রাজস্থান বিধানসভায় ‘পাকিস্তানী’ বিতর্ক: কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে বিজেপি বিধায়কের বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া

🎧 Listen in Audio
0:00

রাষ্ট্রীয় বিধানসভায় সম্প্রতি এক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, যখন কংগ্রেস বিধায়ক রফিক খানকে বিজেপি বিধায়ক গোপাল শর্মা ‘পাকিস্তানী’ বলে অভিহিত করেন। এই বক্তব্যের পর সদনে হইচই পড়ে যায় এবং কংগ্রেস বিধায়করা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

জয়পুর: রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক রফিক খানকে বিজেপি বিধায়ক গোপাল শর্মা ‘পাকিস্তানী’ বলায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই মন্তব্যে রফিক খান আবেগাপ্লুত হয়ে যান এবং এটিকে অপমানজনক বলে উল্লেখ করে প্রশ্ন তোলেন যে, কি মুসলিম বিধায়ক হওয়া অপরাধ? এই ঘটনার পর সদনে হইচই পড়ে যায় এবং কংগ্রেস তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

বিধানসভা স্পীকারও এই মন্তব্যে আপত্তি জানান, অন্যদিকে গোপাল শর্মা তার ব্যাখ্যায় বলেন যে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে রফিক খানকে এমনটা বলেননি। এই বক্তব্যে শিক্ষাবিদ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদেরও তীব্র প্রতিক্রিয়া আসে, যার ফলে বিতর্ক আরও তীব্র হচ্ছে।

“আমি খুশি যে আমার বাবা এই দুনিয়ায় নেই,” আবেগাপ্লুত হয়ে রফিক খান বলেন, “আমার বাবা দুই বছর আগে মারা গেছেন, আমি খুশি যে তিনি আজ জীবিত নন। যদি তিনি থাকতেন এবং আমাকে এ ধরনের অপমানজনক কথা শুনতে হতো, তাহলে তিনি তা সহ্য করতে পারতেন না।” তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পর থেকে তিনি দুই রাত ঘুমোতে পারেননি এবং অত্যন্ত দুঃখিত বোধ করছেন।

রফিক খান আরও বলেন, “যদি মুসলমান হওয়া অপরাধ হয়, যদি মুসলিম বিধায়ক হওয়া অপরাধ হয়, তাহলে বিজেপিকে আইন করে দিতে হবে যাতে আর কখনও কোনও মুসলিম বিধায়ক হতে না পারে।”

সম্পূর্ণ ঘটনা কী?

এই বিতর্ক তখন শুরু হয় যখন নগর উন্নয়ন বিভাগের অনুদানের দাবিতে আলোচনা চলছিল। এই সময় রফিক খান কংগ্রেস ও বিজেপি সরকারের শাসনের তুলনা করতে শুরু করেন, ঠিক তখনই বিজেপি বিধায়ক গোপাল শর্মা তাকে ‘পাকিস্তানী’ বলা শুরু করেন। এটা শুনে কংগ্রেস বিধায়করা তীব্র আপত্তি জানান এবং সদনে হইচই পড়ে যায়।

নেতা প্রতিপক্ষের আপত্তি এবং বিজেপি বিধায়কের ব্যাখ্যা

নেতা প্রতিপক্ষ টিকারাম জুলি এই মন্তব্যে আপত্তি জানিয়ে বিধানসভা স্পীকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। বিধানসভা স্পীকার বিজেপি বিধায়ক গোপাল শর্মাকে সতর্ক করে দেন, এরপর তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “আমি রফিক খানকে পাকিস্তানী বলি নি, কিন্তু যদি তিনি এমনটা মনে করেন, তাহলে তার মানে হল চোরের দাড়িতে তিনকা।”

শিক্ষাবিদদের প্রতিক্রিয়া

এই সম্পূর্ণ ঘটনাপ্রবাহে শিক্ষাবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেরও প্রতিক্রিয়া সামনে আসে। শিক্ষাবিদ সুনীল শর্মা তীব্র সমালোচনা করে বলেন, যদি রফিক খান ‘পাকিস্তানী’ হন, তাহলে দেশের জন্য বলিদান দেওয়া ক্যাপ্টেন হামিদ, ব্রিগেডিয়ার উসমান এবং মকবুল শেরওয়ানী কী? এই ঘটনা রাজস্থানের রাজনীতিতে আন্দোলন সৃষ্টি করেছে।

কংগ্রেস এই বক্তব্যকে মুসলমানদের অপমান বলে আখ্যায়িত করেছে, অন্যদিকে বিজেপি রক্ষণাত্মক মনোভাব প্রদর্শন করছে। এখন দেখার বিষয় হলো, এই বিষয়ে বিধানসভা স্পীকার কী ব্যবস্থা নেন এবং বিজেপি কি তাদের বিধায়কের বক্তব্যের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায় কিনা।

Leave a comment