অপারেশন সিন্দুরের পর কূটনৈতিক উদ্যোগ: ৩৩ দেশে ভারতের বার্তা

🎧 Listen in Audio
0:00

অপারেশন সিন্দুরের পর সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল ৩৩টি দেশে ভারতের বার্তা নিয়ে ফিরে এল। প্রধানমন্ত্রী মোদী আজ রাতের খাবারে এই সাংসদদের সঙ্গে দেখা করে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নেবেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভা: জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগামে পর্যটকদের উপর হওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত কেবল সামরিক স্তরে নয়, কূটনৈতিক স্তরেও পাকিস্তানকে ঘিরে ফেলার জন্য বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এই হামলার জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর অধীনে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) এবং পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত নয়টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এরপর ভারত সরকার সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী কূটনৈতিক কৌশলকে আরও শক্তিশালী করে একটি বহুমুখী অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানের অধীনে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের নেতাদের সাতটি সর্বদলীয় দল বিশ্বের ৩৩টি দেশে পাঠানো হয়েছিল।

অপারেশন সিন্দুরের পর কূটনৈতিক উদ্যোগ

অপারেশন সিন্দুর কেবলমাত্র সামরিক অভিযান ছিল না, বরং এটি ভারতের ব্যাপক কৌশলগত অংশ ছিল, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানকে উন্মোচন করাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। অপারেশনের অবিলম্বে পর সরকার নিশ্চিত করেছে যে বিশ্বের প্রধান দেশগুলিকে ভারতের অবস্থান স্পষ্টভাবে বলা হবে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমর্থন সংগ্রহ করা হবে।

সাতটি দল, ৩৩টি দেশ, ব্যাপক অভিযান

সরকার সাতটি দল গঠন করেছে, যার মধ্যে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল উভয়েরই জ্যেষ্ঠ সাংসদরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এই দলগুলি ইউরোপ, আমেরিকা, উপসাগরীয় দেশ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার প্রধান রাজধানীগুলিতে সফর করেছে। এই সফরগুলির উদ্দেশ্য ছিল কেবল ভারতের কথা বলা নয়, বরং ভারতের চিত্রকে একটি সিদ্ধান্তমূলক এবং নির্ণায়ক ব্যবস্থা গ্রহণকারী রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বব্যাপী মঞ্চে উপস্থাপন করা।

প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিক্রিয়া নেবেন, সাংসদদের রাতের খাবারে ডেকেছেন

এখন যেহেতু ছয়টি দল ফিরে এসেছে এবং সপ্তম দল (শশী থরুরের নেতৃত্বে) ১০ জুন ফিরছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রতিনিধিদলগুলিকে তাঁর বাসভবনে রাতের খাবারে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই সভা ১০ জুন সন্ধ্যা ৭.৩০ টায় নির্ধারিত, যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদী সকল সাংসদদের তাদের বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতা এবং প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেবেন।

ক্ষমতাসীন ও বিরোধী এক মঞ্চে

এই বিশেষ অভিযানের সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল এতে ক্ষমতাসীন দলের পাশাপাশি বিরোধী দলগুলিরও অংশগ্রহণ ছিল। এনডিএ-র পক্ষ থেকে বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ, বৈজয়ন্ত জয় পান্ডা, জেডিইউ-র সংজয় কুমার ঝা এবং শিবসেনা (শিন্দে গোষ্ঠী)-র শ্রীকান্ত শিন্দে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অন্যদিকে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের শশী থরুর, ডিএমকে-র কনিমোঝি এবং এনসিপি (এসপি)-র সুপ্রিয়া সুলে তাদের নিজ নিজ দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই উদ্যোগ রাজনৈতিক সমন্বয় এবং জাতীয় স্বার্থের জন্য ঐক্যের এক উদাহরণ।

বিদেশমন্ত্রী তথ্য সংগ্রহ করেছেন

বিদেশ থেকে ফিরে রবিশঙ্কর প্রসাদ, কনিমোঝি, সুপ্রিয়া সুলে এবং অন্যান্য নেতারা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করে তাদের সফরের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। এই তথ্য কেবল ভারতের কৌশল মূল্যায়নের জন্যই নয়, এটি এটাও জানায় যে কোন কোন দেশে ভারতের প্রচেষ্টাকে কেমন প্রতিক্রিয়া মিলেছে।

শশী থরুরের দলের প্রত্যাবর্তন

আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশ সফরে যাওয়া শশী থরুরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল ১০ জুন দুপুরে ফিরে আসবে। এরপর তারাও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করবে এবং তাদের সফরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবে।

Leave a comment