দুই বছরের বিলম্বের পর অবশেষে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রিক তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমানের জন্য প্রথম চুক্তিবদ্ধ ইঞ্জিন তৈরি করেছে। এখন হিন্দুস্থান এয়ারোনটিকস লিমিটেড (এইচএএল)-কে ৯৯টি ইঞ্জিন সরবরাহের প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে।
নয়াদিল্লি: ভারতীয় বিমানবাহিনীর হালকা যুদ্ধবিমান (এলসিএ) তেজস মার্ক-১এ-এর জন্য দুই বছর ধরে পেন্ডিং ইঞ্জিনের ডেলিভারি অবশেষে হল। আমেরিকান অ্যারোস্পেস প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) এফ-৪০৪ টার্বোফ্যান ইঞ্জিনের প্রথম ইউনিট হিন্দুস্থান এয়ারোনটিকস লিমিটেড (এইচএএল)-কে হস্তান্তর করেছে। এখন এইচএএল-কে ৯৯টি ইঞ্জিনের ডেলিভারি প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে যাতে ভারতীয় বিমানবাহিনী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন তেজস যুদ্ধবিমান পেতে পারে।
এইচএএল-কে উৎপাদন প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে
তেজস মার্ক-১এ-এর নির্মাণে ইতোমধ্যেই বিলম্ব হচ্ছে, যার জন্য ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভি. আর. চৌধুরী এবং তাঁর উত্তরাধিকারী এ. পি. সিং ক্রমাগত এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন যে দেশের বিমান শক্তিকে শক্তিশালী রাখার জন্য প্রতি বছর অন্তত ৪০টি যুদ্ধবিমানের প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান গতিতে এই লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হচ্ছে।
* উৎপাদনের গতি বৃদ্ধি করা – বর্তমানে এইচএএল প্রতি বছর ১৬টি তেজস বিমান তৈরি করছে, কিন্তু এটিকে বছরে ২০-২৪টি বিমানে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
* নতুন পরীক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা – তেজস মার্ক-১এ-তে অ্যাস্ট্রা এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমের ইন্টিগ্রেশন করা বাকি রয়েছে।
* নাশিকে তৃতীয় উৎপাদন লাইন চালু করা – বেঙ্গালুরুর পাশাপাশি নাশিকেও একটি উৎপাদন ইউনিট তৈরি করা হচ্ছে, যা তেজস উৎপাদনে ত্বরণ আনবে।
প্রতি বছর ২০টি ইঞ্জিন পাওয়া যাবে
জেনারেল ইলেকট্রিকের সাথে আগস্ট ২০২১-এ ৫,৩৭৫ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল, যার অধীনে প্রতিষ্ঠানটি ভারতকে ৯৯টি এফ-৪০৪ ইঞ্জিন সরবরাহ করবে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথম বছর ১২টি ইঞ্জিন এবং তারপর প্রতি বছর ২০টি ইঞ্জিন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জিই অ্যারোস্পেসের মতে, এফ-৪০৪ ইঞ্জিন উৎপাদন লাইন পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর এখন পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে, যার ফলে গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন পুনরায় সংযুক্ত করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
তেজস মার্ক-১এ, স্বদেশী তেজস মার্ক-১-এর উন্নত সংস্করণ, যাতে উন্নত অ্যাভিওনিক্স, রাডার সিস্টেম এবং অস্ত্র ইন্টিগ্রেশনের সুবিধা থাকবে। ভারত সরকারের লক্ষ্য ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০০-এর বেশি হালকা যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা, যার মধ্যে তেজস মার্ক-১এ এবং ভবিষ্যতের তেজস মার্ক-২ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এইচএএল জানিয়েছে যে ২০২৬ সালের মধ্যে উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য তারা অতিরিক্ত সম্পদ সংগ্রহ করছে, যাতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর চাহিদা পূরণ করা যায়। যদি উৎপাদনের লক্ষ্য সময়মতো পূর্ণ হয়, তাহলে তেজস ভারতীয় বিমানবাহিনীর শক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৃদ্ধি আনবে।
