এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন নিহত

🎧 Listen in Audio
0:00

আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট টেকঅফের পরপরই বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনায় ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান এটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার দিন বলে অভিহিত করেছেন।

বিমান দুর্ঘটনা: আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-171 টেকঅফের কয়েক মিনিট পর বিধ্বস্ত হয়েছে, যাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনাটি একটি মেডিকেল কলেজের হস্টেলের সাথে সংঘর্ষের ফলে ঘটেছে। টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান এন. চন্দ্রশেখরন এটিকে টাটা গ্রুপের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার দিন বলে উল্লেখ করে তার কর্মীদের কাছে একটা আবেগঘন চিঠি লিখেছেন। এই দুর্ঘটনার তদন্ত ভারত, ব্রিটেন এবং আমেরিকার সংস্থাগুলি যৌথভাবে করছে।

ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় দেশ স্তম্ভিত

১২ জুন ২০২৫ তারিখে ভারত এমন এক দিন দেখেছে যা দীর্ঘদিন মনে থাকবে। আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-171 উড়ান শুরুর কয়েক মিনিট পরই বিধ্বস্ত হয়েছে। এই বিমানটি ছিল একটি বোয়িং 787-8 ড্রিমলাইনার, যা সরাসরি একটি মেডিকেল কলেজের হস্টেলের সাথে ধাক্কা লেগে জোরালো বিস্ফোরণে আগুনে লেপ্টে গিয়েছিল।

বিমানে থাকা মোট ২৪২ জন, যার মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। হস্টেলের ভবনের সাথে সংঘর্ষের কারণে সেখানে থাকা রেসিডেন্ট ডাক্তার এবং অন্যান্য ব্যক্তিরাও আহত হয়েছেন। এভাবে মৃতের সংখ্যা ২৬৫-এ পৌঁছেছে। শুধুমাত্র একজন যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, যার অবস্থা গুরুতর।

টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যানের আবেগঘন চিঠি

এয়ার ইন্ডিয়ার পরিচালনা টাটা গ্রুপ করে, যারা ২০২২ সালের জানুয়ারীতে এটি অধিগ্রহণ করেছিল। এই দুর্ঘটনার পর টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান এন. চন্দ্রশেখরন সকল কর্মীদের কাছে একটি আবেগঘন চিঠি লিখেছেন। তিনি এটিকে টাটার ইতিহাসের "সবচেয়ে অন্ধকার দিন" বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি লিখেছেন, "গতকাল যা ঘটেছে তা অবিশ্বাস্য। আমরা সবাই গভীর শক ও শোকে আছি। একজন ব্যক্তিকে হারানোও বড় দুঃখ, কিন্তু একসাথে এত বড় সংখ্যক মানুষের মৃত্যু অসহ্য। এটি টাটা গ্রুপের সবচেয়ে কালো দিনগুলির মধ্যে একটি।"

দুর্ঘটনার তদন্তে জড়িত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি

চন্দ্রশেখরন আরও জানিয়েছেন যে ভারত, ব্রিটেন এবং আমেরিকার তদন্ত সংস্থাগুলি আহমেদাবাদে পৌঁছে গেছে এবং দুর্ঘটনার গভীর তদন্ত শুরু হয়েছে।

তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে টাটা গ্রুপ তদন্তে পূর্ণ স্বচ্ছতা এবং সহযোগিতা করবে। তিনি লিখেছেন, "আমরা সকল তথ্য নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনও সর্বজনীন অনুমান করব না। কিন্তু যাই হোক না কেন, সকলের সামনে স্বচ্ছতার সাথে তা তুলে ধরা হবে।"

সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: টাটা গ্রুপ

তার চিঠিতে চন্দ্রশেখরন আরও জোর দিয়ে বলেছেন যে টাটা গ্রুপ এয়ার ইন্ডিয়ার পরিচালনা গ্রহণ করার পর থেকেই যাত্রীদের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন যে সুরক্ষা নিয়ে কোনো আপোষ করা হয়নি।

তিনি বলেছেন, "এয়ার ইন্ডিয়ার দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা সুরক্ষা মান আরও শক্তিশালী করেছি। আমরা যাত্রীদের জীবন এবং তাদের সুরক্ষাকে প্রতিটি সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছি।"

এখন পর্যন্ত কি উঠে এসেছে?

ফরেনসিক এবং বিমান বিশেষজ্ঞদের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে। প্রাথমিক প্রতিবেদনের মতে, ফ্লাইট টেকঅফের কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রযুক্তিগত ত্রুটির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে, এখনও পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া বা বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ কোনও আনুষ্ঠানিক প্রযুক্তিগত কারণ জানায়নি।

DGCA (Directorate General of Civil Aviation) এবং NTSB USA এর মতো সংস্থাগুলি ঘটনার তদন্তে জড়িত এবং "ব্ল্যাক বক্স" উদ্ধার করা হয়েছে, যার তদন্তে অনেক প্রযুক্তিগত দিক স্পষ্ট হতে পারে।

প্রাণহানির শিকার পরিবারগুলিকে জরুরি সহায়তা

দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের পরিবারগুলিকে সহায়তা প্রদানের জন্য এয়ার ইন্ডিয়া এবং টাটা গ্রুপ একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে। এই পরিবারগুলিকে তৎক্ষণাৎ আর্থিক সহায়তা, পরামর্শ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি পর্যায়েও গৃহ মন্ত্রণালয় এবং नागरिक उड्डयन मंत्रालय তদন্তের নির্দেশ জারি করেছে এবং দুর্ঘটনার প্রতিটি দিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী শোকের জলোচ্ছ্বাস

এই দুর্ঘটনা শুধুমাত্র ভারতকে নয়, সারা বিশ্বকেই ছুঁয়ে গেছে। মৃতদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিকদের পাশাপাশি ব্রিটিশ, কানাডিয়ান এবং পর্তুগিজ নাগরিকও রয়েছে। সারা বিশ্বের নেতারা এবং বিমান পরিবহন সংস্থাগুলি এই ট্র্যাজেডিতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এবং পর্তুগালের রাষ্ট্রপতিও সমবেদনা জানিয়েছেন।

Leave a comment