে অথবা ওসিয়তনামার মাধ্যমে তা ওয়াকফে হস্তান্তর করা হবে। এর অধীনে এখন প্রতিটি ওয়াকফ সম্পত্তির জেলাশাসক কর্তৃক তদন্ত করা হবে। সরকার এর বাতিলের কারণ হিসেবে বলেছে যে, এর অধীনে অনেক সময় ওয়াকফ বোর্ড কোনও আইনি ভিত্তি ছাড়াই সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে।
বিরোধীদের আপত্তি
বিরোধীরা এই সংশোধনের বিরোধিতা করেছে। কংগ্রেসের সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন বলেছেন, এই বিল মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থানগুলির জন্য বিপদের ইঙ্গিত বহন করতে পারে। তাঁর যুক্তি ছিল, কয়েক শত বছরের পুরোনো মসজিদ এবং ধর্মীয় স্থানের কাছে আইনি দলিল নেই, তাই তাদের ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে বাদ দেওয়া ঠিক হবে না।
কী পরিবর্তন আসবে?
এখন থেকে ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এর পরিবর্তে ‘ওয়াকফ বাই ডিড’ কার্যকর হবে, অর্থাৎ নিবন্ধিত ডিডের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে গণ্য করা হবে। এই পরিবর্তন নিশ্চিত করবে যে, কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ ঘোষিত হওয়ার আগে তার আইনি দলিল থাকবে, যাতে সম্পত্তির মালিকানার সঠিক দলিল থাকে।
কংগ্রেস এবং মুসলিম সংগঠনের প্রতিবাদ
এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে মুসলিম সংগঠন এবং বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এর ফলে ধর্মীয় স্থান দখলের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে। অনেক জায়গায় দলিল নেই, এমতাবস্থায় এই ধারা ধর্মীয় ও সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
সরকারের পক্ষ কী?
সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপ জমি দখলের ঘটনায় স্বচ্ছতা আনা এবং বিরোধ কমানোর জন্য নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এই সংশোধনকে সমর্থন করে বলেছেন, আইনি দলিল ছাড়া কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা যাবে না।