সোনার দাম বৃদ্ধি: বিনিয়োগকারীদের জন্য কী পরামর্শ?

🎧 Listen in Audio
0:00

সোনার দাম ১ লক্ষ টাকা ছুঁয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দ্বিধা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের সোনায় বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে তাদের সম্পদ বণ্টনের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সোনার দাম: সোনার দামের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি বিনিয়োগকারীদের ভাবতে বাধ্য করেছে যে এখন কি সোনা কেনার উপযুক্ত সময়, নাকি লাভ বুক করে নেওয়া উচিত। সম্প্রতি সোনা ১ লক্ষ টাকার ঘরে পৌঁছেছে, যার ফলে বাজারে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে সোনার দাম কোন দিকে যাবে তা অনুমান করা কঠিন, কিন্তু বিনিয়োগকারীদের তাদের সম্পদ বণ্টন কৌশল অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সোনার দাম বৃদ্ধির কারণ

১. নীতিগত অনিশ্চয়তা:

সোনার সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতির পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো বিশ্বব্যাপী নীতিগত অনিশ্চয়তা। আমেরিকার নীতি এবং ডলারের দুর্বলতা সোনার দামকে সমর্থন করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন সোনাকে নিরাপদ বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছেন।

২. বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান চাহিদা:

নিপ্পন ইন্ডিয়া মিউচুয়াল ফান্ডের বিক্রম ধাওয়ানের মতে, ২০২৫ সালে সোনার পারফরম্যান্স ভালো থাকবে, কারণ বিনিয়োগকারীরা এখন এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডস (ইটিএফ) -এ বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির দ্বারা সোনার ক্রয়ও দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করছে।

৩. বিশ্বব্যাপী চাহিদা:

রাশিয়া, চীন এবং ভারতের মতো দেশগুলি তাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারে সোনার অনুপাত বাড়িয়েছে, যা সোনার দামকে সমর্থন করছে। চীন এবং ভারতের অলংকারের চাহিদাও বিশ্বব্যাপী শারীরিক সোনার চাহিদার একটি বড় অংশ।

সোনার দামের জন্য নেতিবাচক কারণ

তবে, কিছু কারণে সোনার দাম কমতেও পারে। যদি বাণিজ্য যুদ্ধের সমাধান হয় বা ডলার শক্তিশালী হয়, তাহলে সোনার ঊর্ধ্বগতির উপর ব্রেক লাগতে পারে।

বিনিয়োগকারীরা কী করবেন?

সোনায় বিনিয়োগ করার আগে আপনাকে আপনার সম্পদ বণ্টন কৌশলের দিকে নজর দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে সোনায় ১০-১৫% বিনিয়োগ আদর্শ। যদি আপনার আগে থেকে সোনায় কম বিনিয়োগ থাকে, তাহলে আপনাকে আরও বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে, যদি দাম বৃদ্ধির কারণে আপনার বিনিয়োগ বেড়ে যায়, তাহলে লাভ বুক করতে পারেন এবং আপনার পোর্টফোলিও পুনঃসমতুলন করতে পারেন।

গোল্ড ইটিএফ এবং ফান্ডে বিনিয়োগ

যেহেতু সরকার সারভারেন গোল্ড বন্ডের নতুন কিস্তি জারি করা বন্ধ করে দিয়েছে, এখন বিনিয়োগকারীরা গোল্ড ইটিএফ বা গোল্ড ফান্ডে বিনিয়োগের কথা ভাবতে পারেন। গোল্ড ইটিএফ-এ বিনিয়োগ করলে আপনাকে স্টোরেজের চিন্তা করতে হয় না এবং আপনি এটি সহজেই এক্সচেঞ্জে কিনতে-বেচতে পারেন। এছাড়াও, এটি অলংকারের মতো মেকিং চার্জ থেকেও বাঁচায়।

গোল্ড ইটিএফ-এ বিনিয়োগের সুবিধা

শুদ্ধতার কোনো ঝুঁকি নেই: গোল্ড ইটিএফ-এ শুধুমাত্র ৯৯৫-শুদ্ধতার সোনা বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়, যার ফলে গুণগত মানের কোনো প্রশ্ন উঠে না।

স্টোরেজের সমস্যা নেই: গোল্ড ইটিএফ-এ বিনিয়োগ করলে আপনাকে সোনার স্টোরেজের চিন্তা করতে হয় না।

কম খরচ: গোল্ড ইটিএফ-এ বিনিয়োগে কোনো অতিরিক্ত খরচ হয় না, যেমন অলংকারে মেকিং চার্জ।

কি গোল্ড ইটিএফ সঠিক বিনিয়োগ?

গোল্ড ইটিএফ নির্বাচন করার সময় আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে:

  • কম খরচ অনুপাত (Expense Ratio)
  • কম ট্র্যাকিং ত্রুটি
  • ভালো তরলতা
  • বড় ফান্ড আকার

বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সবসময় আপনার আর্থিক লক্ষ্য এবং ঝুঁকি সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে নেওয়া উচিত। যদি আপনি সোনায় বিনিয়োগ করতে চান তাহলে গোল্ড ইটিএফ একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

Leave a comment