২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা কমেছে, কিন্তু জালিয়াতির পরিমাণে ব্যাপক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। আরবিআই-এর বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, মোট জালিয়াতির পরিমাণ ৩৬,০১৪ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি। বেশিরভাগ জালিয়াতির ঘটনা ডিজিটাল মাধ্যমে ঘটেছে। জালিয়াতির পরিমাণে সরকারি ব্যাংক এগিয়ে, যদিও ব্যক্তিগত খাতের ব্যাংক বেশি ঘটনায় জড়িত।
ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা কমেছে, কিন্তু পরিমাণ বেড়েছে
আরবিআই-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ব্যাংক জালিয়াতির মোট ২৩,৯৫৩টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত অর্থবর্ষের তুলনায় ৩৪% কম। জালিয়াতি সংক্রান্ত ঘটনা কমে যাওয়া অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং এটি আশানুরূপ একটি ভালো খবর।
কিন্তু এর সাথে জড়িত অর্থের পরিমাণ উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মোট জালিয়াতির পরিমাণ ৩৬,০১৪ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি।
জালিয়াতির বর্ধিত পরিমাণের কারণ
প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়েছে যে এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ কিছু পুরোনো ঘটনাকে পুনরায় জালিয়াতির শ্রেণীভুক্ত করা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ১২২টি ঘটনার পুনঃ তদন্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৮,৬৭৪ কোটি টাকার পরিমাণ জড়িত ছিল। এগুলিকে চলতি অর্থবর্ষে নতুন করে রিপোর্ট করা হয়েছে, যার ফলে জালিয়াতির মোট পরিমাণে ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছে।
এই পরিসংখ্যান কেবলমাত্র ১ লক্ষ টাকা এবং তার বেশি জালিয়াতির উপর ভিত্তি করে। কিছু জালিয়াতির রিপোর্টিং সেই বছরেরও হতে পারে যখন জালিয়াতিটি ঘটেছিল, নয় যে বছর রিপোর্ট করা হয়েছিল।
ব্যক্তিগত ও সরকারি ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্য
২০২৫ অর্থবর্ষে ব্যক্তিগত খাতের ব্যাংকগুলি সর্বাধিক ১৪,২৩৩টি জালিয়াতির ঘটনা রেকর্ড করেছে, যা মোট ঘটনার প্রায় ৫৯.৪ শতাংশ। এই ব্যাংকগুলি ১০,০৮৮ কোটি টাকার জালিয়াতির রিপোর্ট করেছে।
অন্যদিকে, সরকারি ব্যাংকগুলিতে ঘটনার সংখ্যা কম ছিল, মাত্র ৬,৯৩৫টি ঘটনা (প্রায় ২৯%)। তবে, সরকারি ব্যাংকগুলিতে জালিয়াতির পরিমাণ ২৫,৬৬৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা মোট জালিয়াতির ৭১.৩ শতাংশ।
এর অর্থ হল সরকারি ব্যাংকগুলিতে জালিয়াতির ঘটনা কম হলেও, তাতে জড়িত অর্থের পরিমাণ অনেক বেশি।
ডিজিটাল পেমেন্ট এবং জালিয়াতি
প্রতিবেদনে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে বেশিরভাগ জালিয়াতি ডিজিটাল মাধ্যমে ঘটেছে। বর্ধিত ডিজিটাল লেনদেনের কারণে সাইবার জালিয়াতি এবং অনলাইন প্রতারণার ঘটনা দ্রুত বেড়ে চলেছে। এটি ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে, যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজন।