কাতারের ৩৪০০ কোটি টাকার উপহার: ট্রাম্পের ‘ফ্লাইং প্যালেস’ ২০২৯-এর আগে উড়বে না

🎧 Listen in Audio
0:00

কাতার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৩৪০০ কোটি টাকার বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমান উপহার দিয়েছে। নিরাপত্তাগত কারণে এই ‘ফ্লাইং প্যালেস’ ২০২৯ সালের আগে উড়াল চলবে না।

ওয়াশিংটন/দোহা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কাতার সরকারের পক্ষ থেকে একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও উচ্চ প্রযুক্তির বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমান উপহার পেয়েছেন। এই ‘ফ্লাইং প্যালেস’-এর দাম প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৩৪০০ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, ট্রাম্প ২০২৯ সালের আগে এই বিমানে উড়াল চালাতে পারবেন না।

কেন কাতার ট্রাম্পকে এই বিলাসবহুল জেট উপহার দিল?

কিছুদিন আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প উপসাগরীয় দেশ কাতার সফর করেন। এই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যে বড় বড় বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মধ্যে বোয়িং কোম্পানির কাতার এয়ারওয়েজ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্ডার পাওয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সফরকালেই ট্রাম্পকে এই বিশাল ও দুর্দান্ত বোয়িং ৭৪৭-৮ উপহার দেওয়া হয়, যাকে ‘ফ্লাইং প্যালেস’ বলা হচ্ছে।

জেনে নিন এই বিমানের বিশেষত্ব কী?

এটি বোয়িং ৭৪৭ সিরিজের সবচেয়ে বড় এবং উন্নত মডেল। এতে চারটি GEnx-2B টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়েছে যা দীর্ঘ দূরত্বের উড়ানের জন্য উপযুক্ত। বিমানের ভেতরে বিলাসবহুল মাস্টার বেডরুম, উচ্চ প্রযুক্তির কনফারেন্স রুম, ডাইনিং এরিয়া, ভিআইপি লাউঞ্জ এবং আধুনিক বাথরুমের সুবিধা রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য এতে ইনফ্রারেড জ্যামার সহ উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও রয়েছে।

২০২৯ সালের আগে ডেলিভারি হবে না

‘দ্য টাইমস’ এবং ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিবেদনের মতে, এই বিমানটি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। নিরাপত্তা অনুমোদন, প্রযুক্তিগত পরিদর্শন এবং কাঠামোগত পরিবর্তনের কারণে এর ডেলিভারি ২০২৭ সালের আগে অসম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এই বিলাসবহুল জেটটিকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বিমান (এয়ার ফোর্স ওয়ান)-এর মান অনুযায়ী তৈরি করতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

রাষ্ট্রপতি বিমান তৈরিতে এত ব্যয় কেন?

এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার ও পেন্টাগনের প্রাক্তন কর্মকর্তাদের মতে, এই বিমানটিকে সম্পূর্ণরূপে সামরিক মান অনুযায়ী উন্নত করতে হবে। এতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস (ইএমপি) শিল্ডিং, এনক্রিপ্টেড যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা জরুরি ইউনিট যুক্ত করা হবে। অনুমান করা হচ্ছে এই পুরো প্রক্রিয়ায় প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার (৮০০০ কোটি টাকা) ব্যয় হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন বিদেশী দেশ থেকে রাষ্ট্রপতি বিমান গ্রহণ করে না?

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা কোন বিদেশী দেশ থেকে রাষ্ট্রপতি বিমান গ্রহণ করে না। এর প্রধান কারণ জাতীয় নিরাপত্তা। একজন প্রাক্তন বিমানবাহিনী কর্মকর্তার মতে, "আপনি কোন বিদেশী দেশ থেকে রাষ্ট্রপতি বিমান নেন না, কারণ তাকে ভেতর থেকে সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষা করে এবং পুনর্নির্মাণ করতে হয়।"

Leave a comment