আমির খানের ছবি ‘সিতারে জমিন পার’ প্রথম দিনে মাত্র ১১.৭ কোটি টাকার ধীর গতির শুরু করেছে, যখন আশা করা হচ্ছিল ৩০ কোটি টাকা আয় হবে। তিনি ১২০ কোটি টাকার ওটিটি ডিল প্রত্যাখ্যান করে থিয়েটারে বিশ্বাস রেখেছিলেন, এখন সপ্তাহান্তের আয়ের দিকে সবার নজর।
সিতারে জমিন পার: বলিউডের ‘মিঃ পারফেকশনিস্ট’ খ্যাত আমির খানের অধীর আকাঙ্ক্ষার ছবি ‘সিতারে জমিন পার’ অবশেষে সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা এই ছবি একদিকে তার দারুণ তারকা দল এবং আবেগঘন কন্টেন্টের জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছে, অন্যদিকে বক্স অফিসে এর পারফরম্যান্স আশানুরূপ ছিল না।
প্রথম দিনের আয় চমকে দিয়েছে
আমির খানের এই ছবি, যা তার ২০০৭ সালের হিট ছবি ‘তারে জমিন পার’-এর আধ্যাত্মিক ধারাবাহিকতা বলে মনে করা হচ্ছে, প্রথম দিনে মাত্র ১১.৭ কোটি টাকা আয় করেছে। এই সংখ্যাটি দেখায় যে আমির খানের নাম এবং ছবির আলোচনার পরও দর্শক সংখ্যা আশানুরূপ ছিল না।
সেকনিলিকের প্রাথমিক প্রবণতা অনুযায়ী, ছবিটি হিন্দি ভাষায় ১৭.৭৩% অকিউপেন্সি রেকর্ড করেছে, যেখানে সকালের শো ১৬.৭৪%, দুপুরের শো ১৬.২৫% এবং সন্ধ্যার শো ২০.২১% এ সীমাবদ্ধ ছিল। সবচেয়ে বেশি দর্শক দেখা গেছে জয়পুরে, যেখানে থিয়েটার অকিউপেন্সি ছিল ২৯.৩৩%।
আশা করা হচ্ছিল ৩০ কোটি টাকার ওপেনিং
ছবির প্রচার এবং আমির খানের ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখে ট্রেড এক্সপার্টরা আশা করেছিলেন যে ‘সিতারে জমিন পার’ প্রথম দিনে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা আয় করবে। কিন্তু এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারা শুধুমাত্র আমির খানের জন্যই উদ্বেগের বিষয় নয়, বরং এটি এই প্রশ্নও তুলে ধরেছে যে কি দর্শকরা এখন কন্টেন্টের চেয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং বিনোদনমূলক মূল্যকে বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন?
ছবির কন্টেন্ট আবেগঘন
আরএস প্রসন্ন পরিচালিত এবং আমির খান প্রোডাকশন্সের ব্যানারে নির্মিত এই ছবিতে ১০ জন নতুন শিল্পীকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে আছেন অরুষ দত্ত, গোপী কৃষ্ণ বর্মা, সঞ্জীব দেসাই, বেদান্ত শর্মা, আয়ুষ ভানসালী, আশীষ পেন্ডসে, ঋষি শাহানী, ঋষভ জৈন, নমন মিশ্র এবং সিমরন মঙ্গেশকর। ছবিতে শিশুদের জগৎ, তাদের আবেগ এবং মানসিক চাপ তুলে ধরা হয়েছে, যা আবারও দর্শকদের কাঁপিয়ে তুলবে।
ওটিটি ডিল প্রত্যাখ্যান করা ভারী পড়লো?
আরেকটি বড় বিষয় যা এই আলোচনায় যুক্ত হয়েছে, তা হল আমির খান কর্তৃক ১২০ কোটি টাকার একটি ওটিটি ডিল প্রত্যাখ্যান করা। আসলে, ইন্ডিয়া টিভির ‘আপ কি আদালত’ অনুষ্ঠানে নিজেই আমির খান এই তথ্য প্রকাশ করেছিলেন যে ছবির ডিজিটাল মুক্তির জন্য তাকে একটি বড় ডিল পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ তিনি থিয়েটারের প্রতি তার অনুগত থাকতে চেয়েছিলেন।
আমির বলেছিলেন, ‘আমি সিনেমা হলের সাথে অনুগত থাকতে চাই। আমি থিয়েটারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারি না।’ যদিও এখন ছবির ওপেনিং আশানুরূপ না হওয়ায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে কি আমিরকে এই ডিলটি গ্রহণ করা উচিত ছিল?
সপ্তাহান্তে নজর টিকে আছে
ছবির ওপেনিং যদিও ধীর ছিল, তবে সমালোচক এবং দর্শকদের কাছ থেকে ইতিবাচক মুখের কথা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ট্রেড বিশ্লেষকরা আশা করছেন যে ছবিটি শনিবার এবং রবিবারে এর আয়ের মধ্যে ভালো উন্নতি দেখাতে পারে।
যদি তা না হয়, তবে আমির খানের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। এতে শুধু তার বক্স অফিস জনপ্রিয়তার উপর প্রশ্ন উঠবে না, বরং ছবির থিয়েটার মডেল নিয়েও উদ্বেগ বাড়বে।
সমালোচনা এবং প্রশংসার মিশ্র প্রতিক্রিয়া
ছবিটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দর্শকদের প্রতিক্রিয়া মিশ্রিত। কেউ কেউ এটিকে ‘হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া ছবি’ বলে অভিহিত করেছেন, আবার কেউ কেউ এর ধীর গতি এবং পূর্বাভাসযোগ্য স্ক্রিপ্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
টুইটারে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আমির খানের অভিনয় চমৎকার, কিন্তু ছবিটি কিছু কিছু জায়গায় টানাটানি বলে মনে হচ্ছে।’ অন্যদিকে, আরেকজন ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘শিশুদের দৃষ্টিকোণকে যে সংবেদনশীলতার সাথে এই ছবি দেখায়, তা অসাধারণ।’