মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৬% পারস্পরিক শুল্কের বিষয়ে ভারতের বক্তব্য: প্রভাব বিশ্লেষণ চলছে। ট্রাম্প ৫২% এর পরিবর্তে কম শুল্ক আরোপ করে আলোচনার পথ খোলা রেখেছেন। আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
ট্রাম্পের শুল্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল বেশ কয়েকটি দেশের উপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যার ফলে বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক জগতে তীব্র আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছে। ভারত ও চীন সহ কিছু দেশকে ছাড় দেওয়া পারস্পরিক শুল্কের (Discounted Reciprocal Tariff) আওতায় রাখা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া ভারতের পক্ষ থেকে এসেছে।
ভারতের প্রতিক্রিয়া: ২৬% শুল্ক নিয়ে সরকার কী বলছে?
ভারত সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভারতের উপর আরোপিত ২৬% পারস্পরিক শুল্কের প্রভাবের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর পর্যালোচনায় ব্যস্ত এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব বুঝতে চেষ্টা করছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সকল ধরণের আমদানির উপর ১০% সার্বজনীন শুল্ক ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে, এবং অতিরিক্ত ১৬% শুল্ক ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। মন্ত্রণালয় এই শুল্কগুলির সম্পূর্ণ পর্যালোচনা করে ভারতের জন্য এর অর্থ কী হতে পারে তা নির্ধারণ করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার সম্ভাবনা কি অবশিষ্ট আছে?
সরকারি সূত্রের মতে, এই শুল্কের মধ্যে একটি ধারা রয়েছে যে, কোনও দেশ যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার উদ্বেগ প্রকাশ করে, তাহলে ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত শুল্কের হার কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করতে পারে।
ট্রাম্প ভারতের উপর ৫২% এর পরিবর্তে ২৬% শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ছাড় দেওয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সাথে আলোচনার দ্বার বন্ধ করতে চায় না। উভয় দেশই এই বিষয়ে ক্রমাগত যোগাযোগ রক্ষা করছে।
এই শুল্ক ভারতের জন্য কেন বড় ধাক্কা নয়?
ভারত ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (Bilateral Trade Agreement) নিয়ে আলোচনা করছে। উভয় দেশের লক্ষ্য হলো এই চুক্তির প্রথম পর্যায়টি ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত করা।
কর্মকর্তারা বলছেন, এই শুল্ক ভারতের জন্য কোনও বড় ধাক্কা নয়, বরং এর প্রভাব মিশ্র হতে পারে। ভারত সরকার এই পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক এবং উপযুক্ত কৌশল তৈরি করছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য: ভারতের উপর শুল্ক কেন আরোপ করা হলো?
ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেছেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছিলেন এবং তিনি তার খুব ভালো বন্ধু। কিন্তু এই ভ্রমণের সময় ট্রাম্প মোদীকে বলেছিলেন,
"ভারত সর্বদা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫২% শুল্ক আদায় করে, যা ঠিক নয়। তাই আমরা ভারতের উপর মাত্র অর্ধেক, অর্থাৎ ২৬% শুল্ক আরোপ করব।"
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘মুক্তি দিবস’ ঘোষণা
হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে গণমাধ্যমের সাথে আলোচনার সময় ট্রাম্প ২ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘লিবারেশন ডে’ (মুক্তি দিবস) হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, এই দিনটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পের পুনর্জন্ম হিসেবে স্মরণ করা হবে এবং দেশকে আর্থিকভাবে আরও শক্তিশালী করার দিকে একটি বড় ধাপ।