সিন্ধু জল চুক্তি: ভারতের অটল অবস্থান, পাকিস্তানের যুদ্ধের হুমকি

ভারত সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। পাকিস্তানের আশঙ্কা, ভারত নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দিতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক ডার সতর্ক করে দিয়েছেন, এতে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে।

India-Pak Ceasefire: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Water Treaty) কেন্দ্র করে উত্তেজনা আবারও চরমে। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) সর্ম্পকে একমত হওয়া সত্ত্বেও, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক ডার নতুন করে বিরোধের সূত্রপাত করে বলেছেন, যদি জলের সমস্যা সমাধান না হয় তাহলে এই যুদ্ধবিরতি বেশিদিন টিকবে না।

ভারত সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের পক্ষে অটল

১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে ভারত সরকার এখনও অটল রয়েছে। ভারত মনে করে পাকিস্তান ক্রমাগত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে এবং এমন পরিস্থিতিতে পুরানো শর্তে জলের মতো সম্পদের বণ্টন রাষ্ট্রের স্বার্থে নয়।

পাকিস্তানকে পীড়িত করছে জল বন্ধের ভয়

পাকিস্তানের উদ্বেগ হল ভারত সিন্ধু, চিনাব ও ঝেলামের মতো নদীর জলের প্রবাহ বন্ধ করে দিতে বা পাল্টে দিতে পারে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশ পুরোপুরি সিন্ধু নদীর জলের উপর নির্ভরশীল। ফলে ভারতের যেকোনো সিদ্ধান্ত পাকিস্তানকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। এ কারণেই পাকিস্তান সরকার বারবার এই বিষয় নিয়ে হুমকি দিচ্ছে।

ইশাক ডারের যুদ্ধের হুমকি

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক ডার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের সাথে কথোপকথনে বলেছেন, “যদি জল বণ্টন নিয়ে কোনো সমঝোতা না হয়, তাহলে তাকে যুদ্ধের কাজ (Act of War) হিসেবে ধরা হবে।” তিনি এই বিরোধকে কাশ্মীর সমস্যার সাথেও জড়ানোর চেষ্টা করেছেন এবং ভারতের উপর ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছেন।

সিন্ধু জল চুক্তি: ইতিহাস কি?

১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে সিন্ধু, চিনাব ও ঝেলামের জল পাকিস্তানকে এবং রাবি, বেয়াস, সতলজের জল ভারতকে বরাদ্দ করা হয়। এই চুক্তি বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে পাকিস্তান এর উপর রাজনীতি করেছে এবং ভারতের উপর অযথা চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।

পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের অবস্থানের পরিবর্তন

২০১৯ সালের পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত সরকার সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের ইচ্ছা প্রকাশ করে। ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড উপেক্ষা করা যাবে না এবং তার প্রতি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে জবাব দেওয়া হবে।

যুদ্ধবিরতির সাথে জলের কোনো সম্পর্ক নেই

সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের DGMO (Director General of Military Operations) যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে একমত হয়েছে। উভয় পক্ষ সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান সিন্ধু জল চুক্তিকে এই যুদ্ধবিরতির সাথে জড়ানোর চেষ্টা করছে, যেখানে ভারত এখনও পর্যন্ত কোনো নমনীয়তা দেখায়নি।