হানি ইরানি: জাভেদ আখতারের সাথে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে মৌনতা ভেঙে প্রকাশ্যে

🎧 Listen in Audio
0:00

চলচ্চিত্র রচয়িতা ও গীতিকার জাভেদ আখতারের প্রথম স্ত্রী হানি ইরানি বহু বছর পর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে মৌনতা ভেঙেছেন। ১৯৭২ সালে জাভেদ আখতার ও হানি ইরানির বিয়ে হয় এবং তাদের দুই সন্তান রয়েছে, জোয়া আখতার ও ফারহান আখতার।

Honey Irani On Divorce With Javed Akhtar: বলিউডের ঝকঝকানো জগতে সম্পর্ক যত দ্রুত গড়ে ওঠে, ততই দ্রুত জটিল হয়ে ওঠে। কিন্তু কিছু সম্পর্ক সময়ের সাথে সাথে এক নজির স্থাপন করে, সেগুলি একসাথে থাকুক বা আলাদা হোক না কেন। হানি ইরানি ও জাভেদ আখতারের সম্পর্কও এরকমই একটি ছিল। দশকের পর দশক পর হানি ইরানি তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পর্কে স্পষ্ট ও সাবলীল বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে তাঁর ও জাভেদ আখতারের মধ্যে যে ফাটল দেখা দিয়েছিল, তার কারণ কখনও শাবানা আজমি ছিলেন না, যেমনটি দীর্ঘদিন ধরে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল।

একসময়ের সুন্দর প্রেমকাহিনী

হানি ইরানি ও জাভেদ আখতারের প্রেমকাহিনীর শুরু ১৯৭২ সালে ‘সীতা ও গীতা’ চলচ্চিত্রের সেটে। হানি তখন একজন উঠতি অভিনেত্রী ছিলেন, আর জাভেদ ছিলেন একজন সংগ্রামী লেখক। শুটিংয়ের সময় একটা হালকা-ফুলকা খেলায় যখন জাভেদের বলে কার্ড বেছে নিয়েছিলেন হানি এবং জাভেদ জিতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি মজা করে বলেছিলেন: তুমি আমার জন্য লক্ষী, মনে হচ্ছে আমাকে তোমার সাথে বিয়ে করতেই হবে।

এই মজা ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নেয়। প্রায় সাত-আট মাস ধরে দুজনে একে অপরকে ডেট করে বিয়ে করে। এই সম্পর্ক থেকে দুই সন্তান জন্মগ্রহণ করে, ফারহান আখতার ও জোয়া আখতার, যারা আজ ইন্ডাস্ট্রির সফল নাম।

বিবাহবিচ্ছেদের আসল কারণ কী ছিল?

বিয়ের ১৩ বছর পর, ১৯৮৫ সালে জাভেদ ও হানির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর জাভেদ আখতার বিখ্যাত অভিনেত্রী শাবানা আজমির সাথে বিয়ে করেন, যার ফলে এই ধারণা তৈরি হয় যে শাবানা আজমিই এই বিবাহবিচ্ছেদের কারণ। কিন্তু এখন হানি ইরানি ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কথা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন।

আমাদের মধ্যে যা ঘটেছে, তা কখনোই শাবানার জন্য হয়নি। আমার অবশ্যই রাগ হয়েছিল, কিন্তু আমি কখনোই এ ব্যাপারে নাটক করিনি। আমি পরিস্থিতি মেনে নিয়ে নিজেকে সামলে নিয়েছি, হানি স্পষ্ট করে বলেছেন।

সম্পর্কের গভীরতা ও বোধগম্যতা

হানি ইরানি আরও বলেছেন যে জাভেদ আখতার থেকে আলাদা হওয়ার পর তিনি বেশ মানসিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে গেছেন, কিন্তু তিনি কখনও সন্তানদের ভবিষ্যৎকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে দেননি। তিনি বলেছেন: হয়তো তিনি আমার কাছ থেকে কিছু আলাদা চেয়েছিলেন, যা আমার কাছে ছিল না। কিন্তু আজও আমাদের মধ্যে সম্মান রয়েছে। আমি জানি, জাভেদ কখনোই এমন কিছু করবেন না যাতে আমার সন্তানদের ক্ষতি হয়। এই বিশ্বাসই সেই সময় আমাকে শক্তি দিয়েছিল।

এই বক্তব্য নিজে থেকেই এর একটা উদাহরণ যে কীভাবে একটা সম্পর্কের শেষও মর্যাদা ও বোধগম্যতার সাথে হতে পারে, বিশেষ করে যখন সন্তানরা জড়িত থাকে।

বিবাহবিচ্ছেদের পর হানি ইরানি শুধু একজন মা হিসেবে নয়, বরং একজন শক্তিশালী ও আত্মনির্ভর লেখিকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি ‘করণ-অর্জুন’, ‘কোই মিল গ্যায়া’, ‘ক্রিশ’ এর মতো সুপারহিট ছবির পटकथा লিখেছেন এবং বলিউডে নারী পटकथाকারদের জন্য নতুন পথ তৈরি করেছেন।

Leave a comment