নুহের ২২ বছর বয়সী আরমানকে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মোবাইল ও সিম থেকে দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস হওয়ার তদন্ত চলছে।
হরিয়ানা নিউজ: হরিয়ানার নুহ জেলার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ২২ বছর বয়সী যুবক আরমান রাজাকাকে পাকিস্তানের পক্ষে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং এখন তার মোবাইল ও সিম কার্ডের তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আরমান পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তা দানিশের সাথে যোগাযোগে ছিল। পুলিশের আশঙ্কা, সে দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানে পৌঁছে দিচ্ছিল।
আরমানের গ্রেফতার এবং প্রাথমিক তদন্ত
পুলিশ শুক্রবার আরমানকে গ্রেফতার করে এবং তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন এবং তার সাথে ব্যবহৃত সিম কার্ড উদ্ধার করে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এগুলিকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে যাতে জানা যায় আরমান কার সাথে যোগাযোগ করেছিল এবং কী ধরণের তথ্য ভাগ করে নিয়েছিল।
নুহ জেলার রাজাক গ্রামের বাসিন্দা আরমান কিছুদিন ধরে পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তা দানিশের সাথে যোগাযোগে ছিল। সংস্থাগুলির সন্দেহ, সে কেবলমাত্র গোপনীয় তথ্যই ভাগ করে নয়, পাকিস্তানে তার আত্মীয়দের সিম কার্ডও সরবরাহ করেছে, যা ভারত বিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অপারেশন সিন্দুরের পর সতর্ক হয়েছে সংস্থাগুলি
অপারেশন সিন্দুরের পর গোয়েন্দা সংস্থাগুলি পাকিস্তান থেকে আসা প্রতিটি কল এবং কার্যকলাপের উপর কঠোর নজরদারি শুরু করে। এই সময় আরমানের নম্বর সংস্থাগুলির রাডারে আসে। তদন্তে জানা যায়, সে দানিশের সাথে কথা বলছিল এবং পাকিস্তানের কিছু নম্বরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগে ছিল।
সূত্রের খবর, আরমান পাকিস্তানের লোকদের সাথে WhatsApp কল, সাধারণ মোবাইল কল এবং ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে কথা বলেছিল। এছাড়াও সে নিজে পাকিস্তান ভ্রমণের সময় তার আত্মীয়দের সিম কার্ড সরবরাহ করেছিল।
পাকিস্তানে আত্মীয়স্বজন আছে, আগেও ভ্রমণ করেছে
জানা গেছে আরমানের বাবা জামিলের দুই খালা পাকিস্তানে থাকে এবং তাদের সাথে দেখা করার জন্য আরমান দুইবার পাকিস্তান গেছে। প্রায় ছয় মাস আগেও সে পাকিস্তানে ছিল। এছাড়াও সম্প্রতি সে দুবাই গেছে, যেখানে সে একটি ক্রিকেট ম্যাচ দেখেছে।
আরমানের পরিবারের পটভূমিও সন্দেহের আওতায়। তার বাবা জামিল বর্তমানে ছত্তীসগড়ের কবিরধাম জেলে বন্দি। তার উপর গাড়ি চুরিতে জড়িত যুবকদের সাথে সম্পর্ক রাখার এবং গাড়ি সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে।
ভাইয়ের উপর মনরেগা দুর্নীতির অভিযোগ
আরমানের ছয় ভাই রয়েছে, যার মধ্যে বড় ভাই আলতাফ প্রাক্তন সরপঞ্চ ছিলেন। আলতাফের উপর মনরেগায় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এবং এর কারণে তিনি জেলেও গেছেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত।
এই পারিবারিক পটভূমি এবং পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক আরমানের কর্মকাণ্ডের উপর গভীর সন্দেহ সৃষ্টি করে। তদন্তকারী সংস্থাগুলির ধারণা, আরমানের মোবাইল ও সিম থেকে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়া যেতে পারে, যা আগামীতে দেশের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
পুলিশের বক্তব্য এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
নুহের পুলিশ অধীক্ষক অজয়ব সিংহ জানিয়েছেন, আরমানের উপর দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এবং তার রিমান্ড নেওয়া হয়েছে। মোবাইলের কল ডিটেল এবং ভাগ করা তথ্যের গভীর তদন্ত চলছে।
আরমানকে শনিবার ফিরোজপুর झिरका-র আদালতে হাজির করা হয়েছিল, যেখান থেকে তাকে ছয় দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। এই সময় তার সাথে ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হবে এবং তার নেটওয়ার্ক খুঁড়ে বের করা হবে।