দিল্লির সরকারি স্কুল নির্মাণে দুর্নীতি: সিসোদিয়া ও জৈনকে সমন

🎧 Listen in Audio
0:00

দিল্লির অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীষ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনকে সরকারি স্কুলগুলির ক্লাসরুম নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে সমন জারি করেছে। অভিযোগগুলির তদন্ত এখনও চলছে।

দিল্লি সংবাদ: দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং आम आदमी পার্টি (AAP) -এর প্রভাবশালী নেতা মণীষ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনের জন্য আবারও সমস্যা বেড়েছে। দিল্লি অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো (ACB) সরকারি স্কুলগুলির ক্লাসরুম নির্মাণে কথিত দুর্নীতির ঘটনায় তাদের সমন জারি করেছে। এই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে এবং উভয় নেতাকেই শীঘ্রই ACB-এর সামনে হাজির হতে হবে। আসুন এই পুরো ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে বুঝে নেই।

সরকারি স্কুলগুলির ক্লাসরুম নির্মাণে দুর্নীতির ঘটনা

অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো অভিযোগ করেছে যে দিল্লির সরকারি স্কুলগুলির জন্য নির্মিত প্রায় ১২,৭৪৮টি ক্লাসরুম এবং স্কুল ভবনের নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এই প্রকল্পের মোট মূল্য প্রায় ২০০০ কোটি টাকা বলে জানা গেছে। তদন্তে দেখা গেছে যে এই ক্লাসরুমগুলির নির্মাণের জন্য অস্বাভাবিকভাবে বেশি দাম ধরা হয়েছে।

বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ব্যয় এবং ঠিকার গড়মিল

তদন্তে জানা গেছে যে একটি ক্লাসরুম নির্মাণ প্রায় ২৪.৮৬ লক্ষ টাকায় হয়েছে, যা স্বাভাবিক ব্যয়ের চেয়ে প্রায় পাঁচগুণ বেশি। অভিযোগ উঠেছে যে এই প্রকল্পের ঠিকা ৩৪ জন আলাদা ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে, যাদের অধিকাংশই আম আদমি পার্টির সাথে যুক্ত বলে জানা যাচ্ছে। ACB আরও অভিযোগ করেছে যে এই নির্মাণে সেমি-পারমানেন্ট স্ট্রাকচার (SPS) তৈরি করা হয়েছে, যার আয়ু প্রায় ৩০ বছর, কিন্তু মজবুত RCC (Reinforced Cement Concrete) গঠনের সমান ব্যয়ে, যার আয়ু ৭৫ বছর পর্যন্ত হয়।

তদুপরি, নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রকল্পের ব্যয় ৩২৬ কোটি টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই অভিযোগটি প্রকল্পে বড় ধরনের গড়মিলের ইঙ্গিত দেয়।

ACB-এর পদক্ষেপ এবং সমন জারি

৩০শে এপ্রিল, ২০২৪-তে দিল্লি অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো এই ঘটনায় মণীষ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেছিল। এখন ACB সত্যেন্দ্র জৈনকে ৬ই জুন এবং মণীষ সিসোদিয়াকে ৯ই জুন জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হওয়ার জন্য ডেকেছে। উভয় নেতাকেই ACB অফিসে তাদের উপস্থিতি দেখাতে হবে।

উভয় নেতার দপ্তর এবং রাজনৈতিক দায়িত্ব

মণীষ সিসোদিয়া দিল্লি সরকারে অর্থ এবং শিক্ষা বিভাগ দায়িত্বে ছিলেন, যখন সত্যেন্দ্র জৈনের দায়িত্বে ছিল স্বাস্থ্য, শিল্প, বিদ্যুৎ, গৃহ, নগর উন্নয়ন এবং PWD যেগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এই দুর্নীতির অভিযোগগুলি দিল্লি সরকার এবং आम आदमी পার্টির খ্যাতির উপর প্রশ্ন তুলেছে।

পূর্ববর্তী আইনি জটিলতা

এটি প্রথমবার নয় যখন মণীষ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনের সমস্যা বেড়েছে। মণীষ সিসোদিয়াকে আগে মদ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল, যখন সত্যেন্দ্র জৈন মনি লন্ডারিংয়ের মামলায় জেলে গিয়েছিলেন। যদিও উভয়ই এখন জামিনে বেরিয়ে এসেছে, কিন্তু নতুন সমন এবং তদন্তের কারণে তাদের রাজনৈতিক এবং আইনি সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

Leave a comment