ওড়িয়া চলচ্চিত্র জগতের दिग्গজ অভিনেতা এবং সর্বকালের সুপারস্টার উত্তম মোহন্তীর ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে গুরুগ্রামের মেদান্তা হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভুবনেশ্বর: ওড়িয়া চলচ্চিত্র জগতের दिग्गজ অভিনেতা এবং সর্বকালের সুপারস্টার উত্তম মোহন্তীর ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে গুরুগ্রামের মেদান্তা হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। কিছুদিন ধরেই তিনি নিউমোনিয়া এবং লিভার সিরোসিসের মতো গুরুতর রোগে ভুগছিলেন। এই মাসের শুরুতে তাকে চিকিৎসার জন্য বিমানযোগে দিল্লিতে আনা হয়েছিল, যেখানে তিনি আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।
সুপারস্টার হওয়ার যাত্রা
১৯৫৮ সালে ওড়িশার বারিপদায় জন্মগ্রহণকারী উত্তম মোহন্তী ১৯৭৭ সালে সাধু মেহের পরিচালিত ‘অভিমান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৭৮ সালে ‘পতি-পত্নী’ চলচ্চিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মনে জায়গা করে নেন। ১৯৮০-এর দশকে তার জনপ্রিয়তা চরমে পৌঁছে, রোমান্টিক নায়ক, খলনায়ক এবং চরিত্র অভিনেতা—সকল ভূমিকাতেই তিনি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেন। তার চলচ্চিত্রগুলি ক্রমাগত বক্স অফিসে সাফল্যের শিখরে উঠে।
তার স্ত্রী, অভিনেত্রী অপরাজিতা মোহন্তীর সাথে তার জুটি ওড়িয়া চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে সফল জুটিগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত। ‘অস্তরাগ’, ‘মা’, ‘বিধির বিধান’—এই ধরণের অনেক সুপারহিট চলচ্চিত্রে তারা একসাথে অভিনয় করেছেন। তার চলচ্চিত্রের তালিকায় ‘নিঝুম রাতির সাথী’, ‘চিহ্ন অচিহ্ন’, ‘রাযমান’, ‘অভিলাষা’, ‘ডান্ডা বাঁধুঙ্গা’, ‘পূজা ফুলা’ এবং ‘রজনীগন্ধা’র মতো হিট চলচ্চিত্র অন্তর্ভুক্ত।
১৫০-এর বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয়
উত্তম মোহন্তী তার কর্মজীবনে প্রায় ১৫০টি ওড়িয়া এবং ৩০টি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র ‘নয়া জহর’-এও অভিনয় করেছিলেন। এছাড়াও, তিনি ছোট পর্দায়ও সক্রিয় ছিলেন এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে দর্শকদের বিনোদন দিয়েছেন। উত্তম মোহন্তী তার অসাধারণ অভিনয়ের জন্য অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৯৯ সালে ওড়িশা সরকার তাকে ‘জয়দেব পুরস্কার’ দিয়ে সম্মানিত করে।
এছাড়াও, ‘ফুল চন্দনা’, ‘সুনা চড়াই’, ‘ঝিয়া তী সীতা পারী’ এবং ‘ডান্ডা বাঁধুঙ্গা’র মতো চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। ওড়িশা চলচ্চিত্র প্রযোজক সংঘ তাকে তার জীবনব্যাপী অবদানের জন্য ‘ওএফএ চলচ্চিত্র পুরস্কার’ দিয়ে সম্মানিত করে।
চলচ্চিত্র জগৎ এবং রাজনীতিবিদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি
তার মৃত্যুর পর ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাজি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “উত্তম মোহন্তী ওড়িয়া চলচ্চিত্রকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টার ছিলেন এবং তার অভিনয়ের কোনো তুলনা নেই।” কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও তার মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “উত্তম মোহন্তী ওড়িয়া চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল তারকা ছিলেন। তার অবদান অমরত্ব লাভ করবে এবং তিনি সবসময় মানুষের হৃদয়ে জীবন্ত থাকবেন।”
উত্তম মোহন্তীর মৃত্যুতে ওড়িয়া চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার স্মরণীয় চলচ্চিত্র এবং অসাধারণ অভিনয়ের জন্য তিনি সর্বদা স্মরণীয় থাকবেন। ইন্ডাস্ট্রি কেবলমাত্র একজন মহান অভিনেতা হারিয়েছে তাই নয়, একজন এমন শিল্পীও হারিয়েছে, যিনি ওড়িয়া চলচ্চিত্রকে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন।