জয়শঙ্করের কঠোর বার্তা: পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অব্যাহত

🎧 Listen in Audio
0:00

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন যে ভারত সন্ত্রাসবাদের অবসান চায়। পাকিস্তানে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদীদের উপর ভারত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করবে। অপারেশন সিন্দুর এখনও চলছে এবং পাকিস্তান এর সম্পূর্ণ জ্ঞান রাখে।

এস জয়শঙ্করের বার্তা: ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে কঠোর ও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে যদি পাকিস্তান থেকে আবার কোন সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়, তাহলে ভারত সন্ত্রাসবাদীদের উপর ঠিক সেখানেই হামলা করবে যেখানে তারা অবস্থান করছে – পাকিস্তানের বৃহৎ শহর হলেও তাতে কোন ব্যতিক্রম নেই। নেদারল্যান্ডস সফরকালীন একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ বক্তব্য দেন।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের স্পষ্ট অবস্থান

এস জয়শঙ্কর বলেছেন যে ভারত সন্ত্রাসবাদের “নিশ্চিত অবসান” চায়। তিনি আরও জানিয়েছেন যে পাকিস্তানে অনেক সন্ত্রাসবাদী উন্মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যারা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে, দেশের বৃহৎ শহরগুলিতে সক্রিয় এবং সরকার ও সেনাবাহিনীর সমর্থন পাচ্ছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে যদি পাকিস্তান মনে করে যে তারা জানে না তাদের দেশে কী ঘটছে, তাহলে তা একটা ভ্রান্ত ধারণা। ভারত সন্ত্রাসবাদীদের অবস্থান, তাদের কার্যকলাপ এবং পারস্পরিক যোগাযোগ সম্পর্কে সব জানে।

অপারেশন সিন্দুর কেন এখনও শেষ হয়নি

জয়শঙ্কর জানিয়েছেন যে অপারেশন সিন্দুর এখনও চলছে, কারণ এটি কেবলমাত্র প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নয়, বরং একটি স্পষ্ট বার্তাও। তিনি বলেছেন যে যদি ২২ এপ্রিলের মতো সন্ত্রাসবাদী হামলা আবার ঘটে, তাহলে ভারত আবার সন্ত্রাসবাদীদের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করবে।

“আমরা ঠিক সেখানেই আঘাত করবো, যেখানে তারা আছে,” – এস জয়শঙ্কর

২২ এপ্রিলের পাহলগাম হামলা এবং ভারতের প্রতিক্রিয়া

২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর, ভারত ৬ ও ৭ মে মধ্যরাতে অপারেশন সিন্দুরের অধীনে পাকিস্তানে নয়টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি লক্ষ্য করে নির্ভুল হামলা চালায়।

এই হামলার পর পাকিস্তান ৮, ৯ ও ১০ মে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনী তার কঠোর জবাব দেয়।

যুদ্ধবিরতির উপর ভারত-পাকিস্তানের সম্মতি কীভাবে হল?

বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি ১০ মে ঘোষণা করেন যে ভারত ও পাকিস্তান স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সকল ধরণের সামরিক কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

এস জয়শঙ্কর এই কথা নিশ্চিত করেছেন যে এই সম্মতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে হয়েছে, আমেরিকার মতো কোন তৃতীয় দেশের মধ্যস্থতায় নয়। যদিও আমেরিকা বলেছে যে তারা যুদ্ধবিরতিতে ভূমিকা পালন করেছে, কিন্তু ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে আলোচনা সরাসরি দুই দেশের মধ্যেই হয়েছে।

আমেরিকার সাথে আলোচনার তথ্য প্রকাশ

জয়শঙ্কর সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ছিল, তখন অনেক দেশ ভারতের সাথে যোগাযোগ করে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে। কিন্তু ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য পাকিস্তানকে সরাসরি ভারতের সাথে কথা বলা উচিত।

“যদি পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধ করতে চায় তাহলে তাদের আমাদের জানাতে হবে… এবং তারাই তাই করেছে।” – এস জয়শঙ্কর

পাকিস্তানকে বুঝতে হবে – ফলাফল ভোগ করতে হবে

বিদেশমন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন যে যদি পাকিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ অব্যাহত থাকে তাহলে তার গুরুতর পরিণাম হবে। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী নয়, বরং একটি সতর্কবার্তা।

“আমরা সন্ত্রাসবাদের নিশ্চিত অবসান চাই। যদি আবার এমন হামলা হয়, তাহলে আমরা আবার হামলা করবো।” – এস জয়শঙ্কর

পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ক

জয়শঙ্করের মতে পাকিস্তানে অনেক সন্ত্রাসবাদী উন্মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সেখানকার সরকার ও সেনাবাহিনী তাদের আশ্রয় দিচ্ছে। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “তাদের ঠিকানা জানা আছে। তাদের কার্যকলাপ ও যোগাযোগ নেটওয়ার্কও জানা আছে।”

এই থেকে স্পষ্ট যে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির গভীর জ্ঞান রাখে এবং তার নিরাপত্তা নীতি তাই অনুযায়ী তৈরি করেছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভারতের বার্তা

ভারত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে এখন ভারত শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক থাকবে না। যদি ভারতের উপর হামলা হয় তাহলে প্রতিক্রিয়া সীমিত থাকবে না। জয়শঙ্করের মতে ভারত এখন proactive strategy গ্রহণ করবে – অর্থাৎ হামলা হবে ঠিক সেখানেই যেখান থেকে বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে।

Leave a comment