প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ ২০২৫: সাধুদের আগমন ও প্রস্তুতি

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ ২০২৫-এর প্রস্তুতি জোরকদমে চলছে। এই বিশ্ব বিখ্যাত ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে ১৩ই জানুয়ারি থেকে। দেশভর থেকে সাধু-সন্ত, মহাত্মা এবং আখড়া প্রয়াগরাজে পৌঁছতে শুরু করেছে। মহাকুম্ভ ভারতীয় সংস্কৃতি, আস্থা এবং সনাতন ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।

আস্থা ও সংকল্পের প্রতীক ইন্দ্র গিরি মহারাজ

আহ্বান আখড়ার প্রধান সন্ত, ইন্দ্র গিরি মহারাজ, গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা থাকা সত্ত্বেও মহাকুম্ভে অংশ নিয়েছেন। অক্সিজেন সিলিন্ডারের উপর নির্ভরশীল থাকা সত্ত্বেও তাঁর উপস্থিতি ভক্ত ও সন্ত সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।
মহারাজ বলেছেন,
"মহাকুম্ভ কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি জগৎগুরু শঙ্করাচার্য দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যের প্রতীক। নাগা ফৌজি হওয়ার কারণে, ঐতিহ্য পালন করা আমাদের ধর্ম।"

তিনি তাঁর শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেছেন যে, মহাকুম্ভে অংশ নেওয়া এবং নিজের সংস্কৃতির অংশ হওয়া তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য।

শঙ্করাচার্য ঐতিহ্যের অনুসরণ

মহাকুম্ভের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য তুলে ধরে ইন্দ্র গিরি মহারাজ এটিকে ভারতীয় সংস্কৃতির মূল ভিত্তি বলেছেন।
"মহাকুম্ভ আমাদের সনাতন ঐতিহ্যের জীবন্ত উদাহরণ। এই অনুষ্ঠান আমাদের আধ্যাত্মিক দিককে শক্তিশালী করে এবং ভারতের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরে," তিনি বলেন।

আহ্বান আখড়া প্রতিটি মহাকুম্ভে তাদের ছাউনি স্থাপন করে, যেখানে খাদ্য ভান্ডার, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং আধ্যাত্মিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

জমকালো প্রবেশে বাড়ল কুম্ভনগরীর শোভা

আহ্বান আখড়ার সাধু-সন্ত এবং নাগা সাধুরা তিন দিন আগে পুরো সমারোহের সাথে প্রয়াগরাজে পৌঁছেছেন। ঘোড়া, উট, ঐতিহ্যবাহী পোশাক এবং বাদ্যযন্ত্রের সাথে এই প্রবেশ কুম্ভনগরীর জাঁকজমক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ভক্তদের জন্য এই দৃশ্য ভক্তি ও আনন্দে পরিপূর্ণ ছিল।
আখড়ার শিবির, খাদ্য ভান্ডার এবং ধর্মীয় কার্যক্রম ভক্তদের আকর্ষণ করছে।

সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি

উত্তর প্রদেশ সরকার মহাকুম্ভ ২০২৫-কে আরও দিব্য ও জাঁকজমকপূর্ণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ স্বয়ং ব্যবস্থাপনার তত্ত্বাবধান করছেন। প্রয়াগরাজকে সনাতন ঐতিহ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে সাজানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন,
"এই বছর ৪০ কোটির বেশি ভক্তের সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসন সব স্তরে প্রস্তুত।"

আস্থা ও সংস্কৃতির এক অনন্য মিলন

মহাকুম্ভ ২০২৫-এ সন্ত, আখড়া এবং ভক্তদের আগমন প্রয়াগরাজকে এক জীবন্ত তীর্থে পরিণত করছে। ইন্দ্র গিরি মহারাজের মতো সন্তরা, কঠিন পরিস্থিতিতেও এই অনুষ্ঠানের অংশ হয়ে এর পবিত্রতা ও তাৎপর্য বৃদ্ধি করছেন।
মহাকুম্ভ কেবল ধর্ম ও আস্থার প্রতীক নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ ও প্রচার করার সবচেয়ে বড় মাধ্যম। এই অনুষ্ঠান প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য গর্ব ও সম্মানের বিষয়।

```

Leave a comment