কুনাল কামরা: মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে প্যারোডি গানে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

🎧 Listen in Audio
0:00

মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে লক্ষ্য করে তৈরি করা একটি প্যারোডি গানকে কেন্দ্র করে স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান কুনাল কামরার সমস্যা বাড়তে পারে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের (Breach of Privilege) কার্যক্রম শীঘ্রই শুরু করা হবে।

কমেডিয়ান কুনাল কামরা: স্ট্যান্ড-আপ কমেডির মঞ্চ থেকে রাজনৈতিক ব্যঙ্গ করা এখন কমেডিয়ান কুনাল কামরার জন্য ভারী পড়তে দেখা যাচ্ছে। মহারাষ্ট্রের রাজনীতির কেন্দ্রে আবারও একই নাম গুঞ্জন করছে, যিনি তার তীক্ষ্ণ ভাব, রাজনৈতিক কটাক্ষ এবং খোলা আলোচনার জন্য পরিচিত—কুনাল কামরা। এইবার কামরা মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে একটি প্যারোডি গানের মাধ্যমে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।

এই গানকে কেন্দ্র করে এখন তার বিরুদ্ধে রাজ্য বিধান পরিষদে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের বিধায়ক এবং পরিষদের সভাপতি এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে নোটিশ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

কী ঘটেছে সম্পূর্ণ বিষয়টি?

মার্চ ২০২৫ সালে মহারাষ্ট্র বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সময় বিজেপি বিধায়ক প্রবীণ দারকার বিধান পরিষদে একটি নোটিশ দাখিল করেছিলেন, যেখানে কুনাল কামরা এবং শিবসেনা (ইউবিটি)-এর মুখপাত্র সুষমা আন্ধারেকে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের দোষী করে কার্যক্রমের দাবি জানানো হয়েছিল। এই সম্পূর্ণ বিতর্কের মূলে রয়েছে সেই প্যারোডি গান, যা কুনাল তার স্ট্যান্ড-আপ শোর সময় উপস্থাপন করেছিলেন।

গানে সরাসরি উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নাম নেওয়া হয়নি, কিন্তু ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে উপস্থাপিত এই গানকে শিন্ডে সমর্থকরা অপমানজনক বলে অভিহিত করেছেন। এর প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছিল এবং মুম্বাইয়ের সেই ভেনুতেও ভাঙচুর করা হয়েছিল যেখানে এই শোটি চিত্রায়িত হয়েছিল।

বিশেষাধিকার কমিটির কার্যক্রম

মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের সভাপতি রাম শিন্ডে এই বিষয়টি বিশেষাধিকার কমিটিকে দিয়েছেন। কমিটির সভাপতি বিজেপি এমএলসি প্রসাদ লাড নিশ্চিত করেছেন যে কুনাল কামরা এবং সুষমা আন্ধারেকে নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। লাড মিডিয়ার সাথে আলোচনায় বলেছেন, এই বিষয়টি শুধুমাত্র একজন শিল্পীর মজার নয়, বরং এটি রাজ্যের উচ্চপদস্থ জনপ্রতিনিধিদের মর্যাদা এবং সাংবিধানিক পদের মর্যাদার সাথে জড়িত। এই বিষয়ে আলোচনার পরে আমরা কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।

এই প্রথমবার নয় যখন কুনাল কামরা রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। তার নাম আগেও বহুবার আলোচনায় এসেছে—এবং প্রায়শই তার বিতর্কিত বক্তব্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টের কারণে। ২০২০ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা করে একটি টুইট করেছিলেন, যার ফলে অবমাননার মামলা উঠেছিল।

অর্ণব গোস্বামীর সাথে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে ঝামেলার ফলে কিছু সময়ের জন্য তাকে ফ্লাইট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি মর্ফড ভিডিওও শেয়ার করেছিলেন, যেখানে একটি শিশুর গানের জায়গায় ‘মহঙ্গাই ডাইন খায়ে যাতে’ গান যোগ করা হয়েছিল।

কী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা?

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিষয়টি কেবল হাস্যরস এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে এই ধরণের ব্যঙ্গকে সরাসরি আক্রমণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে যখন তা ক্ষমতাসীন কোনো নেতাকে লক্ষ্য করে। বিধান পরিষদে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের কার্যক্রম সাধারণত গুরুতর ঘটনার ক্ষেত্রে করা হয়, যখন মনে হয় কোনো সদস্যের সাংবিধানিক মর্যাদা বা অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এখন দেখার বিষয় কমিটি কামরাকে ক্ষমা করে, সতর্ক করে, নাকি তার বিরুদ্ধে কঠোর শৃঙ্খলাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

Leave a comment