হিসারের ইউটিউবারের বিরুদ্ধে আইএসআই যোগের অভিযোগ

🎧 Listen in Audio
0:00

হিসারের ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রার উপর আইএসআই-এর সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। দিল্লিতে দানিশের সাথে দেখা করার পর তিনি পাকিস্তান গিয়ে গোপন সংস্থার এজেন্টদের সাথে যোগাযোগ করেন।

জ্যোতি মলহোত্রা: হরিয়ানার হিসার থেকে গ্রেফতার হওয়া ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রার নাম সম্প্রতি অপারেশন সিন্দুরের অধীনে আলোচনায় এসেছে। জ্যোতির উপর অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি পাকিস্তানের গোপন সংস্থা আইএসআই-এর সাথে যোগাযোগে ছিলেন এবং দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। আসুন জেনে নিই কিভাবে এই হিসারের সাধারণ মেয়েটি পাকিস্তানের সাথে জড়িত এই গোয়েন্দাগিরির ঘটনায় জড়িয়ে পড়লেন।

কিভাবে পাকিস্তানের সাথে জড়িয়ে পড়লেন জ্যোতি?

জ্যোতি মলহোত্রা "Travel with JO" নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করতেন, যেখানে তিনি পাকিস্তান ভ্রমণের ভিডিও পোস্ট করতেন। এই ভিডিওগুলি দর্শকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু পুলিশের মতে, জ্যোতির এই পাকিস্তান ভ্রমণ কেবলমাত্র পর্যটনের জন্য ছিল না, বরং তিনি আইএসআই-এর এজেন্টদের সাথে যোগাযোগে ছিলেন এবং পাকিস্তানের পক্ষে ন্যারেটিভ তৈরির কাজ করছিলেন।

দিল্লিতে হওয়া দেখা সাক্ষাতে পরিবর্তন হল দিক

২০২৩ সালে জ্যোতি নতুন দিল্লির পাকিস্তানী হাইকমিশনে ভিসার জন্য আবেদন করেন। সেখানেই তার পাকিস্তানি হাইকমিশনের প্রধান এহসান-উর-রহমান 'দানিশ'-এর সাথে দেখা হয়। দুজনের বন্ধুত্ব খুব দ্রুত গভীর হয়ে ওঠে এবং তারা নিয়মিত ফোনে কথা বলা শুরু করে।

পাকিস্তানে গোপন সংস্থার সাথে যোগাযোগ

পুলিশের মতে, পাকিস্তানে জ্যোতির থাকা এবং ঘোরাঘুরির সব ব্যবস্থা দানিশের সহযোগী আলী আহ্বান করেছিলেন। আলী জ্যোতিকে সেখানকার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথেও পরিচয় করিয়ে দেন। এদের মধ্যে শাকির এবং রানা শাহবাজের মতো নাম সামনে এসেছে। জ্যোতি পুলিশকে জানিয়েছেন যে, কোনো সন্দেহ থেকে বাঁচার জন্য তিনি নিরাপত্তা এজেন্টদের নম্বরগুলি তার ফোনে বিভিন্ন নামে সেভ করে রেখেছিলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদান

জ্যোতি হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাট এবং টেলিগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ ব্যবহার করে পাকিস্তানি এজেন্টদের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। পুলিশের মতে, তিনি তাদের সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ করতেন, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

দানিশ: ভারত থেকে বহিষ্কৃত পাকিস্তানি কর্মকর্তা

দানিশের উপর গুরুতর অভিযোগ উঠার পর ভারত সরকার ১৩ মে তাকে ভারত থেকে বহিষ্কার করে। দানিশের উপর অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি আইএসআই-এর জন্য কাজ করতেন এবং ভারতের অনেক সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানে পাঠাতেন।

পাকিস্তানি দূতাবাসের সাথে জ্যোতির সম্পর্ক

দানিশের সাথে বন্ধুত্বের পর জ্যোতি বারবার পাকিস্তানি দূতাবাসে গেছেন। তাকে সেখানে আয়োজিত পার্টিতেও আমন্ত্রণ জানানো হতো। এই অনুষ্ঠানের ভ্লগ জ্যোতির ইউটিউব চ্যানেলে উপস্থিত রয়েছে, যা তার পাকিস্তানি সংযোগের প্রমাণ দেয়।

কেক ডেলিভারি বয়ের সংযোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে জ্যোতি একজন ব্যক্তির সাথে দেখা গেছে। এই ব্যক্তিই হলেন পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলার পর পাকিস্তানি দূতাবাসে কেক পৌঁছানোর জন্য যাওয়া ব্যক্তি। এই ব্যক্তি এবং জ্যোতির সংযোগ তদন্তকারী সংস্থার প্রশ্নগুলিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

পুলিশের তদন্তে অনেক প্রশ্ন

২২ এপ্রিল পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলার পর পাকিস্তানি দূতাবাসের বাইরে কেক পৌঁছে দেওয়া ব্যক্তির ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। পুলিশ এই ভিডিওর তদন্ত করছে যে এর সাথে জ্যোতির কি সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও পুলিশ জানার চেষ্টা করছে যে, কিভাবে জ্যোতি এই নেটওয়ার্কের অংশ হয়ে দেশের বিরুদ্ধে তথ্য শেয়ার করেছিল।

Leave a comment