মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা কেন্দ্র সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছেন যে, জম্মু-কাশ্মীরের জল প্রথমে রাজ্যবাসীর জন্যই থাকবে। তিনি পাঞ্জাব ও রাজস্থানকে জল দেওয়ার প্রস্তাবেও আপত্তি জানিয়েছেন।
জম্মু কাশ্মীর সংবাদ: মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা কেন্দ্র সরকারের সেই প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাতে জম্মু-কাশ্মীরের জল পাঞ্জাব ও রাজস্থানে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যখন রাজ্যের মানুষ জলের সংকটে ভুগছে, তখন তিনি এতে অনুমতি দেবেন না। চিনাব নদীর জল প্রথমে স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করা হবে।
স্থানীয় চাহিদা প্রথম, বহিরাগত রাজ্য পরে
জম্মুতে মিডিয়ার সাথে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, তিনি কেন্দ্র সরকারের সেই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না যাতে জম্মু-কাশ্মীরের জল সম্পদ বহিরাগত রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেছেন যে, জম্মু খরা-সদৃশ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। মানুষ নলের জলের জন্য অপেক্ষা করছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি অন্য কোনও রাজ্যে জল পাঠানোর পক্ষে নন।
'পাঞ্জাব আমাদের জলের জন্য তৃষ্ণার্ত করেছে'
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা পাঞ্জাবের উপর অভিযোগ করে বলেছেন যে, যখন উজ্জ মাল্টিপারপাস প্রকল্পের কাজ চলছিল, তখন পাঞ্জাব সহযোগিতা করেনি। শাহপুর কান্ডি ব্যারাজ নিয়েও তারা বছরের পর বছর ধরে আমাদের হয়রানি করেছে। তিনি বলেন যে, যখন রাজ্যের নাগরিকরা জলের জন্য সংগ্রাম করছিল, তখন পাঞ্জাব কোনও সাহায্য করেনি। তাই এখন যখন জম্মু-কাশ্মীরকে নিজের জল সম্পদের প্রয়োজন, তখন তার ব্যবহার প্রথমে স্থানীয় পর্যায়ে করা হবে।
দুটি বৃহৎ প্রকল্পের কাজ চলছে
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উপর কাজ করছে। প্রথমত, তুলবুল নেভিগেশন ব্যারাজ, যার মাধ্যমে চিনাবের জল নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। দ্বিতীয়ত, অখনুর থেকে জম্মু শহরে জল পাম্প করার প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে জল সংকটে ভুগছে এমন এলাকায় সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সংরক্ষণ নিয়েও বলেছেন ওমর আব্দুল্লা
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা সংরক্ষণের বিষয় নিয়েও বিরোধী দলগুলির, বিশেষ করে পিডিপি ও সাজ্জাদ লোনকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, যখন মেহবুবা মুফতিকে ভোটের প্রয়োজন ছিল, তখন তারা সংরক্ষণের বিষয় নিয়ে নীরব ছিলেন। আজ যখন রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাচ্ছে, তখন তারা এতে সহানুভূতি দেখাচ্ছেন।
তিনি আরও যোগ করেছেন যে, সেই সময় পিডিপি নেতাদের এই বিষয়ে কথা বলা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। তিনি বলেছেন যে, তাঁর কাছে সেই সময়ের টুইটের রেকর্ড রয়েছে, যা থেকে স্পষ্ট হয় যে সংরক্ষণের মতো সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে কে কী ভূমিকা পালন করেছিল।
সাজ্জাদ লোনের উপর সরাসরি আক্রমণ
সাজ্জাদ লোনের সম্পর্কে ওমর আব্দুল্লা বলেছেন যে, যখন রাজ্যে অস্থিরতা ছিল এবং বিরোধীদের সরকারি বাসস্থান থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছিল, তখন সাজ্জাদ লোন সরকারি সুবিধায় আরামে বসে ছিলেন। তিনি আরও বলেছেন যে, যদি তাঁর সংরক্ষণ বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে এতই উদ্বেগ থাকত, তাহলে সেই সময় কেন কথা বলেননি।
মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করে বলেছেন যে, যদি তাঁকে সময় নষ্ট করতে হতো, তাহলে তিনি উপ-কমিটিকে আরও ছয় মাস দিতেন। এটি থেকে স্পষ্ট হয় যে তিনি শুধুমাত্র দেখানোর জন্য কাজ করতে চান না, বরং বাস্তবসম্মত ফলাফল চান।
বিমান দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়া
আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওমর আব্দুল্লা বলেছেন যে, বিমানের নিরাপত্তা রাজ্য সরকারের অধীনে নয়। এটির দায়িত্ব সিভিল এভিয়েশন, DGCA এবং ভারত সরকারের। তিনি বলেছেন যে, তিনিও সাধারণ নাগরিকদের মতোই একই বিমানে ভ্রমণ করেন। তিনি দুর্ঘটনার পুরো তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।
