ভাই-বোনের সম্পর্ক ভালোবাসা, স্নেহ ও বিশ্বাসের প্রতীক। কিন্তু কেরালার কোট্টায়ামে এক নৃশংস ঘটনায় সেই সম্পর্ক রক্তাক্ত হলো। ২৭ বছরের লিজো সেভিয়ার মদ্যপ অবস্থায় নিজের বোনের ওপর ভয়ঙ্কর হামলা চালিয়েছে। অথচ এই বোনই একসময় তাকে জেল থেকে মুক্ত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল!
সেই রাতের ভয়ঙ্কর মুহূর্ত
মঙ্গলবার গভীর রাতে নেশাগ্রস্ত লিজো এক অজানা মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরে। সে বোনকে অনুরোধ করে, "এই মহিলাকে আজ রাতে এখানে থাকতে দাও।" কিন্তু বোন সরাসরি অস্বীকার করে।
এরপরই শুরু হয় তর্কাতর্কি। নেশার ঘোরে লিজো ক্রমেই আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে। একসময় তার ধৈর্য হারিয়ে যায়, আর ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বোনের ওপর। এক কোপেই কপাল থেকে কানের কাছে ছয় ইঞ্চি গভীর ক্ষত তৈরি হয়! মুহূর্তের মধ্যে রক্তে ভেসে যায় পুরো ঘর।
যে বোন সবসময় পাশে ছিল, সেই ভাই-ই ভয়ংকর!
এই ঘটনায় সবচেয়ে মর্মান্তিক দিক হলো—এই বোনই লিজোকে বারবার আইনি বিপদ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। লিজো আগেও একাধিকবার মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত ছিল। এমনকি, শিশু সুরক্ষা আইনের (POCSO) আওতায় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল। প্রতিবারই বোন তার হয়ে চেষ্টা করত, সমাজের চোখে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করত। কিন্তু সেই ভাই কৃতজ্ঞতা জানাল কীভাবে? এক ভয়ংকর ছুরির কোপ দিয়ে!
পুলিশি অভিযান ও গ্রেপ্তার
রক্তাক্ত অবস্থায় আহত বোনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, আর পুলিশের বিশেষ দল অভিযুক্ত লিজোকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে। এসএইচও এম. জে. অরুণের নেতৃত্বে এক বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তাকে পাকড়াও করে। দলে ছিলেন এসআই গিরিশ কুমার, শিবু, সিভিল পুলিশ অফিসার এস. অরুণ, স্মিতেশ ও শফিক।
এখন তদন্তকারীদের একটাই প্রশ্ন—কীভাবে একজন ব্যক্তি, যাকে তার বোন বারবার রক্ষা করেছে, সেই ব্যক্তিই এমন ভয়াবহ হামলা চালাতে পারে? তদন্তে উঠে আসছে আরও নতুন তথ্য, যা হয়তো এই নৃশংস ঘটনার আসল কারণ উন্মোচন করবে!