মোদীর গুজরাট সফর: ৯০০০ HP লোকোমোটিভ উৎসর্গ ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচী

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর প্রথমবারের জন্য নিজের জন্মভূমি গুজরাট ভ্রমণে আসছেন। ২৬ ও ২৭ মে তিনি গান্ধীনগর, কচ্ছ ও দাহোদ জেলায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। মোদীজী দাহোদে দেশের জন্য ৯০০০ হর্সপাওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম লোকোমোটিভ ইঞ্জিন উৎসর্গ করবেন।

গান্ধীনগর: ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথমবারের জন্য নিজের জন্মভূমি গুজরাট ভ্রমণে আসছেন। তিনি ২৬ ও ২৭ মে গান্ধীনগর, কচ্ছ ও দাহোদ জেলায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী ভুজের মিরজাপুর রোডে জনসভায় বক্তৃতা দেবেন এবং এর পরে মাতানো মढ আশাপুরা মন্দির দর্শন করবেন।

বিশেষত, ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেলওয়ে প্রোডাকশন ইউনিটে তৈরি ৯০০০ এইচপি ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের উদ্বোধনও প্রধানমন্ত্রী মোদী করবেন।

দাহোদে রেলওয়ে উৎপাদনের নতুন যুগ

দাহোদের এই রেল কারখানা পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলের উপর তৈরি হয়েছে। এই ইউনিটে আগামী ১০ বছরে প্রায় ১২০০ লোকোমোটিভ ইঞ্জিন উৎপাদন করা হবে। এই ইঞ্জিনগুলি কেবলমাত্র দেশজুড়ে ব্যবহার করা হবে না, ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানি করা হবে। এটি সম্পূর্ণ ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের অধীনে তৈরি করা হবে, যা ভারতের প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরতা প্রতিফলিত করে।

৯০০০ এইচপি ক্ষমতাসম্পন্ন এই লোকোমোটিভ ইঞ্জিন ৬ এক্সেলযুক্ত এবং ৪৬০০ টন পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন টানতে সক্ষম। এই ইঞ্জিনের একটি বিশেষত্ব হল এতে প্রথমবারের জন্য চালক দলের জন্য এসি কেবিন এবং টয়লেটের সুবিধাও রয়েছে। পাশাপাশি, দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করার জন্য কভার সিস্টেমও আগে থেকেই লাগানো হয়েছে, যা নিরাপত্তা আরও বাড়ায়। এই লোকোমোটিভের গড় গতি ৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।

স্থানীয় অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে উন্নয়ন

এই প্রকল্প দাহোদ এবং এর আশেপাশের এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই কারখানা থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০,০০০ জনকে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। পাশাপাশি, এই ইউনিট তৈরি এবং পরিচালনার জন্য অনেক ছোটো ছোটো শিল্প, বিশেষ করে পাওয়ার এবং ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের কোম্পানিগুলিকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার সরবরাহের সুযোগ পাবে। এইভাবে এটি কেবল নতুন কর্মসংস্থানের দ্বার উন্মোচন করবে না, স্থানীয় অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করবে।

দাহোদে নির্মিত লোকোমোটিভ ইঞ্জিনগুলির রক্ষণাবেক্ষণও দেশের বিভিন্ন স্থানে করা হবে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের খড়্গপুর, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম, ছত্তিসগড়ের রায়পুর এবং মহারাষ্ট্রের পুনে প্রধান কেন্দ্র হবে। এর ফলে দেশজুড়ে রেল নেটওয়ার্কের পরিচালনায় উন্নতি হবে এবং ইঞ্জিনগুলির নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভ্রমণের গুরুত্ব

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই গুজরাট ভ্রমণ কেবলমাত্র আঞ্চলিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নয়, ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ মিশনকেও শক্তিশালী করবে। ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর প্রথমবার মোদীজীর জন্মভূমি আগমনে সেখানকার নাগরিকদের মধ্যে উৎসাহের পরিবেশ বিরাজ করছে। মোদীজী কচ্ছের জনসভার পরে মাতানো মढ আশাপুরা মন্দিরের দর্শনও করবেন, যা তাঁর জন্য আধ্যাত্মিক ও মানসিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a comment