রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে এক অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা এবং একজন জ্যেষ্ঠ আইএএস কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ইমেইলের মাধ্যমে পাঠানো এই হুমকিপূর্ণ বার্তা রাজ্যের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরেছে।
জয়পুর: রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে এক চাঞ্চল্যকর সংবাদ সামনে এসেছে, যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা এবং একজন জ্যেষ্ঠ আইএএস কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই হুমকি ইমেইলের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা আছে, "ভজনলালকে কেটে ফেলব," এবং আইএএস কর্মকর্তার ব্যাপারে বলা হয়েছে, "টুকরো টুকরো করে স্যুটকেসে ভরে রাখব।" এই হুমকি রাজ্যের সুরক্ষা ব্যবস্থার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরেছে এবং পুলিশ ও সুরক্ষা সংস্থাগুলি গুরুত্বের সাথে ঘটনার তদন্ত করছে।
ইমেইলের মাধ্যমে পাওয়া হুমকি, ভাষা ছিল ভয়াবহ
জয়পুর সচিবালয়ে বুধবার সকালে কর্মকর্তারা যখন পৌঁছালেন, তখন মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি ইমেইল দেখে সকলের হতভম্ব হয়ে যায়। ইমেইলে মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মাকে অত্যন্ত অশ্লীল ভাষায় হুমকি দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, একজন জ্যেষ্ঠ আইএএস কর্মকর্তাকেও, যার নাম গোপন রাখা হয়েছে, হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সূত্রের মতে, ইমেইলের ভাষা কেবলমাত্র হিংস্র ছিল না, বরং এটি স্পষ্ট ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল যে এটি শুধুমাত্র ভয় দেখানোর জন্য নয়, বরং কোন বড় ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। ইমেইলে এটাও লেখা ছিল যে "এবার কাউকে ক্ষমা করা হবে না। সিস্টেমে যারা উপরে বসে আছে, তাদের শেষটা নিকটবর্তী।"
এটিএস এবং সাইবার সেল কাজে লেগেছে
হুমকির কথা জানতে পারার সাথে সাথেই রাজস্থান পুলিশের বিশেষ দল, এটিএস এবং সাইবার সেল অবিলম্বে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ইমেইল প্রেরণকারীর পরিচয় এবং অবস্থান খুঁজে বের করার চেষ্টা তীব্রতর করা হয়েছে। রাজস্থান পুলিশের ডিজিপি উমেশ মিশ্রা মিডিয়াকে জানিয়েছেন, "আমরা এটিকে কেবল হুমকি হিসেবেই দেখছি না, বরং একটি গুরুতর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র হিসেবে তদন্ত করছি। সকল সুরক্ষা সংস্থা এই দিকে কাজ করছে।"
মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় কী বলেছে?
মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে "মুখ্যমন্ত্রীকে ভয় দেখানো বা হুমকি দেওয়ার যেকোনো চেষ্টা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর আক্রমণ। মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ নিরাপদে আছেন, এবং তাঁর সুরক্ষা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে।" মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মাও এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা কোনো হুমকিতে ভয় পাই না। জনগণের সেবা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তা পালন করে যাব। যারা এটা করেছে, আইন তাদের ক্ষমা করবে না।
সুরক্ষা ব্যবস্থা কঠোর, সচিবালয়ে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন
ঘটনার পর সচিবালয় চত্বর এবং মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সুরক্ষার জন্য এনএসজি এবং এসপিজি-র মতো ইউনিট থেকেও সাহায্য চাওয়া হয়েছে। সচিবালয়ে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশের উপর বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং কেবলমাত্র বিশেষ পরিচয়পত্রধারী কর্মীদেরকেই ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
ষড়যন্ত্রের পিছনে কী উদ্দেশ্য?
সূত্রের দাবি, ইমেইলটি কোনো ভুয়া বা বান্স অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো হয়েছে, যা বিদেশ থেকেও অ্যাক্সেস করা যায়। তবে, কিছু সাইবার বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে এই ইমেইলটি কোনো রাজনৈতিক অনুভূতি বা চরমপন্থী সংগঠনের পক্ষ থেকেও পাঠানো হতে পারে। এখন তদন্তের দিক এদিকে ঘুরেছে যে এটি কোনো একাকী মানসিকভাবে অস্থির ব্যক্তি ছিল নাকি কোনো সংগঠিত নেটওয়ার্কের অংশ।
এদিকে, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছে যে মুখ্যমন্ত্রী এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সুরক্ষাই যদি বিপদে থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপদ থাকবে? এর জবাবে বিজেপি মুখপাত্র বলেছেন, "এই সময়ে রাজনীতি করার পরিবর্তে বিরোধীদের রাজ্যের ঐক্যের সাথে দাঁড়ানো উচিত।"