বসন্ত পঞ্চমী ২০২৫: রেবতী নক্ষত্র ও সিদ্ধ যোগের মিলনে বিশেষ গুরুত্ব

🎧 Listen in Audio
0:00

বসন্ত পঞ্চমী: মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পালিত বসন্ত পঞ্চমী দিবস এবার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ৩ ফেব্রুয়ারি মা সরস্বতীর পূজা রেবতী নক্ষত্র এবং সিদ্ধ যোগের সাথে সম্পন্ন হবে। এই দিনটি শুধুমাত্র জ্ঞান ও বিদ্যার দেবীর পূজনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এই দিনে অন্যান্য অনেক শুভ কাজেরও সূচনা করা হয়।

কখন পালিত হবে এবং এর গুরুত্ব কী?

মাঘ মাসের শুক্ল পঞ্চমী তিথির সূচনা ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯:১৪ টায় এবং এর সমাপ্তি ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬:৫২ টায় হবে। তবে, উৎযাপিতি অনুসারে, এ বছর বসন্ত পঞ্চমী উৎসব ৩ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে। এই দিন রেবতী নক্ষত্র এবং সিদ্ধ যোগের সংযোগ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

মা সরস্বতীর সাথে ভগবান গণেশ, লক্ষ্মী এবং নবগ্রহের পূজা

বসন্ত পঞ্চমীর দিন ভক্তরা মা সরস্বতীর সাথে সাথে ভগবান গণেশ, লক্ষ্মী দেবী, নবগ্রহ, পুস্তক, লেখনী এবং বাদ্যযন্ত্রের পূজাও করেন। এই দিনে বিদ্যারম্ভ, গৃহ প্রবেশ, আভূষণ ও যানবাহনের ক্রয়কেও শুভ মনে করা হয়।

বিদ্যা অধ্যয়নের সূচনা

বসন্ত পঞ্চমীতে বিশেষ করে বিদ্যারম্ভ সংস্কার সম্পাদিত হয়। শিশুদের অক্ষর আরম্ভ সংস্কার করে তাদের বিদ্যা অধ্যয়নের সূচনা করা হয়। এই দিনে বিদ্যার সাথে সাথে কলা ও শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন প্রচেষ্টাও করা হয়।

শুভ কাজের জন্য ভালো মুহূর্ত

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুসারে, বসন্ত পঞ্চমীর দিন মন্ত্র দীক্ষা, নবজাত শিশুদের অক্ষরারম্ভ, নতুন সম্পর্কের সূচনা এবং বিদ্যা অধ্যয়ন করা শুভ মনে করা হয়। জ্যোতিষাচার্য পণ্ডিত রাকেশ ঝা-র মতে, এই দিনে সারাদিন দোষহীন শ্রেষ্ঠ যোগ থাকে এবং এই দিন অবুঝ মুহূর্ত হওয়ায় কাজের জন্য বিশেষ সাফল্য পাওয়া যায়।

গৃহ প্রবেশ, চাকরি এবং ব্যবসার জন্য উপযুক্ত সময়

ইতিহাসে এও উল্লেখ পাওয়া যায় যে বসন্ত পঞ্চমীর দিনই ভগবান শিব এবং মা পার্বতীর তিলকোৎসব হয়েছিল, এবং তাদের বিবাহের রীতিনীতি শুরু হয়েছিল। এই দিন গৃহ প্রবেশ, নতুন চাকরি, ব্যবসার সূচনা এবং আভূষণ ও যানবাহনের ক্রয় করা অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়।

হলুদ রঙ এবং তার শুভতা

এই দিন বিশেষ করে হলুদ রঙকে শুভ মনে করা হয়। হলুদ রঙ শুদ্ধতা, সাদাম্যতা, নির্মলতা এবং সাৎভিকতার প্রতীক। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণও মা সরস্বতীর পূজা পীতাম্বর ধারণ করে করেছিলেন। হলুদ রঙ গুরু গ্রহের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়, যা জ্ঞান, ধন ও সমৃদ্ধির কারক। এই দিন ভক্তরা হলুদ রঙের বস্ত্র পরিধান করেন এবং পরিবেশে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার হয়।

বসন্ত ঋতুর আগমন

বসন্ত পঞ্চমীর সাথে সাথে বসন্ত ঋতুর আগমন ঘটে। এই ঋতুকে ঋতুর্জা অর্থাৎ সকল ঋতুর রাজাও বলা হয়। এই ঋতুতে আবহাওয়া অতিশীতল বা অতি উষ্ণ নয়, বরং আবহাওয়া স্বাভাবিক এবং সুন্দর থাকে। यही কারণে এটিকে সবচেয়ে ভালো আবহাওয়া বলে মনে করা হয়।

কী করবেন এবং কী করবেন না এই দিনে?

বসন্ত পঞ্চমীর দিন কিছু বিশেষ কাজ করার গুরুত্ব রয়েছে। এই দিন বিশেষ করে পূজা-পাঠ, বিদ্যা, কলা, সংগীত এবং শিল্পের সূচনা করা হয়। অন্যদিকে, এই দিন কোনও ধরণের নেতিবাচক কাজ, যেমন ঋণ নেওয়া বা কারও সাথে ঝগড়া করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

বসন্ত পঞ্চমী ২০২৫-এর উৎসব এবার ৩ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে, যখন রেবতী নক্ষত্র এবং সিদ্ধ যোগের সংযোগ ঘটবে। এই দিন বিদ্যা, কলা, সমৃদ্ধি এবং শুভ কাজের সূচনার জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত। মা সরস্বতীর পূজা, শিশুদের অক্ষরারম্ভ এবং নতুন কাজের সূচনা করার জন্য এই দিনটি সবচেয়ে শুভ এবং ফলপ্রসূ হবে। এই দিন হলুদ রঙের গুরুত্ব এবং আভূষণ ও যানবাহনের ক্রয়কেও বিশেষভাবে মনে করা হয়।

Leave a comment