গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে গ্রেফতার ইউটিউবার জ্যোতি মল্লহোত্রার হেফাজত ২৩ জুন পর্যন্ত বর্ধিত

🎧 Listen in Audio
0:00

গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে গ্রেফতার ইউটিউবার জ্যোতি মল্লহোত্রার ন্যায়িক হেফাজত ২৩ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পাকিস্তান সংযোগ ও আইএসআই লিঙ্কের তদন্ত তীব্রতর।

নয়াদিল্লি। গোয়েন্দাগিরির গুরুতর অভিযোগে গ্রেফতার ইউটিউবার জ্যোতি মল্লহোত্রার ন্যায়িক হেফাজত আদালত আরও ১৪ দিনের জন্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন পরবর্তী শুনানি ২৩ জুন নির্ধারিত হয়েছে।

এই ঘটনায় জ্যোতির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি (বিএনএস) ধারা ১৫২ এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩-এর ধারা ৩, ৪ এবং ৫ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ধারাগুলির আওতায় দেশের নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত সংবেদনশীল তথ্য ভাগ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তদন্তকারী সংস্থাগুলির দাবি, জ্যোতি ভারতের কৌশলগত স্বার্থের সাথে সম্পর্কিত তথ্য পাকিস্তানি সংস্পর্কের সাথে ভাগ করেছে।

পাকিস্তানের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ

তদন্তে উঠে এসেছে যে, জ্যোতি মল্লহোত্রা পাকিস্তান পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টর নাসির ধিল্লোর সাথে যোগাযোগে ছিলেন। নাসির নিজেও একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন এবং তার ভারতের কিছু ইউটিউবারদের সাথে যোগাযোগ ছিল। সংস্থাগুলি সন্দেহ করে যে, নাসির আইএসআই এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ইশারায় ভারতীয় ইউটিউবারদের সাথে বন্ধুত্ব করতেন এবং তাদের কাছ থেকে গোপন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করতেন।

সংস্থাগুলির মতে, নাসির পাকিস্তানে জ্যোতির সাথে দেখা করেছিলেন এবং তাদের মধ্যে বারবার ভিডিও কল এবং অনলাইন আলাপচারিতা হয়েছিল। তারা একসাথে একটি পডকাস্টও করেছিল, যা ইউটিউবে উপলব্ধ। এই ভিত্তিতে তদন্তকারী সংস্থাগুলি জ্যোতির সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপের উপর নজরদারি শুরু করে এবং গোয়েন্দাগিরির সাথে সম্পর্কিত প্রমাণ সংগ্রহ করে।

সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপের উপর নজরদারি

জ্যোতি মল্লহোত্রার ইউটিউব চ্যানেল 'Travel with Jo' বেশ জনপ্রিয়, যার ৩.৭৭ লক্ষের বেশি সাবস্ক্রাইবার আছে। অন্যদিকে, ইনস্টাগ্রামেও তার ১.৩২ লক্ষ ফলোয়ার আছে। তিনি সম্প্রতি ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন এবং পাকিস্তান ভ্রমণ করেছেন। বিশেষ করে পাকিস্তান ভ্রমণের ভিডিও দুই মাস আগে পোস্ট করা হয়েছিল, যা তদন্তকারী সংস্থাগুলির জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।

এই ভ্রমণের সময় জ্যোতি কাদের সাথে দেখা করেছেন, কোন তথ্য ভাগ করেছেন এবং এর সাথে কি জাতীয় নিরাপত্তার কোন সম্পর্ক আছে—এই প্রশ্নগুলির তদন্ত এখনও চলছে।

ইউটিউবারদের উপর নিরাপত্তা সংস্থাগুলির ক্রমবর্ধমান নজর

এই ঘটনা কেবলমাত্র একজন ইউটিউবার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। গত কয়েক বছরে দেখা গেছে যে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বহিরাগতরা দেশের নাগরিকদের, বিশেষ করে প্রভাবশালী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে যোগাযোগ করছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এখন ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কার্যকলাপের উপর নজর রাখছে, বিশেষ করে যখন তারা বিদেশ ভ্রমণ করে অথবা কোন বিতর্কিত অঞ্চলের সাথে সম্পর্কিত কন্টেন্ট আপলোড করে।

পডকাস্টে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উন্মোচন

তদন্তকারী সংস্থাগুলি নাসির ধিল্লোর বিরুদ্ধে অনেক প্রমাণ পেয়েছে। একটি পডকাস্টে যখন তাকে আইএসআই এজেন্ট হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি হেসে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভারতে কিছু ইউটিউবারদের সাথে তার সম্পর্ক এবং তাদের মাধ্যমে कथিত গোয়েন্দা কার্যকলাপের পরিকল্পনা সংস্থাগুলির রেকর্ডে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

Leave a comment