নেটফ্লিক্সের নতুন ক্রাইম-ড্রামা সিরিজ Adolescence ১৪ই মার্চ মুক্তি পেয়েছে। ২২৮ মিনিট, ৪টি পর্ব এবং সিঙ্গল টেক-এ তৈরি এই নেটফ্লিক্স মার্ডার মিস্ট্রি সমাজের তিক্ত সত্য উন্মোচন করে।
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: নেটফ্লিক্সের নতুন ক্রাইম-ড্রামা সিরিজ Adolescence ১৪ই মার্চ মুক্তি পেয়েছে এবং মুক্তির সাথে সাথেই দর্শকদের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। ফিলিপ বারান্তিনি পরিচালিত এই সিরিজটি কেবলমাত্র একটি মার্ডার মিস্ট্রি নয়, তার চেয়ে অনেক বেশি। এই সিরিজ আধুনিক সমাজে কিশোরদের মানসিক সংগ্রাম, স্কুলে বুলিং এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিপজ্জনক প্রভাব তুলে ধরে। এই গল্পটি দেখে প্রতিটি মা-বাবা এবং কিশোর বুঝতে পারবে যে আজকের সময়ে শিশুদের জীবন কেমন হয়ে উঠেছে।
১৩ বছরের খুনির গল্প, যা মার্ডার মিস্ট্রি থেকে অনেক এগিয়ে
সিরিজটির শুরু হয় একজন ১৩ বছরের ছেলের গ্রেফতারির সাথে। কিন্তু এটি কোন সাধারণ গ্রেফতারি নয়, পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে ঢোকে, যেন কোন বড় আতঙ্কবাদী ধরা পড়েছে। প্রশ্ন হল সে কার হত্যা করেছে তা নয়, বরং কেন করেছে? এই সিরিজের বিশেষত্ব হল এটি কেবল অপরাধের উপর নয়, অপরাধের পিছনে থাকা মানসিকতার উপরও গুরুত্ব দেয়। স্কুলে হওয়া বুলিংয়ের শিশুদের উপর কী প্রভাব পড়ে, এই সিরিজ তা সুন্দরভাবে দেখায়। এ কারণেই এটি কেবল একটি এন্টারটেইনমেন্ট শো নয়, বরং সমাজের জন্য একটি আয়নাও।
কেন বিশেষ এই সিরিজ?
এই সিরিজটি নতুন এবং আলাদা। এতে কেবল অপরাধ এবং তদন্ত নয়, বরং ইমোশনাল এবং সাইকোলজিক্যাল দিকও চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শিশুদের মনে কী চলছে, তারা কী ধরনের মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তার চমৎকার চিত্রায়ন করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং সাইবার বুলিং কতটা শিশুদের জীবন বদলে দিতে পারে, তা এই শোতে স্পষ্ট দেখা যায়। একটি ছোট্ট ইমোজিও কীভাবে কোন শিশুর মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলতে পারে, তা এই সিরিজে অত্যন্ত কার্যকরভাবে দেখানো হয়েছে।
অভিনয়: ১৩ বছরের চরিত্রে ওয়েন কুপারের অসাধারণ অভিনয়
এই সিরিজে ওয়েন কুপার লিড রোল করেছেন, যিনি বাস্তব জীবনে ১৫ বছর বয়সী এবং এটি তাঁর অভিষেক অভিনয়। তিনি এত চমৎকার অভিনয় করেছেন যে বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ে যে এটি তাঁর প্রথম প্রজেক্ট। তাঁর বাবার চরিত্রে স্টিফেন গ্রাহামও চমৎকার কাজ করেছেন। এছাড়াও অ্যাশলে ওয়াল্টার্স পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি এই মামলার তদন্ত করছেন। তাঁর নিজের ছেলেও সেই স্কুলে পড়ে, যেখানে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, যা গল্পটিকে একটি আলাদা দিক দেয়।
পরিচালনা এবং চিত্রনাট্য: দমদার গল্প, যা শেষ পর্যন্ত বেঁধে রাখে
সিরিজটি লিখেছেন জ্যাক থর্ন এবং স্টিফেন গ্রাহাম, আর পরিচালনা করেছেন ফিলিপ বারান্তিনি। এই সিরিজের প্রাণ এর চমৎকার লেখা এবং অসাধারণ চিত্রনাট্য। প্রতিটি দৃশ্য এতই কার্যকরভাবে চিত্রায়িত হয়েছে যে দর্শকরা নিজেদেরকে গল্পের অংশ বলে মনে করতে শুরু করেন। তদন্তের সময় হওয়া আলাপচারিতা এবং মানসিক দিকগুলো যেভাবে দেখানো হয়েছে, তা প্রশংসার দাবিদার।
দেখা উচিত কি না?
যদি আপনি কেবল থ্রিলার এবং মার্ডার মিস্ট্রি দেখার জন্য এই সিরিজটি শুরু করেন, তবে এটি আপনার প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি দেবে। এটি একটি ইমোশনাল, হার্ড-হিটিং এবং চোখ খোলার মতো গল্প, যা বিশেষ করে মা-বাবা এবং কিশোরদের অবশ্যই দেখা উচিত। এই সিরিজ সোশ্যাল মিডিয়ার বিপদ এবং শিশুদের মানসিক অবস্থা অত্যন্ত সঠিকভাবে দেখায়, যা থেকে প্রত্যেকেই শিখতে পারবে। সামগ্রিকভাবে, Adolescence নেটফ্লিক্সের একটি মাস্ট-ওয়াচ সিরিজ।