ইসরায়েল-ইরান সংঘাত: আমেরিকার সিদ্ধান্তের উল্টো গণনা শুরু

🎧 Listen in Audio
0:00

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে কূটনৈতিক উদ্যোগ ত্বরান্বিত হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার রাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন, যাতে আইডিএফ চিফ অফ স্টাফ ইয়াল জামির, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটস এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

Israel Iran Conflict: মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক উদ্যোগ তীব্র হয়ে উঠেছে। এই সংকটের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে — ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু, আইডিএফ চিফ অফ স্টাফ ইয়াল জামির, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটস এবং কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।

এই বৈঠকে উপ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভেন্স এবং মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগেসেথও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক এমন সময়ে হয়েছে যখন আমেরিকা একটি বড় সিদ্ধান্তের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে: ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে কি তারা ইরানের উপর সরাসরি সামরিক আক্রমণ করবে?

আমেরিকার সিদ্ধান্তের উল্টো গণনা শুরু

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে বলেছেন যে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন যে, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে আমেরিকা ইসরায়েলকে সমর্থন করবে কিনা। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, ইরানকে এখনও কূটনৈতিক পথে মনানোর সম্ভাবনা ‘পর্যাপ্ত’ আছে, বিশেষ করে তার পারমাণবিক কর্মসূচী নিয়ে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট নিশ্চিত করেছেন যে, ট্রাম্প এই বিষয় নিয়ে গুরুতর এবং তিনি ইরানকে সতর্ক করার সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছেন।

নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন: ‘বিশ্বের চেহারা বদলে দেওয়া সংগ্রাম’

বৈঠকের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "আমরা বিশ্বকে বদলে দেওয়া সংগ্রামের অংশীদার। আমরা যেকোনো সাহায্য স্বাগত জানাই, কিন্তু আমরা নিজেরাইও প্রস্তুত।" নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে আমেরিকার সম্ভাব্য সামরিক সহায়তার প্রতি ‘মৃদু কিন্তু স্পষ্ট’ মনোভাব হিসেবে দেখা হচ্ছে। নেতানিয়াহু এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে, প্রয়োজন হলে ইসরায়েল একা ইরানের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে দ্বিধা করবে না।

বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া: আমেরিকার পথে বাধা বৃদ্ধি

এই সম্পূর্ণ পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও চীনের প্রতিক্রিয়াও আমেরিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আমেরিকাকে সরাসরি সতর্ক করেছেন যে, তারা এই সংগ্রামে না জড়ায়, কারণ এতে বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইসরায়েলের আক্রমণের নিন্দা করে ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার সমর্থন করেছেন। অর্থাৎ, আমেরিকা যদি ইরানের উপর আক্রমণ করে, তাহলে এটি কেবলমাত্র একটি আঞ্চলিক সংঘাত থাকবে না, বরং আন্তর্জাতিক মেরুকরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাবে।

ট্রাম্পের সামনে দ্বিধা

মার্কিন প্রশাসন বর্তমানে সামরিক হস্তক্ষেপ এবং কূটনৈতিক সমাধান — এই দুয়ের মধ্যে আটকে আছে। ট্রাম্প প্রশাসনের উপর একদিকে ইসরায়েলের চাপ রয়েছে যারা ইরানের বর্ধিত পারমাণবিক ক্ষমতা নিয়ে উদ্বিগ্ন, অন্যদিকে আমেরিকাকে রাশিয়া-চীনের মতো শক্তিশালী দেশের সাথে সংঘাতের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রভাব ২০২৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের উপরও পড়তে পারে, এবং এটাই কারণ তিনি যেকোনো পদক্ষেপ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নিতে চাইবেন।

Leave a comment