লোকসভা এবং অনেকগুলি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়ের পর ইন্ডিয়া জোটের অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে, জোটের নেতৃত্ব নিয়ে সময় সময় পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। এবার এই বিষয়ে আরও একটি বড় বক্তব্য সামনে এসেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কীর্তি আজাদ আশ্বস্ত করেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া ব্লকের অধ্যক্ষা হতে পারেন।
নয়াদিল্লি: তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কীর্তি আজাদ এক বড় বক্তব্য দিয়ে বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় I.N.D.I.A ব্লকের অধ্যক্ষা হবেন। তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের নেতৃত্ব দেবেন এবং পশ্চিমবঙ্গে যারা তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন লড়তে আসবে, তাদের পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হবে। কীর্তি আজাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক দক্ষতা এবং নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, আগামী সময়ে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
এইসাথে, তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবতের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়াও দিয়েছেন। ভাগবত হিন্দু সমাজের ভূমিকা নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার জবাবে কীর্তি আজাদ বলেছেন যে, আরএসএস এবং বিজেপির কাছে শুধুমাত্র বাক্যবাজি আছে। তাঁর অভিযোগ, এই সংগঠনগুলি মানুষকে বিভ্রান্ত করার কাজ করে, প্রকৃত উন্নয়নের দিকে কাজ করে না।
কীর্তি আজাদ আরএসএস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন
কীর্তি আজাদ আরএসএস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, আরএসএস-এর লোকেরা শুরু থেকেই ইংরেজদের সাথে ছিল এবং দেশভাগে তাদের ভূমিকা ছিল। তিনি আরও বলেন, এই তথ্য পুরো বিশ্ব জানে। আজাদের মতে, আরএসএস এবং বিজেপি ধর্মের নামে মানুষকে একত্রিত করার চেষ্টা করে, কিন্তু যখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হয় যে এই সংগঠনগুলি আসলে দেশের জন্য কী করেছে, তখন তাদের কাছে শুধুমাত্র বাক্যবাজি থাকে।
তাঁর এই বক্তব্য বিজেপি এবং আরএসএস-এর নীতি এবং তাদের প্রচারের উপর সরাসরি আক্রমণ ছিল। কীর্তি আজাদ আরও বলেন, এই সংগঠনগুলির আসল উদ্দেশ্য হল মানুষকে বিভ্রান্ত করা, দেশের প্রকৃত উন্নয়নের দিকে কাজ করা নয়। এই ধরণের বক্তব্য রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র করতে পারে, বিশেষ করে যখন এই অভিযোগ সংঘ পরিবারের বিরুদ্ধে করা হয়।
মোহন ভাগবত তাঁর বক্তব্যে কী বলেছিলেন?
মোহন ভাগবতের বক্তব্য হিন্দু সমাজের বৈচিত্র্য এবং ঐক্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যেখানে তিনি সংঘের উদ্দেশ্য এবং ভারতের প্রকৃতি স্পষ্ট করেছেন। ভাগবত হিন্দু সমাজকে একত্রিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন এবং এর পিছনে যুক্তি ছিল যে হিন্দু সমাজ এই দেশের দায়িত্ব বহন করে। তিনি আরও বলেছেন যে, ভারতের স্বভাব, যা বৈচিত্র্যকে স্বীকার করে এবং সমন্বয়ের भावনার উপর ভিত্তি করে, প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে এবং এটি ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের চেয়েও পুরোনো।
ভাগবত পাকিস্তান গঠনের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে, যারা ভারতীয় স্বভাব বুঝতে পারেনি, তারা নিজেদের পৃথক দেশ তৈরি করেছে, আর যারা এখানে থেকে গেছে, তারা ভারতীয় সংস্কৃতি এবং তার বৈচিত্র্যকে মান্য করে। এই বক্তব্য হিন্দু সমাজের ঐক্য এবং বৈচিত্র্যের স্বীকৃতির গুরুত্বকে তুলে ধরে।
তাঁর কথাবার্তা থেকে এটিও স্পষ্ট হয়েছে যে, সংঘের উদ্দেশ্য কেবল হিন্দু সমাজকে একত্রিত করা নয়, বরং তাকে সেই প্রাচীন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গির দিকে নিয়ে যাওয়া, যা ভারত শতাব্দী ধরে গ্রহণ করে এসেছে। এই মতবাদ অনুযায়ী হিন্দু সমাজের শক্তি এবং বৈচিত্র্যকে একত্রিত করা যাবে।