২০২৫ সালের নতুন আয়কর বিল: ট্যাক্স ইয়ার, ক্রিপ্টোতে কঠোর নিয়ম, এবং সহজতর আইন

🎧 Listen in Audio
0:00

২০২৫ সালের নতুন আয়কর বিল: ‘অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার’-এর পরিবর্তে ‘ট্যাক্স ইয়ার’, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে কঠোর বিধান, ট্যাক্সপেয়ার্স চার্টার এবং সহজতর আইনি ভাষা।

নতুন আয়কর বিল: সরকার ২০২৫ সালের নতুন আয়কর বিলের খসড়া (New Income Tax Bill 2025 Draft) প্রকাশ করেছে, যা শীঘ্রই সংসদে উত্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিল আয়কর আইনকে সরলীকরণ এবং ভাষাকে সহজ করে তোলার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা ১লা এপ্রিল, ২০২৬ থেকে এই নতুন আইন কার্যকর করা।

‘অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার’-এর পরিবর্তে ‘ট্যাক্স ইয়ার’

নতুন আয়কর বিলে ‘অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার’-এর পরিবর্তে ‘ট্যাক্স ইয়ার’ শব্দ ব্যবহার করা হবে। ট্যাক্স ইয়ার হবে ১লা এপ্রিল থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসের সময়কাল। যদি কোনো নতুন ব্যবসা বা পেশা শুরু করা হয়, তাহলে তার ট্যাক্স ইয়ার সেই তারিখ থেকে শুরু হবে এবং চলমান বিত্তীয় বছরের সাথে শেষ হবে। এই পরিবর্তন ট্যাক্স রিপোর্টিংকে আরও স্বচ্ছ এবং সহজ করার জন্য করা হয়েছে।

আইনি ভাষার সরলীকরণ এবং সংক্ষিপ্তকরণ

এই নতুন বিলে আইনি ভাষাকে সরলীকৃত করা হয়েছে। পুরানো আয়কর আইনে ৮২৩ পৃষ্ঠা ছিল, যেখানে নতুন বিল ৬২২ পৃষ্ঠায় প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে, অধ্যায়ের সংখ্যা ২৩টিই রয়েছে, কিন্তু ধারার সংখ্যা ২৯৮ থেকে বেড়ে ৫৩৬ হয়েছে। সূচির সংখ্যাও ১৪ থেকে বেড়ে ১৬ হয়েছে। পুরানো আইনে থাকা জটিল ব্যাখ্যা এবং বিধানগুলিকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে ট্যাক্সপেয়ারদের জন্য এটি বুঝতে সহজ হবে।

ডিজিটাল লেনদেন এবং ক্রিপ্টোতে কঠোর নিয়ম

নতুন আয়কর বিলে ভার্চুয়াল ডিজিটাল সম্পদ (ক্রিপ্টোকারেন্সি ইত্যাদি) -এর উপর কঠোর বিধান রাখা হয়েছে। এখন ক্রিপ্টো সম্পদকে অপ্রকাশিত আয়ের আওতায় ধরা হবে, যেমন নগদ, বুলিয়ন এবং গয়না অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই পদক্ষেপ ডিজিটাল লেনদেনকে স্বচ্ছ করার এবং ট্যাক্স ফাঁকি রোধ করার জন্য নেওয়া হয়েছে।

ট্যাক্সপেয়ার্স চার্টার অন্তর্ভুক্ত করা হবে

বিলে ট্যাক্সপেয়ার্স চার্টার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ট্যাক্স প্রদানকারীদের অধিকার রক্ষা করবে এবং ট্যাক্স প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ করে তুলবে। এই চার্টার করদাতা এবং কর কর্মকর্তাদের দায়িত্ব এবং অধিকার স্পষ্ট করবে, যার ফলে ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয় সমাধান করা সহজ হবে।

কিভাবে এই বিল আইনে পরিণত হবে?

নতুন আয়কর বিল কেবিনেটের অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি লোকসভায় উত্থাপন করা হবে এবং তারপর স্থায়ী সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে। কমিটির সুপারিশের পর এতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে এবং তারপর সংসদে পাশ করিয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। এরপর এটি আনুষ্ঠানিক আইনে পরিণত হবে।

দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ট্যাক্স সংস্কার প্রক্রিয়া

সরকার গত কয়েক বছর ধরে আয়কর আইন সহজ করার চেষ্টা করে আসছে। এর জন্য ২০০৮ সালে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছিল, যা ২০০৯ সালে তার প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। এর আগে, ইউপিএ সরকার ২০০৯ সালে ডাইরেক্ট ট্যাক্স কোড (DTC) উত্থাপন করেছিল, কিন্তু তা সংসদে পাশ হয়নি। এখন, আয়কর বিল ২০২৫ কে ট্যাক্স সিস্টেমকে আরও সুবিধাজনক এবং স্বচ্ছ করার দিকে একটি বড় উন্নয়ন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Leave a comment