কেন্দ্র সরকার ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশের ৭টি জেলায় ৬৪০৫ কোটি টাকার দুটি রেলপথ প্রকল্পকে অনুমোদন দিয়েছে। এতে যাত্রার সুবিধা বৃদ্ধি পাবে, লজিস্টিক ব্যয় কমবে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়তা মিলবে।
কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট বৈঠক: কেন্দ্রীয় সরকার ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশের সাতটি জেলাকে সংযুক্ত করে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ মাল্টিট্রাকিং প্রকল্পকে অনুমোদন দিয়েছে। কোডারমা-বারকাখানা এবং বল্লারী-চিকজাজুর রেলপথকে ডাবল লাইন করা হবে, যা শুধুমাত্র যাত্রীদের সুবিধা বৃদ্ধি করবে না, বরং লজিস্টিক ব্যয় কমবে এবং পরিবেশেরও উপকার হবে। মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৬,৪০৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ক্যাবিনেট বৈঠকে রেলপথ প্রকল্পের অনুমোদন
বুধবার, ১১ জুন ২০২৫, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধ্যক্ষতায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ প্রকল্পকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশের সাতটি জেলাকে প্রভাবিত করবে এমন এই প্রকল্পগুলি ভারতীয় রেলের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
ঝাড়খণ্ড: কোডারমা-বারকাখানা রেলপথ ডাবল লাইনে পরিণত হবে
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন যে, ঝাড়খণ্ডের কোডারমা থেকে বারকাখানার মধ্যে ১৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথকে ডাবল লাইন করা হবে। এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ৩,০৬৩ কোটি টাকা। এতে পটনা থেকে রাঁচির মধ্যে যাত্রার সময় সাশ্রয় হবে। এই প্রকল্প কোডারমা, চত্রা, হাজারিবাগ এবং রামগড়ের মতো জেলাগুলিকে উন্নত রেলপথ সংযোগ প্রদান করবে। এর ফলে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের গতিও বৃদ্ধি পাবে।
পরিবেশ সংরক্ষণ এবং শক্তি সাশ্রয়ের সুবিধা
রেলমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে, এই প্রকল্পের ফলে পরিবেশের উপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মাল্টিট্রাকিং প্রকল্পের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড কমার প্রভাব সাত কোটি গাছ লাগানোর সমান হবে। পাশাপাশি, প্রতি বছর প্রায় ৩২ কোটি লিটার ডিজেল সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
এই প্রকল্পের ফলে প্রায় ৯৩৮টি গ্রাম এবং ১৫ লক্ষ জনসংখ্যার সরাসরি উপকার হবে। এই রেলপথ প্রতি বছর প্রায় ৩০.৪ মিলিয়ন টন অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের জন্য উপযোগী হবে, যার ফলে সড়কপথের উপর চাপ কমবে।
দক্ষিণ ভারত: বল্লারী-চিকজাজুর রেললাইনের ডাবলিংয়ের অনুমোদন
দ্বিতীয় বৃহৎ প্রকল্পটি কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশে। কেন্দ্রীয় সরকার বল্লারী থেকে চিকজাজুর পর্যন্ত ১৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথকে ডাবল লাইনে পরিণত করার অনুমোদন দিয়েছে। এই কাজের জন্য ৩,৩৪২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এই প্রকল্পের ফলে মঙ্গালুরু বন্দরের সাথে সংযোগ উন্নত হবে এবং শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা মিলবে। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, এই রেলপথের সাথে যুক্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে এবং এ অঞ্চলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
পরিবহন ব্যয় কমার সুবিধা
রেলমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন যে, মোদী সরকারের তৃতীয় মেয়াদকালের প্রাথমিক লক্ষ্য হল লজিস্টিক ব্যয় কমানো। তিনি বলেছেন যে, আইআইএম বেঙ্গালুরু এবং আইআইএম কলকাতার একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, পরিবহন খাতে বিনিয়োগের ফলে লজিস্টিক ব্যয় প্রায় ৪% কমেছে। এই দুটি প্রকল্পের ফলে শুধুমাত্র যাত্রীরা উপকৃত হবে না, বরং ব্যবসা এবং পণ্য পরিবহনের প্রক্রিয়াও দ্রুত এবং সাশ্রয়ী হবে। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক এবং শিল্পপতিরাও উপকৃত হবেন।