নয়াদিল্লি। আধার ও UPI-র পর ভারত সরকার আরও একটি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। শীঘ্রই দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য একটি অনন্য ডিজিটাল ঠিকানা ID আসতে পারে। এর উদ্দেশ্য হল লোকদের ঠিকানা ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারে অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে কোনো ব্যক্তির সঠিক ও নির্ভুল ঠিকানা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সহজেই পাওয়া যায়।
এখন পর্যন্ত ভারতে কারও ঠিকানার একই রকম ডিজিটাল পরিচয় তৈরির কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাই সরকার এখন একটি নতুন ডিজিটাল ঠিকানা ব্যবস্থা আনার কাজ করছে, যা বিশেষ করে সরকারি সেবা, অনলাইন শপিং, কুরিয়ার, ফুড ডেলিভারি ইত্যাদি সুবিধাকে আরও উন্নত করবে।
সংসদে বিল উত্থাপনের প্রস্তুতি
এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য ডাক বিভাগ একটি ডিজিটাল ঠিকানা ব্যবস্থা তৈরি করছে, যার তত্ত্বাবধান সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (PMO) করবে। খসড়া সংস্করণ শীঘ্রই সাধারণ জনগণের পরামর্শের জন্য উপলব্ধ করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে যে এই বছরের শেষের মধ্যে এর চূড়ান্ত সংস্করণ প্রস্তুত হবে এবং সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের প্রস্তুতি রয়েছে।
এই ব্যবস্থার অধীনে একটি নতুন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে, যা ডিজিটাল ঠিকানা ব্যবস্থার তত্ত্বাবধান করবে। পাশাপাশি এটি নিশ্চিত করা হবে যে কারও ঠিকানা তার সম্মতি ছাড়া অন্য কারও সাথে ভাগ করা হবে না।
কেন ডিজিটাল ঠিকানা ID প্রয়োজন?
আজকের সময়ে অনলাইন শপিং, ফুড ডেলিভারি এবং কুরিয়ার পরিষেবার জন্য সঠিক ঠিকানা অত্যন্ত জরুরি। প্রায়শই লোকেরা তাদের ঠিকানায় ভুল করে বা অসম্পূর্ণ ঠিকানা লিখে, যার ফলে ডেলিভারিতে বিলম্ব হয়। অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলি ব্যবহারকারীদের ঠিকানার তথ্য তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যদের সাথে ভাগ করে নেয়, যার ফলে গোপনীয়তার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
একটি প্রতিবেদনের মতে, প্রতি বছর ভুল ঠিকানার কারণে দেশে প্রায় ১০ থেকে ১৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়, যা GDP-র প্রায় ০.৫ শতাংশ। এই অবস্থায় ডিজিটাল ঠিকানা ID শুধুমাত্র সঠিক ঠিকানার সমস্যা সমাধান করবে না, বরং লজিস্টিক্স, কুরিয়ার এবং সরকারি সেবায়ও ত্বরাণ্বিত করবে।
কিভাবে কাজ করবে ডিজিটাল ঠিকানা ID ব্যবস্থা?
ডিজিটাল ঠিকানা ID একটি অনন্য কোডের মতো হবে, যা প্রতিটি ব্যক্তি বা বাড়িকে বরাদ্দ করা হবে। এটি যেকোনো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভাগ করা যাবে, তবে শুধুমাত্র আপনার অনুমতির পর। অর্থাৎ আপনার গোপনীয়তা সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে।
সরকার একটি মানক ব্যবস্থা তৈরি করছে, যার ফলে ঠিকানা লেখা এবং ভাগ করার একটি নির্দিষ্ট বিন্যাস থাকবে। এর ফলে ঠিকানা খুঁজে পাওয়া সহজ হবে এবং ডেলিভারির সাথে জড়িত অনেক প্রক্রিয়ায় ত্বরাণ্বিত হবে।
