দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর কংগ্রেস দলের মধ্যে ব্যাপক সংগঠনগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। দল পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রভারী দেবেন্দ্র যাদবকে পদচ্যুত করে তাঁর স্থলে ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে নতুন প্রভারী নিয়োগ করেছে।
চণ্ডীগড়: পঞ্জাব কংগ্রেসে ব্যাপক সংগঠনগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। দল পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রভারী দেবেন্দ্র যাদবকে পদচ্যুত করে তাঁর স্থলে ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে নতুন প্রভারী নিয়োগ করেছে। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বাদলি আসনে পরাজয়ের পর থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল কংগ্রেস পঞ্জাবে নতুন প্রভারী নিয়োগ করবে। দলের পঞ্জাব থেকে অনেক আশা ছিল, কারণ সাম্প্রতিক লোকসভা ও পৌর নির্বাচনে কংগ্রেসের পারফরম্যান্স ভাল ছিল।
এই সাথে কংগ্রেস সারা দেশে সংগঠনগত পরিবর্তন ত্বরান্বিত করেছে। দল ওড়িশা ও মহারাষ্ট্রেও তাদের রাজ্য প্রভারীদের পরিবর্তন করেছে। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস সরকার গঠন করতে পারেনি, কিন্তু পঞ্জাবের পরিস্থিতি আলাদা। লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস রাজ্য সভাপতি অমরিন্দর সিং রাজা ওয়ারিংয়ের নেতৃত্বে লড়াই করে ৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল।
কংগ্রেস সারা দেশে সংগঠনগত পরিবর্তন ত্বরান্বিত করেছে
রাজা ওয়ারিং লুধিয়ানা থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন এবং পৌর নির্বাচনে কংগ্রেসের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক ছিল। তবে, দল কোনও পৌরসভায়ই তাদের মেয়র নির্বাচিত করতে পারেনি। এই কারণে, বর্তমানে রাজ্য সভাপতিকে পরিবর্তন করার সম্ভাবনা কম। কিন্তু, রাজ্য প্রভারী পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী মনে করা হচ্ছিল। এর প্রধান কারণ হল দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর দেবেন্দ্র যাদবের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
পঞ্জাব কংগ্রেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। দলের নেতারা সর্বদা পারস্পরিক টানাপড়েনে জড়িত ছিলেন। বিরোধী দলনেতা প্রতাপ সিং বাজওয়ার রাজনীতিতেও প্রভাব অনেক। তিনি পঞ্জাবে ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন, বর্তমানে বিধায়ক এবং লোকসভা ও রাজ্যসভা উভয় সদস্যও ছিলেন। একইভাবে, রাজা ওয়ারিং তিনবার বিধায়ক, একবার মন্ত্রী এবং বর্তমানে লোকসভা সদস্য। প্রতাপ সিং বাজওয়া এবং ওয়ারিংয়ের মধ্যে সর্বদা রাজনৈতিক প্রাধান্য বিস্তারের লড়াই চলে। এই কারণে দেবেন্দ্র যাদবের কদর বাজওয়া ও ওয়ারিংয়ের তুলনায় অনেক কম ছিল, যার ফলে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের এক মঞ্চে বসানো তাঁর জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল।
এই কারণেই কংগ্রেস পঞ্জাবে ব্যাপক পরিবর্তন আনার পর ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে রাজ্য কংগ্রেসের নতুন প্রভারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভূপেশ বাঘেলের প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা আছে, যার ফলে তিনি পঞ্জাব কংগ্রেসকে নতুন দিক দিতে পারবেন। উল্লেখ্য, দেবেন্দ্র যাদব দিল্লির রাজ্য কংগ্রেস সভাপতিও ছিলেন, কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে দল একটিও আসন পায়নি। এই পরাজয় তাঁর অবস্থান আরও দুর্বল করেছে, যার ফলে তাঁর পঞ্জাব প্রভারী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া অবশ্যম্ভাবী মনে করা হচ্ছিল।
